সাংবাদিকদের আবাসন সমস্যা সমাধানে সার্বিক সহযোগিতা করব : ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী

আগের সংবাদ

সাইডলাইন কূটনীতিতে বাজিমাত : সম্মানিত করেছে ভারত, চাপমুক্ত সরকার > পঞ্চবটীতে ভূ-রাজনীতির নতুন সমীকরণ

পরের সংবাদ

অজানা ভয়ের কাছে কতকাল বন্দি থাকবে মনুষ্যত্ব

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ১০, ২০২৩ , ১:০৭ পূর্বাহ্ণ

আজকের সময়ে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির মতাদর্শগত ভিত্তি ধর্মীয় রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা। ধর্মীয় রাষ্ট্রের ধারণাটি মূলত দাঁড়িয়ে থাকে কত অন্ধবিশ্বাস আর যুক্তিহীনতাকে পাথেয় করে। সামাজিক-রাজনৈতিক স্তরে প্রগতিশীল ভাবনার সব সীমা অতিক্রম করে সামন্তবাদের অবশেষকে ধারণ করেই যার উদ্ভব এবং এগিয়ে চলার পথ। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বিস্ময়কর অগ্রগতির এ যুগে ধর্মীয় রাষ্ট্রের নামে মধ্যযুগীয় অন্ধকারকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টায় সবচেয়ে বাধার কাজটি করে প্রগতিশীল চিন্তা-চেতনার মানুষগুলো। তাই প্রগতির সঙ্গে প্রতিক্রিয়ার এ লড়াইয়ে ধর্মীয় রাষ্ট্রের চিন্তার ধারক আর প্রগতিশীল ভাবনার মানুষদের অবস্থান মুখোমুখি। যে নীতি আর আদর্শের ওপর ভিত্তি করে আমাদের দেশটি গঠিত হয়েছিল, সেই সংস্কৃতির ভিত্তিমূল ধর্মান্ধদের হাতে আজ আক্রান্ত। প্রগতিশীল গোষ্ঠী কিংবা রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতবিরোধ যতই থাকুক, এ দেশের চিরন্তন আদর্শকে রক্ষার দায়িত্ব তাদের সবারই হাতে। বাংলাদেশে কতজন ধর্মীয় সংখ্যালঘু আছে, সে প্রশ্নটি প্রধান নয়। যদি দেশে একজনও হিন্দু কিংবা একজনও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী লোক না থাকে, তারপরও বাংলাদেশ ধর্মনিরপেক্ষ দেশই হবে। কারণ বিংশ শতাব্দীতে ধর্মনিরপেক্ষতা মানে আধুনিকতা, ধর্মনিরপেক্ষতা মানে প্রগতিশীলতা। এই প্রগতিশীলতার পথে হাঁটা ধীরেন্দ্রনাথ বাংলাদেশের নেতা শেখ মুজিবের ভিটে আর ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের ভিটের মধ্যে তেমন কোনো পার্থক্য নেই। তাদের মহান দেশচেতনার স্বরলিপিতে লুকিয়ে থাকা বহুত্ববাদের চিরায়ত গণতন্ত্রের বীজমন্ত্র একসঙ্গে উচ্চারণ করছে ঘৃণা আর সহনশীলতার দুটি পরস্পরবিরোধী শব্দ। কিন্তু আজ আমাদের বড় দুর্দিন। গণতন্ত্র আজ আক্রান্ত সাম্প্রদায়িকতাবাদের হাতে। সমাজ চেতনার মাটি থেকে উৎসারিত চেতনা নিয়ে ‘মানুষ’ হয়ে ওঠার প্রক্রিয়ায় যেন রাহুর দৃষ্টি পড়েছে। বাধা হয়ে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে সাম্প্রদায়িক রীতিনীতির কালো ছায়া।
রাজা রামমোহন রায়। আড়াইশ বছর আগের বাঙালি এক রাজা। তিনি সেদিনই হিন্দুদের তেত্রিশ কোটি দেবদেবীর একটিকেও তার বিশ্বাসে স্থান দিতে পারেননি। তিনি আড়াইশ বছরের পুরনো, তবু তার আধুনিকতা হয়তো আমাদের এ যুগের নানা সংস্কার, প্রাইড এবং প্রেজুডিসকে আড়াইশ বছর পেছনে ফেলেই এগিয়ে ছিল। তিনি তার ১২ বছর বয়সের মধ্যে মুসলমান সংস্কৃতির কেন্দ্র পাটনায় গিয়ে মৌলভীদের নিকট আরবি আর ফারসি শিখে আরবি ভাষায় ইউক্লিডের জ্যামিতি ও সংখ্যাদর্শন পড়েছেন। পড়েছেন এরিস্টটলের এথিকসও। একই সঙ্গে সেই বালক যথেষ্ট সংস্কৃত চর্চা করেছেন বাংলার হিন্দু পণ্ডিতদের কাছে। প্রশ্নটি সামনে রেখেই যদি পৃথিবীর দিকে তাকাই, তাহলে ভয়ে শিহরে উঠি। যে যেখানে ছিল, মনে হচ্ছে আজো সে সেখানেই আছে। পরিবর্তন নেই, অগ্রগতি নেই। তাইতো দেখি, ইরান রয়েছে ইরানেই। কতদিন গিয়েছে মাহশা আমিনির ঘটনার পর? বছরও ঘুরেনি। বিশ্বজুড়ে তখন আলোড়ন শুরু হয়েছিল। আন্দোলনে কেঁপে উঠেছিল ইরান। হিজাব পরার ধর্মীয় অনুশাসন নিয়ে সরব হয়েছিল নানা মহল। কিন্তু সেই ইরানে, এতকিছুর পরও সেই হিজাবেরই দোহাই দিয়ে একটি শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল নিষিদ্ধ হলো। সম্প্রতি ইরানিয়ান শর্ট ফিল্ম অ্যাসোসিয়েশন একটি শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের ছবি প্রকাশ করেছিল, যেখানে ১৯৮২ সালের ‘দ্য ডেথ অব ইয়াজগোর্দ’ ছবির একটি স্থিরচিত্রে দেখা যাচ্ছিল অভিনেত্রী সুজান তসলিমিকে হিজাব ছাড়া। এতেই সে দেশের সরকারের গোস্সা হলো। তারা ফেস্টিভ্যালটিকেই নিষিদ্ধ ঘোষণা করে দিল। ইরানের এ খবরটি যখন প্রগতিবাদীদের মর্মে আঘাত হানছিল, তখন আফগানিস্তানে চলছিল আবার অন্য এক খেলা। আফগানিস্তানের তালেবান শাসকরা ততক্ষণে আদেশ দিয়েছেন, এক মাসের মধ্যে আফগানিস্তানের যাবতীয় বিউটি সেলুন যেন বন্ধ করা হয়। এমন খবরে আপত্তি তুলেছে জাতিসংঘ, আপত্তি তুলেছে বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার সংস্থাগুলোও। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। এসব আদেশ যে মানবমূল্যেরই অবমাননা, তাই বুঝি ফুটে ওঠে ইরানের জাফর পানাহির সাম্প্রতিকতম ‘নো বিয়ারস’ ছবিজুড়ে। ইরানের প্রত্যন্ত প্রদেশের একটি গ্রামের সংস্কার নিয়ে বানানো এ ছবিতে দেখানো হয়েছে, গ্রামের একপ্রান্তে ভালুকের ভয় রয়েছে। সেখানে কেউ যেতে চায় না। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে সেখানে ভালুক নেই, শুধু আতঙ্কের একটি বাতাবরণ আছে। রাষ্ট্র ও সম্প্রদায়ের তৈরি করা ভয় যে আসলে অমূলক, আমরা সেই ভয়েরই দাসত্ব করে চলেছি- এটাই ছিল পানাহির আসল বক্তব্য। এ ছবির সারদর্শন যেন নতুন করে আবার প্রমাণ করল, ইরান আর আফগানিস্তানের সাম্প্রতিক এই দুটি নিষেধের ভয়কেই।
রবীন্দ্রনাথের ‘রক্তকরবী’-র বিশু পাগলের চরিত্রটি নিশ্চয়ই কেউই ভুলে যাননি? নন্দিনী যখন বিশুকে বলে, ‘কেন তাকে বেঁধে নিয়ে গেল?’ বিশু বলে, ‘এতদিন পরে আজ সত্য কথা বলেছিলুম।’ বিশু পাগল হঠাৎই অত্যাচারিত মানুষের পক্ষে দাঁড়ায়। আর সে কারণেই তাকে টেনে নিয়ে যাওয়া হয় বিচারশালায়। প্রেসিডেন্সি জেলে বসে নজরুলও কিন্তু রবীন্দ্রনাথের মতো তার ‘রাজবন্দীর জবানবন্দী’ রচনায় একইভাবে লিখেছিলেন। তিনি লিখেছিলেন, ‘আমি বলছিলাম, আমি সত্য প্রকাশের যন্ত্র।’ তেমন সত্য প্রকাশ কি এখন আমরা করতে পারছি? জেলে যাওয়ার কিংবা বিচারসভায় টেনে নিয়ে যাওয়ার ভয় কি এখনো আমাদের তাড়া করছে? সেদিন রবীন্দ্রনাথ কিংবা নজরুলের কলম তারপরও সত্য লিখেই গেছে। কিন্তু আজ কি আমাদের কলম তা করে দেখাতে পারছে? আজ অবশ্য ধর্ম, ভাষা, খাদ্যাভ্যাস, সামাজিক পরিচিতি প্রতিটি অক্ষেই দেশের মধ্যে শত্রæ চিহ্নিত করে রেখেছে ধর্মান্ধ শক্তি। তাদের সঙ্গে বুঝেই হোক, আর না বুঝেই হোক- সেই শত্রæ দমনে ঝাঁপিয়ে পড়ছে রাষ্ট্রযন্ত্রও। তাদের প্ররোচনায় আমাদের অনেকের ভেতরে যে অবিশ্বাস আর বিভেদের সাপটা কুণ্ডলী পাকিয়ে ঘুমিয়ে আছে, সেই সাপটাকে চিহ্নিত করতে এবং বিতাড়িত করতে বিলম্ব হচ্ছে। যত আমাদের বিলম্ব হচ্ছে, তত পুষ্ট হচ্ছে সে। তাইতো তারা শামসুর রাহমানের ‘স্বাধীনতা’ কবিতাটি পড়ে না, নির্মলেন্দু গুণের কবিতার খোঁজ রাখে না। নজরুল-রবীন্দ্রনাথকে শুধু মুসলমান-হিন্দু করেই ভাবতে ভালোবাসে। সেই তাদেরকে ধর্মের নামে, জাতের নামে, রাজনৈতিক পতাকার রঙে বিভ্রান্ত করার আয়োজনটি সহজেই করা যাচ্ছে। তাইতো দাঙ্গা হলে সেই দাঙ্গা থামানো গেলেও সাম্প্রদায়িকতাকে আটকানো যাচ্ছে না। সাম্প্রদায়িকতার চতুর কৌশলে দু’ভাগ করে ফেলা হচ্ছে সমাজটাকে।
আজ সম্প্রীতির কথায় মানুষ ¯পন্দিত হয় না। ইতিহাসে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির যে তথ্য পাওয়া যায়, তা আজ বেশির ভাগ মানুষের কাছে ‘বই’-এর কথা। আজ তাই শুধু কিছু লোকের লেখা দিয়ে আর পড়িয়ে হিংসার মতো শক্তির সঙ্গে লড়াই করা যাচ্ছে না। আজ প্রয়োজন ছিল শুভবুদ্ধির চর্চা, ইতিহাস ও সংস্কৃতি চর্চাকারীদের ‘অ্যাক্টিভিজম’। কিন্তু যে দেশে হাজার হাজার শিশুর মৃত্যু হয় অপুষ্টিতে, মাত্র এক থালা ভাতের বিনিময়ে বিকিয়ে যায় নারীর শরীর; অন্যদিকে কুরবানির প্রতিযোগিতায় রান্না করা মাংস ফ্রিজে রাখারও জায়গা হয় না, শিবরাত্রির দিন প্রাণহিন পাথরের টুকরায় শত শত লিটার দুধ ঢালা হতেই থাকে; যে দেশে ধর্মান্ধ এবং তাদের চেলাদের কথাই দেশ ও মানুষের ভাগ্যনিয়ন্তা রাজনীতিবিদদের কাছে অমৃত সমান- সেই দুর্ভাগা দেশে অন্ধ বিশ্বাসের জায়গা দখল করার উপায় কি বিজ্ঞানের আছে? একবার ঘুরে দাঁড়িয়ে বিশুর মতো কি সত্য বলার উপায় আছে?
আমেরিকার প্রথম সারির এক বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষাগার। এক পাশে রাখা হলো একটি মই। মইয়ের উপরে বেঁধে রাখা হলো এক কাঁদি কলা। পরীক্ষাগারে ছেড়ে দেয়া হলো দশটি বাঁদর। কলার লোভে সব বাঁদরই দৌড়ে গেল মইয়ের কাছে এবং মই বেয়ে উঠতে লাগল কলার কাছে। যখন তারা মইয়ের মাঝপথে, তখনই চারদিক থেকে হোজ পাইপের মাধ্যমে প্রবল গতিতে বরফ-ঠান্ডা পানি আছড়ে পড়ল বাঁদরদের শরীরে। প্রথমে তারা হতভম্ব। তারপর প্রাণপণে মই আকড়ে ধরার চেষ্টা। কিন্তু পানির তোড়ে শেষ রক্ষা তাদের হলো না। দশজনই ছিটকে পড়ল এদিক-ওদিক। বাঁদর মাটিতে পড়ে যেতেই বন্ধ করে দেয়া হলো জলকামান। খানিকক্ষণ দেখে আবার মইয়ের দিকে রওনা দিল বাঁদরের দল। কিন্তু মাঝ মইয়ের পথে আবার সেই একই বিপত্তি। নাছোড় বাঁদররা কলা পেড়ে আনার চেষ্টা চালিয়ে গেল আরো বেশ কয়েকবার। কিন্তু প্রতিবারই পড়ে যাওয়ার যন্ত্রণা সইতে হলো তাদের। একসময় হাল ছেড়ে দিল তারা। দেখা গেল, জলকামান বন্ধ করে দেয়ার বহুক্ষণ পরও মইয়ের দিকে আর চট করে এগিয়ে গেল না কোনো বাঁদরই। পরিস্থিতি এমন দাঁড়াল, দলের মধ্যে এক বাঁদর সাহস করে মইয়ের দিকে এগিয়ে গেলেও তাকে টেনেহিচড়ে থামিয়ে দিচ্ছে বাকিরা। ভয় বাসা বেঁধেছে বাঁদরদের মনে। তাই তারা কলা থেকে দূরে থাকার সিদ্ধান্তই শ্রেয় মনে করল। গবেষকগণ এরপর ওই ১০ বাঁদরের মধ্যে একটিকে চুপিসারে ঘরের বাইরে বের করে দিয়ে তার বদলে নতুন একটি বাঁদরকে ঢুকিয়ে দিলেন। কলার কাঁদি ঝুলতে দেখেই নতুন বাঁদরটি দৌড় দিল মইয়ের দিকে। কিন্তু সিঁড়ির কাছে পৌঁছানোর আগেই তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ল বাকি ৯ পোঁড়খাওয়া বাঁদর। এবার বিজ্ঞানীরা এক এক করে বাকি নয় বাঁদরকেই বদলে দিলেন। প্রতিবার নতুন বাঁদর ঘরে ঢোকার পরে পুরনোদের একই প্রতিক্রিয়া। মইয়ের দিকে এগোলেই টেনে সরিয়ে আনা। একটা সময় এলো, যখন ঘরে ১০ বাঁদরই নতুন। প্রথমে যখন মইয়ে উঠতেই প্রতিবার পানি ছোড়া হচ্ছিল, তখন ঘরে ছিল না এদের কেউই। এরা এক এক করে পরে ঢুকে শুধু দেখেছে; মইয়ের দিকে উঠতে গেলেই রে রে করে তেড়ে এসে থামিয়ে দেয় পুরনোরা। দেখা গেল, এর পরে ঘরে নতুন ঢোকা আর এক বাঁদর মইয়ের দিকে এগোতেই, একইভাবে রে রে করে তেড়ে গিয়ে থামিয়ে দিচ্ছে ওই আগে থেকে ঘরে থাকা ‘নতুন’ বাঁদররাও। সত্যিকারের জলকামানের ঠান্ডা স্রোতের সামনে এরা একবারও কিন্তু পড়েনি। তারপরও একই ঘটনা ঘটছে। এটিই অজানা ভয়। কস্মিনকালেও ঠান্ডা পানির অত্যাচার সহ্য না করা ওই বাঁদরগুলোর পুরনোদের আচরণ দেখে মনে হয়েছে, নিশ্চয়ই ওই মইয়ে চড়তে গেলেই মারাত্মক কোনো অনর্থ ঘটে। তাই ঠিক কী ঘটে, তা না জেনেও তারা এমন সন্ত্রস্ত। এই সার সত্যই একেবারে গুলে খেয়েছে ধর্মান্ধ বিশ্বাস এবং সেই বিশ্বাসে বলিয়ান জঙ্গিরা। তাদের বুলেটে কিংবা বোমায় কিংবা চাকুর আঘাতে পৃথিবীজুড়ে যত মানুষের প্রাণ গেছে, তার থেকে অনেক বেশি মানুষ মারা যায় অপুষ্টিতে, পর্যাপ্ত পরিমাণে খেতে না পেয়ে। ম্যালেরিয়া-ডেঙ্গুর মতো চেনা অসুখও প্রতি বছর যত মানুষের জীবন কেড়ে নেয়, তার পাশে হিংসায় মৃত্যুর সংখ্যা কিন্তু নস্যি। তবুও বেশির ভাগ মানুষ আচমকা জঙ্গি হানাকে যতটা ভয় করে, অনেক প্রাণঘাতী অসুখও তাদের ততটা ভাবায় না। অনেক কারণের মধ্যে ‘অজানা ভয়’ একটা বড় কারণ জঙ্গিবাদের অস্তিত্ব এবং অগ্রগতির মূলে।
সেলুলয়েডের পর্দায় ভারত সম্রাট আকবরের সামনে আনারকলি গাইছেন- ‘পেয়ার কিয়া তো ডরনা কেয়া…’। ভালোবাসায় ভয় কীসের? স্রষ্টা আর সৃষ্টির মধ্যে কোনো আড়াল নেই, তাই গোপনীয়তারও কিছু নেই। হায় আনারকলি, স্রষ্টার সামনে অকপটে সব বলতে পারলেও স্রষ্টার সৃষ্টি ভারত সম্রাটের সামনে সেই সাহস দেখানোর পরিণতি হয়েছিল জ্যান্ত কবর। আমাদেরও কী আজ সেই অবস্থা? স্রষ্টার সৃষ্টির এত দাপটে আমরা কি হারিয়ে যাচ্ছি? অজানা ভয়ের কাছে আমরা আর কতকাল বন্দি থাকব?
সুধীর সাহা : কলাম লেখক।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়