শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন : ক্যারিয়ার গড়তে মেধাবীদের বিদেশমুখিতা কমেছে

আগের সংবাদ

সমাবেশ পেছাল দুদলই : ঢাকায় নিরাপত্তার চাদর, পছন্দের ভেন্যু পায়নি কেউই, আসতে পারে নিষেধাজ্ঞা

পরের সংবাদ

উত্তাপ উদ্বেগ অনিশ্চয়তা : বিএনপির মহাসমাবেশ ঘিরে সতর্ক সরকার, পাল্টা কর্মসূচি যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের

প্রকাশিত: জুলাই ২৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুলাই ২৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বিএনপির মহাসমাবেশ ঘিরে ফের উত্তাপ ছড়িয়েছে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে। ওইদিন ‘তারুণ্যের জয়যাত্রা’ সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ৩টি সহযোগী সংগঠনও। একইদিনে দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি সমাবেশ থাকায় সংঘাতের আশঙ্কা করছেন অনেকে। ওইদিন ঢাকায় কী হবে- এ নিয়ে জনমনে উদ্বেগ ও অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নানামুখী পরিকল্পনা সাজিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও। বিশেষ করে বিএনপি ও যুগপৎ আন্দোলনে তাদের সঙ্গে থাকা দলগুলোর কর্মসূচি ঘিরে সতর্ক অবস্থায় রয়েছে তারা।
সরকার পতনের এক দফা দাবিতে আগামী বৃহস্পতিবার রাজধানীতে মহাসমাবেশ করার গোষণা দেয় বিএনপি। অনুরূপ কর্মসূচি দিয়েছে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা বিএনপির সমমনা দলগুলোও। ওইদিন ঢাকায় বড় জমায়েত করে যাতে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাতে না পারে- সেজন্য দলের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। সাংগঠনিক প্রস্তুতি হিসেবে গতকাল মঙ্গলবার সকালে বঙ্গবন্ধু এভিনিউর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা মহানগরের দলীয় নেতা, ঢাকা জেলা ও মহানগরের সংসদ সদস্যদের নিয়ে সভা করেছেন আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা। সরকারের কাছে তথ্য রয়েছে, বিএনপি ওইদিন বড় জমায়েত করে রাস্তার ওপর যে কোনো স্থানে বসে পড়তে পারে। বিএনপির পরিকল্পনায় থাকা সরকারের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার সামনে অবস্থান ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বাড়ি ঘেরাওয়ের পরিকল্পনার তথ্যও জেনেছেন গোয়েন্দারা। এ অবস্থায় সরকার নিরাপত্তা ছক সাজানোর পাশপাশি সাংগঠনিক ছক এঁকেছে আওয়ামী লীগও।
এদিকে বিএনপি সোহরাওয়ার্দী উদ্যান বা নয়া পল্টনে মহাসমাবেশ করতে ঢাকা মহানগর পুলিশের কাছে অনুমতির জন্য লিখিত আবেদন করলেও এখনো এর ফয়সালা হয়নি। ২২ জুলাই শনিবার বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে তারুণ্যের সমাবেশে বড় জমায়েত করার মাত্র চারদিন পর ফের কেন মহাসমাবেশ করতে চাচ্ছে- এ নিয়ে সরকারের ভেতরে বিশ্লেষণ চলছে। তবে বিএনপি কোথায় মহাসমাবেশ করার অনুমতি পাবে- এ নিয়ে তাদের ভেতরেও আলোচনা চলছে। কারণ একই দিন যুবলীগ-ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ বায়তুল মোকারমের দক্ষিণ পশ্চিম গেটে শান্তি সমাবেশের কর্মসূচি

ঘোষণা করেছে। পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে সংঘাত এড়াতে বিএনপি চাওয়া ভেন্যুর বাইরে বিকল্প ভেন্যু নিয়ে ভাবছে পুলিশ। যা গত বছরের ১০ ডিসেম্বরের গোলাপবাগ স্কুল মাঠের মতো ভেন্যুও হতে পারে। আবার চরমোনাই পীরের ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ওইদিন বায়তুল মোকাররম উত্তর গেটে সমাবেশ ডেকেছে। সবমিলিয়ে ২৭ জুলাই সরকারের কাছে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, আগামীকালের কর্মসূচি ঘিরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স ও ডিএমপি হেডকোয়ার্টার্সে পদস্থ কর্মকর্তারা নিয়মিত বৈঠক করছেন। খতিয়ে দেখছেন গোয়েন্দা প্রতিবেদন। বিএনপির শীর্ষ নেতাদের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছেন গোয়েন্দারা। এ অবস্থায় সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে থাকবে পুলিশ। ঢাকার সবকটি প্রবেশ পথে বসানো হবে চেকপোস্ট। পথে পথে থাকবে পুলিশ প্রহরা ও নজরদারি। টহলে থাকবে র‌্যাব। গোয়েন্দারা মিশে থাকবে নেতাকর্মীদের সঙ্গে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরাপত্তা প্রস্তুতির বিষয়ে তদারকি করা হচ্ছে। সাইবার জগতে চলছে নজরদারি। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে যাতে কোনো ধরনের অপপ্রচার বা গুজব রটিয়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি না করা হয়; সেদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাইবার ইউনিট চোখ রাখছে। আজকালের মধ্যে আবাসিক হোটেল ও মেসে তল্লাশি চালাবে পুলিশ। বৃহস্পতিবার প্রস্তুত থাকবে জলকামান, এপিসিসহ পুলিশের সাজায়ো যান।
পুলিশের ডিআইজি পদমর্যাদার একাধিক কর্মকর্তা বলেছেন, অনেক আশঙ্কা মাথায় রেখে নিরাপত্তা ব্যবস্থা সাজানো হচ্ছে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এতে পরিবর্তন, সংযোজন ও বিয়োজন করা হচ্ছে। তারা মনে করছেন, ওইদিন কিছুই হবে না। কর্মসূচি শেষ হবে গতানুগতিকভাবে। রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মসূচি পালনে পুলিশ সর্বোচ্চ ধৈর্য্যরে পরিচয় দেবে। তবে সংঘাত বাধলে কঠোর হবে তারা। কোথাও রাস্তা বন্ধ করে জনগণের চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি, ভাংচুর বা অগ্নিসংযোগ করা হলে বিনা চ্যালেঞ্জে পার পাবে না কেউ।
উল্লেখ্য, বিএনপি ছাড়াও নূরের গণঅধিকার পরিষদ, মাহমুদুর রহমান মান্নার নাগরিক ঐক্য, জাসদ (রব), এলডিপি, লেবার পার্টি, গণসংহতি আন্দোলনসহ সরকারবিরোধী ছোট-বড় ৩৬টি রাজনৈতিক দল ওইদিন মাঠে নামার ঘোষণা দিয়েছে। তারা তত্ত্বাবধায়ক বা নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন এবং নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগ দাবি করে আসছে। অন্যদিকে সংবিধান মোতাবেক বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন চায় আওয়ামী লীগ। এ নিয়ে সরকার ও সংসদের বাইরের বিরোধী দলগুলো অনড় অবস্থানে রয়েছে। হঠাৎ করে প্রকাশ্যে এসে সরব হয়েছে জামায়াতে ইসলামী। সরকারের সমালোচনা করে নিরপক্ষে নির্বাচন চাচ্ছে সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলো মুখোমুখি অবস্থান নেয়ায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়েছে বাড়তি সতর্কতা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়