ড. ইউনূসের মামলা প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী : বিচারাধীন বিষয়ে দেয়া বিবৃতি বিচার বিভাগকে অপমান

আগের সংবাদ

উড়াল সড়কের যুগে রাজধানী : এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের একাংশ খুলছে আজ, এয়ারপোর্ট থেকে ফার্মগেট ১০ মিনিটে

পরের সংবাদ

বাজার নিয়ে নৈরাজ্য আর কত

প্রকাশিত: আগস্ট ৩১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ৩১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

বাজার যেন কারো নিয়ন্ত্রণে নেই। ইচ্ছামতো দাম বাড়াচ্ছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। দিন দিন অসহায় হয়ে পড়ছে সাধারণ মানুষ। দেশব্যাপী ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধিতে বেড়েছে ডাবের চাহিদা। এতে ডাবের দাম নিয়ে চলছে চরম নৈরাজ্য। আকারভেদে রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রতিটি ডাব বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা পর্যন্ত। শুধু কি ডাব- ডিম, পেঁয়াজ, চিনি, ভোজ্যতেলসহ নানা নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য নিয়ে বাজারে নৈরাজ্য চলছে। মনে হচ্ছে বাজার নিয়ন্ত্রণে দেশে কোনো অভিভাবক নেই। ইচ্ছামতো লুটে নিচ্ছে মানুষের টাকা। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী গত মঙ্গলবার গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বাজার সিন্ডিকেট নিয়ে কথা বলছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, খাদ্যপণ্য নিয়ে কয়েকটা হাউস ব্যবসা করে। যখনই তারা কৃত্রিমভাবে দাম বাড়ায় আমরা আমদানি করি, বিকল্প ব্যবস্থা করি। যাতে তারা বাধ্য হয় দাম কমাতে। আমরা তো সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেই। কাজেই সিন্ডিকেট থাকলে তা ভাঙা যাবে না, এটা কোনো কথা নয়। কে কত বড় শক্তিশালী সিন্ডিকেট আমি জানি না, ঠিক আছে আমি দেখব এটা, কী ব্যবস্থা করা যায়। সাধারণ মানুষও চায় প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করুন। নিত্যপণ্যের দাম ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আসুক। প্রায় ২ বছর ধরে বাজারের উচ্চমূল্য সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন ভোক্তারা। গত বছরের আগস্টে সামগ্রিক মূল্যস্ফীতির হার সাড়ে ৯ শতাংশে পৌঁছানোর পর গত ৬ মাসে পরিস্থিতি আরো খারাপ হয়েছে। এর মধ্যেই দফায় দফায় বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়িয়ে সুযোগ নিচ্ছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। বাজার মনিটরিং না থাকার কারণে এমন অবস্থার জন্য দায়ী করছে মানুষ। বাজারে অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজি নতুন নয়। সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়ে গেছে। চলমান পরিস্থিতিতে স্বল্প আয়ের মানুষের নিত্যদিনের চাহিদায় কাটছাঁট করতে হচ্ছে। সব মিলে নিত্যপণ্যের বাড়তি দাম মেটাতে ভোক্তার হাঁসফাঁস অবস্থা। তারা বলছেন, সব কিছুর দাম বাড়ায় সংসার খরচ বেড়ে গেছে। যে কারণে আয়ের সিংহভাগ চলে যাচ্ছে নিত্যপণ্যের পেছনে। চাহিদার সঙ্গে দাম যাতে না বাড়ে, সেজন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সংস্থাগুলো দৃশ্যত কিছু বিশেষ ব্যবস্থাও নিয়ে থাকে। তবে আমাদের অভিজ্ঞতায় আছে, এসব ব্যবস্থা বাজার নিয়ন্ত্রণে ইতিবাচক তেমন প্রভাব ফেলতে পারে না। এটা স্পষ্ট যে, করোনা-দুর্যোগে অনেকের আয়-রোজগার কমে গেছে, অনেকেই হয়েছেন কর্মহীন। বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের ব্যর্থতার কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের পাগলা ঘোড়া এখন নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্লেষকরা। বাস্তব সত্য হচ্ছে, বাজারের ওপর সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পুরোপুরি ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে। তবে বাজার নিয়ন্ত্রণে টিসিবির মাধ্যমে খোলাবাজারে পণ্য বিপণন, বাজার মনিটরিং ইত্যাদি যেসব পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে এগুলো যেন যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। বর্তমানে দেশে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবের জন্য ডাক্তাররা রোগীদের ডাব খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন, কারণ ডাবে পটাশিয়াম আছে। এ কারণে যারা ডেঙ্গু আক্রান্ত হচ্ছেন তারা প্রতিদিনই ডাব খাওয়ার চেষ্টা করছেন। ফলে এই সুযোগে অসাধু ব্যবসায়ীরা ডাবের দামও বাড়িয়ে দিয়েছেন। দুঃখজনক। মানুষের দুঃসময়ে ব্যবসায়ীদের এমন আচরণ কাম্য নয়। বাজার ব্যবস্থাপনায় উৎপাদক, বিপণনকারী, ভোক্তা থেকে শুরু করে সর্বত্র সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরি করে। বাজারে অসুস্থ প্রতিযোগিতা পরিপন্থি কর্মকাণ্ড বন্ধে আইনের যথার্থ ব্যবহার নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়