ভূমি আইন ভঙ্গে এক লাখ টাকা জরিমানা : নাটোরে ড. ওয়াজেদ মিয়ার নামে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, নারী আসনে ৯০ দিনের মধ্যে উপনির্বাচন

আগের সংবাদ

ফের আলোচনায় ড. ইউনূস : হতে চান তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধান > জাতীয় দুর্যোগে নেই জাতির পাশে

পরের সংবাদ

ভয়ের সংস্কৃতি থেকে বের হতে নতুন আইন সহায়ক হবে কি?

প্রকাশিত: আগস্ট ৩০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ৩০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

অজামিনযোগ্য চারটি ধারা রেখে প্রস্তাবিত সাইবার নিরাপত্তা আইনের খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে সরকারের মন্ত্রিসভা। ‘সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট-২০২৩’-এর খসড়ায় সংজ্ঞাসহ সামান্য কিছু পরিবর্তন করে সেটি চূড়ান্ত করা হয়েছে। ১৭, ১৯, ২৭ ও ৩৩ ধারা অজামিনযোগ্য রয়েছে। বাকিগুলো জামিনযোগ্য। ১৭ ধারায় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামোতে বেআইনি প্রবেশ, ১৯ ধারায় কম্পিউটার ও কম্পিউটার সিস্টেমে ক্ষতি, ২৭ ধারায় সাইবার সন্ত্রাসী কার্যক্রম এবং ৩৩ ধারায় হ্যাকিং-সংক্রান্ত অপরাধ ও দণ্ডের বিষয়ে বলা আছে। সাংবাদিক নেতারা অফিসিয়াল সিক্রেসি আইন বিলুপ্তির কথা বলছেন। কিন্তু সাইবার আইনে অফিসিয়াল সিক্রেসি আইনকে অন্তর্ভুক্ত করায় উদ্বেগ রয়েছে। আলোচিত ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮’ নিয়ে বিতর্ক ছিল শুরু থেকেই। অনেক আলোচনা-সমালোচনা শেষে আইনটি সংশোধন ও পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন রোহিত করে একই আদলে সাইবার নিরাপত্তা আইন করছে সরকার। ৭ আগস্ট এই আইনের খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছিল মন্ত্রিসভা। ৯ আগস্ট আইনটির খসড়া তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে অংশীজনদের মতামত চাওয়া হয়। এ জন্য তারা ১৪ দিন সময় দিয়েছিল। এ সময়ের মধ্যে প্রায় ৫০০ মতামত জমা পড়ে। প্রস্তাবিত সাইবার নিরাপত্তা আইনের খসড়া নিয়ে অংশীজন ও মানবাধিকার সংস্থাগুলোর অভিযোগ ছিল, আইনে সাজা কিছু কমানো ও ধারা জামিনযোগ্য করা ছাড়া বিষয়বস্তুতে তেমন কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি। এতে মানুষের হয়রানি কমবে না। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি জাতীয় সংসদে ২০১৮ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর পাস হয়। তখন সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠন এবং মানবাধিকার সংস্থা আশঙ্কা প্রকাশ করে, এই আইনের এমন কিছু ধারা আছে, যা বাকস্বাধীনতার জন্য হুমকিস্বরূপ। আইনের অপব্যবহারের আশঙ্কা ব্যক্ত করা হয় এবং ২৫ ও ২৯-সহ চিহ্নিত ধারাগুলো সংশোধনের দাবি জানানো হয়। সে সময় সরকারের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করা হয় আইনের কোনো অপব্যবহার হবে না। কিন্তু বাস্তব চিত্র ছিল ভিন্ন। মুক্ত সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে এই আইনটি একটি খড়গে পরিণত হয়। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির বিপুল সম্প্রসারণের এই যুগে সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আইন ও বিধিবিধানের প্রয়োজনীয়তা আমরা অস্বীকার করি না। আমরা দেখেছি, বাংলাদেশে সাইবার অপরাধ ব্যক্তি ও রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে বড় নিরাপত্তা হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির মতো ঘটনাও ঘটেছে। প্রচলিত ব্যবস্থায় এসব অপরাধ যেমন রোধ করা যাচ্ছে না, তেমনি প্রচলিত আইনেও এসব অপরাধের বিচার করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই সময়োপযোগী আইনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। সময়ের প্রয়োজনে আইন করা হয়। সাংবাদিক সমাজসহ অনেকের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল আইনটি পরিবর্তনের। সে দাবি পূরণ হয়েছে। এ জন্য সরকার ধন্যবাদ প্রাপ্য। পাশাপাশি সংশোধিত নতুন আইনে সাংবাদিক ও সংবাদ মাধ্যমের অধিকার ও কর্মপরিবেশ সীমিত, এমনকি খর্ব হয় এমন কোনো বিষয় যেন না থাকে সে বিষয়ে নীতিনির্ধারকদের সচেতন থাকতে হবে। আইনের অপব্যবহার রোধে কঠোর হতে হবে। গত ৫ বছর ডিজিটাল আইন নিয়ে মানুষের মধ্যে যে ভয়ের সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে, আশা করছি সাইবার আইন মানুষের ভয় কাটাতে সহায়ক হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়