প্রকাশিত: জুন ২৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
কুরবানির ঈদ সামনে রেখে চামড়ার সিন্ডিকেট বাণিজ্য নতুন বিষয় নয়। প্রতি বছর এমন ঘটনা ঘটে থাকে। এবারো ব্যত্যয় হবে না। ব্যবসায়ীদের মধ্যেও এ নিয়ে অস্থিরতা আছে। একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট করায় প্রতি বছর চামড়ার বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়। সরকার দাম নির্ধারণ করে দিলেও তার চেয়ে অনেক কম দামে বিক্রি করতে হয় চামড়া। অপরদিকে খেলাপি ঝুঁকির কারণে চামড়া খাতে ঋণ অর্ধেকে নামিয়ে এনেছে ব্যাংকগুলো। এছাড়া লবণের অতিমূল্য নিয়ে সংকটে পড়েছেন চামড়া ব্যবসায়ীরা। কুরবানির এই সময়ে চামড়া সংরক্ষণে কাঁচামাল হিসেবে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টন লবণের চাহিদা থাকে। কিন্তু চলতি মৌসুমে রেকর্ড উৎপাদনের পরও লবণের ঊর্ধ্বমুখী দামের কারণে চামড়া সংগ্রহ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। জানা গেছে, চলতি অর্থবছরে দেশে ৬১ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি লবণ উৎপাদন হলেও বাজারে এর প্রভাব নেই। বরং উল্টো লবণের দাম বস্তাপ্রতি বেড়েছে প্রায় ৩০০ টাকা। আর কেজিতে বেড়েছে ৪ টাকা। কুরবানির আগে হঠাৎ করে লবণের দাম বাড়ার পেছনে সিন্ডিকেটের হাত রয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এ অবস্থায় আসন্ন কুরবানির ঈদে চামড়া কেনাবেচা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, দেশের চামড়া খাতের প্রধান সমস্যা কমপ্লায়েন্সের অভাব। এজন্য এ খাতের সম্ভাবনা কাজে লাগানো যাচ্ছে না। সংশ্লিষ্ট সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে বলে মনে করেন তারা। বিভিন্ন সমস্যার কারণেও পশুর চামড়া সংগ্রহে প্রতিবন্ধকতা দেখা দিতে পারে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের করণীয় রয়েছে বলে মনে করি। তৈরি পোশাক শিল্পের পর সবচেয়ে জনসম্পৃক্ত খাত চামড়া শিল্প। আমাদের দেশের চামড়া খাত মূলত রপ্তানিনির্ভর। বিশ্বব্যাপী এ দেশের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে চামড়ার দাম বেড়েছে। এ সুযোগকে কাজে লাগাতে হবে। ভারতের তুলনায় বাংলাদেশের চামড়ার মান ভালো অথচ দাম কম থাকায় প্রতি বছরই ভারতে চামড়া পাচার হয়ে যায়। এ অবস্থা চলতে থাকলে দেশের অন্যতম প্রধান রপ্তানি শিল্প চামড়া খাতটি ধ্বংসের দিকে যাবে। এছাড়া কুরবানির পশুর চামড়ার বিক্রিকৃত টাকা এতিমখানা ও গরিব-দুস্থদের দান করাটাই নিয়ম। কুরবানির চামড়া থেকে প্রাপ্ত অর্থে এসব প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক খরচের একটি বড় অংশ নির্বাহ করা হয়। কিন্তু চামড়ার দাম প্রতি বছর কমতে থাকায় প্রতিষ্ঠান চালাতে হিমশিম খেতে হয়। চামড়া শিল্পকে বাঁচাতে কঠোর তদারকি করছে সরকার। কুরবানির চামড়া সংরক্ষণ ও তদারকিতে পাঁচটি কমিটি গঠন করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। কমিটিগুলো কাঁচা চামড়া সংরক্ষণ ও মজুতে বিশেষ কাজ করবে। এছাড়া লবণের সরবরাহ ও মূল্য পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও দাম কমানোসহ সাপ্লাই চেইন স্বাভাবিক রাখতে সার্বক্ষণিক তদারকি করে বিষয়গুলো কঠোরভাবে মনিটরিং করতে হবে। একটি উন্নয়নশীল দেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে হলে আয়ের খাতগুলোর যেমন যথাযথ তত্ত্বাবধান নিশ্চিত করতে হয়, তেমনি সম্ভাবনাময় খাতগুলোর উন্নয়নে ব্যাপক পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি। সম্ভাবনাময় চামড়া শিল্প সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা ও যথাযথ উদ্যোগের মাধ্যমে এগিয়ে নিতে পারলে জাতীয় অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।
শেয়ার করুন
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।