সংসদীয় কমিটির বৈঠক : ভোটের আগে নসিমন-করিমন বন্ধ করতে চায় না সরকার

আগের সংবাদ

হটকারী সিদ্ধান্তের খেসারত! : আপাতত জেলা ও মহানগর পর্যায়ে নতুন কর্মসূচি দেবে বিএনপি, দম নিয়ে ফের ঢাকাকেন্দ্রিক কর্মসূচি

পরের সংবাদ

জিম্বাবুয়ে মাতালেন তাসকিন

প্রকাশিত: আগস্ট ১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

দীর্ঘ ক্রিকেট ক্যারিয়ারে সম্প্রতি কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট খেলেছেন বাংলাদেশ দলের পেসার তাসকিন আহমেদ। জিম আফ্রো টি-টেন লিগের প্রথম আসরে খেলতে গিয়েই বাজিমাত করেন এই টাইগার বোলার। বুলাওয়ে ব্রেভসের জার্সি গায়ে পুরো টুর্নামেন্টে ৭ ম্যাচে বল হাতে তিনি শিকার করেছেন ১১টি উইকেট।
১০ ওভারের সংক্ষিপ্ত সংস্করণের ক্রিকেট বোলারদের জন্য বেশ চ্যালেঞ্জিং। ওভার কম হওয়াতে ব্যাটাররা ইনিংসের শুরু থেকেই বড় সংগ্রহ গড়ার লক্ষ্যে আগ্রাসী ব্যাটিং করেন। আর পেসারদের দ্রুত গতির বলে যেহেতু বাউন্ডারি হাঁকানো অনেকাংশেই সহজ, তাই পেসাররা এই সংস্করণের ক্রিকেটে খুব একটা সুবিধা করতে পারেন না। তবে চ্যালেঞ্জ এড়িয়ে সফলতার মুখই দেখেছেন বাংলাদেশ দলের স্পিডস্টার তাসকিন আহমেদ। ৭ ম্যাচে বল করে তিনি ১১ উইকেট তুলেছেন যেখানে ওভারপ্রতি মাত্র ৭ দশমিক ৬৩ রান করে খরচ করেছেন। ক্রিকেটের সবচেয়ে প্রচলিত সংস্করণ ওয়ানডের সঙ্গে মিলাতে গেলে এই রান খরচ খুব একটা ভালো নয়। তবে জিম আফ্রো টুর্নামেন্টে যেহেতু ১০ ওভারে খেলা হয়, তাই এই রান খরচ ভালোর কাতারেই থাকবে। পুরো টুর্নামেন্টে শীর্ষে থাকা পাঁচ বোলারের মধ্যে তাসকিন ছিলেন সবচেয়ে কম রান খরচ করা বোলার। তাসকিনের খেলা ৭ ম্যাচের মধ্যে মাত্র একটি ম্যাচে তিনি কোনো উইকেটের দেখা পাননি। তবে দুই ওভারে মাত্র ৭ রান খরচ করে সেই কমতিটাও কাটিয়ে দিয়েছেন লাল-সবুজের প্রতিনিধিত্ব করা এই পেসার। তাছাড়া জিম আফ্রো টুর্নামেন্টে তাসকিন ১১ রান খরচে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন।
প্রথমবারের মতো ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ খেলার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে তাসকিন গণমাধ্যমকে জানান, ‘একটা জিনিস ভালো অভিজ্ঞতা হয়েছে। নিজের শক্তি ভালোভাবে কাজে লাগাতে পারলে টেস্ট ক্রিকেট হোক টি-টেন হোক কোনো বিষয় না, সবখানেই সমানভাবে কার্যকর।’ তিনি যোগ করেন, ‘প্রথমবারের মতো টি-টেন খেললাম। একদম ভিন্ন অভিজ্ঞতা ছিল। প্রথম ওভার থেকেই ব্যাটাররা আসলে মারার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করতেন। ১০ ওভারের মধ্যে তিন ওভার পাওয়ার প্লে থাকে। নতুন বলে দুই ওভার, আরেকটা যে কোনো সময় আপনি নিতে পারবেন। আমি বেশির ভাগ সময় পাওয়ার প্লেতেই করেছি। দুজন ফিল্ডার বাইরে। এর মধ্যেও যে ভালো ইকোনমিতে টুর্নামেন্ট শেষ করেছি এবং ভালো চ্যালেঞ্জ ছিল’।
চলতি বছরের শুরু থেকেই দুর্দান্ত ছন্দে আছেন বাংলাদেশ দলের পেসাররা। আর তাদের মধ্যে অন্যতম তাসকিন আহমেদ। বছরের প্রথম ওয়ানডে সিরিজে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খুব একটা ভালো করতে পারেননি তাসকিনরা। তবে সেই সিরিজের তৃতীয় ম্যাচ থেকেই খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসতে শুরু করেন তারা। গত মার্চে তাসকিনকে বল হাতে আইরিশদের বিপক্ষে আগুন ঝড়াতে দেখেছে টাইগার সমর্থকরা। আইরিশদের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে এই পেসার ৫ উইকেট তুলে সিরিজ জয়ে বিশেষ অবদানও রেখেছেন। এরপর আইরিশদের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে ৮ ব্যাটারকে সাজঘরের পথ দেখিয়ে সিরিজসেরা নির্বাচিত হয়েছিলেন।
বাংলাদেশ দলের হয়ে তাসকিন আহমেদের যাত্রা শুরু হয় ২০১৪ সালের ১ এপ্রিল টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে খেলার মধ্য দিয়ে। এর দুই মাস পরই বাংলাদেশের জার্সি গায়ে ওয়ানডে ক্রিকেটে অভিষেক হয় তার। অভিষেকের পর থেকেই প্রতিপক্ষ ব্যাটারদের সামনে এক ভয়ের নাম তাসকিন। গতির জন্য তিনি টাইগার শিবিরের গতিদানব হিসেবেও পরিচিত হন। ওয়ানডে ক্রিকেটে অভিষেকের ম্যাচেই তিনি ভারতের বিপক্ষে বল হাতে ৫ উইকেট তুলে ক্রিকেটপাড়ায় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসেন। এর মধ্যে কয়েকবার ছন্দপতন হলেও তিনি নিজেকে কঠিন অনুশীলনের মধ্যে রেখে ফিরিয়ে এনেছেন ছন্দ। ওয়ানডে ফরম্যাটের ক্রিকেটে ৫৭ ম্যাচ খেলে এ পর্যন্ত ৭৮ উইকেট তুলেছেন। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটেও তার পারফরম্যান্স অনবদ্য। ক্রিকেটের এই সংস্করণে তিনি বল হাতে আক্রমণে নেমেছেন ১৩৫ ম্যাচে। বল করার সুযোগ পেয়েছেন এর মধ্যে ১৩১টি ইনিংসে। যার মধ্যেই এ পেসার ১৫৩টি উইকেট তুলেছেন। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে তাসকিনের সেরা বোলিং ৩১ রান খরচে ৫ উইকেট তোলা।
মাঝে দীর্ঘদিন ছন্দ হারিয়ে চেনা ছন্দের খোঁজে ছিলেন তাসকিন আহমেদ। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে ও বিশ ওভারের সিরিজ দুটি দিয়ে তিনি ফের নিজের দাপট প্রমাণ করলেন। আইরিশদের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচেই টাইগার শিবিরের এই গতিদানব ৪ উইকেট তুলে আইরিশদের ইনিংস দ্রুত থামিয়ে দলকে জয়ের দিকে এগিয়ে নেন। বৃষ্টিবিঘিœত ম্যাচটিতে ডিএলএস ম্যাথডে আইরিশদের টার্গেট দাঁড়ায় ৮ ওভারে ১০৪ রান। রান তাড়ায় মাঠে নেমে দ্রুত গতিতে রান তুলতে থাকেন আইরিশ ব্যাটাররা। এমন পরিস্থিতিতে তাসকিন বল তাসে ক্রিজে এসে প্রথম বলেই উইকেট শিকার করেন। পরের দুই বলে তিন রান খরচ করে তিনি ওভারের চতুর্থ বলে ফের এক ব্যাটারকে সাজঘরমুখী হতে বাধ্য করেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়