নাজিরাবাজারে দুই দোকানে আগুন শর্টসার্কিটে

আগের সংবাদ

তিস্তায় জল গড়ানোর আশা! জি-২০ সম্মেলনের সাইডলাইনে হাসিনা-মোদির দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বিষয়টি উত্থাপন করবে বাংলাদেশ

পরের সংবাদ

এ ভয়ংকর নেশা থেকে তরুণদের বাঁচাতে হবে

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

এক ভয়ংকর নেশা অনলাইন জুয়া। অনলাইন জুয়ায় আসক্ত বেশির ভাগই স্কুল, কলেজ এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ তরুণ প্রজন্ম, যা আমাদের জন্য একটি অশনিসংকেত। এ জুয়ার খপ্পরে পড়ে নিঃস্ব হয়েছেন অনেকে। যারা জুয়া খেলেন, তাদের মধ্যে পরমতসহিষ্ণুতা, সহনশীলতা কমে যাচ্ছে। তাদের পারিবারিক বন্ধনও শিথিল হয়ে যাচ্ছে। তরুণ-কিশোররা খেলায় আসক্ত হয়ে বহু কচি প্রাণ ইতোমধ্যে ঝরেও গেছে। জুয়ার ‘স্টেক’ ধরার টাকা জোগাড় করতে গিয়ে কেউ বাবার পকেট কাটছে, কেউ মায়ের গহনা ধরে টান দিচ্ছে; কেউ আবার চুরি-ডাকাতি-ছিনতাইয়ের পথ ধরছে। বিদেশের ক্যাসিনো ব্যবসায়ীদের সহায়তায় মুঠোফোনে জুয়ার অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করে দেশে সেটি ছড়িয়ে দিয়েছে একটি চক্র। নানা এলাকায় নিয়োগ করা হয়েছে এজেন্টও। শুধু মেহেরপুরে দুই শতাধিক তরুণ অনলাইন জুয়ায় জড়িয়ে পড়েছে বলে গণমাধ্যমে খবর এসেছে। সেই হিসাবে গোটা দেশে বিপুলসংখ্যক তরুণ এখন অনলাইন জুয়ায় আসক্ত হয়ে পড়েছে। তিন পাত্তি, লাইভ ক্যাসিনো, ক্রিকেট, ফুটবলসহ দুই শতাধিক মোবাইলফোন অ্যাপে জুয়া খেলা হয়। পুরো ব্যাংকিং প্রক্রিয়াকে পাশ কাটিয়ে ডলারের মাধ্যমে জুয়ার যাবতীয় লেনদেন করা হয়। হুন্ডির মাধ্যমে সেই টাকা চলে যায় দেশের বাইরে। বিটিআরসি বলেছে, মোবাইল অ্যাপ ছাড়াও অপরাধীরা বিভিন্ন ওয়েবসাইট বা ডোমেইনের মাধ্যমে সরাসরি অনলাইন গেম বা জুয়ায় অংশগ্রহণ করেন। এভাবে অপরাধী চক্র দেশ থেকে কোটি কোটি টাকা পাচার করছে। এর মধ্যে কয়েকশ জুয়ার সাইট বন্ধ করা হয়েছে। গুগল প্লে স্টোর, ফেসবুক ও ইউটিউব থেকে জুয়াসংক্রান্ত কয়েকশ অ্যাপ ও লিংক বন্ধে রিপোর্টও করা হয়েছে। এতে কিছু বন্ধ করাও হয়েছে, যা যথেষ্ট নয়। অনলাইন প্ল্যাটফর্মে মেল বেট, ওয়ান এক্সবেট ও বেট উইনার নামের জুয়ার বেটিং সাইট চালিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে পাচার করছে। রাশিয়া থেকে মূলত এসব অনলাইন জুয়ার ওয়েবসাইট নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। আর দেশে নিয়োগকৃত ম্যানেজাররা এ কার্যক্রম পরিচালনা করছে। অনলাইনে জুয়া পরিচালনায় জড়িত ছয়জনকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, অনলাইন জুয়ার মাধ্যমে তারা কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ও সিরাজগঞ্জে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। বিদ্যমান প্রকাশ্য জুয়া আইন-১৮৬৭এর ধারা ও প্রেক্ষাপট ছিল ভিন্ন। কিছু দুর্বলতার কারণে বর্তমানে এর প্রয়োগ বেশ কঠিন। ওই আইনে ক্যাসিনো শব্দটি নেই। অনলাইন জুয়া প্রতিরোধের জন্য সময়োপযোগী আইন তৈরি করা এখন সময়ের দাবি। মাদকের চেয়েও ভয়াবহ এই অনলাইন জুয়ার নেশার লাগাম টেনে ধরতে সরকারকেই সবার আগে এগিয়ে আসতে হবে। এই সর্বনাশা অনলাইন জুয়ার নেশার বিরুদ্ধে বিপন্ন পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রকে এগিয়ে আসতে হবে। অর্থ পাচার রোধের পাশাপাশি যে কোনো মূল্যে যে কোনো উপায়ে তরুণ-কিশোরদের মোবাইল অ্যাপসে সংক্রমিত এসব জুয়ার আগ্রাসন থেকে রক্ষা করতে হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়