ইসলামী আন্দোলন : নির্বাচনকালীন জাতীয় সরকারের রূপরেখা ঘোষণা

আগের সংবাদ

কুরবানির পশুর দাম বেশি যে কারণে > আফতাবনগর হাট : এখনো জমেনি হাট গরুও উঠেছে কম

পরের সংবাদ

সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ : সেমির সম্ভাবনা বাঁচিয়ে রাখল জামালরা

প্রকাশিত: জুন ২৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বঙ্গবন্ধু সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে গতকাল মালদ্বীপকে ৩-১ গোলে হারিয়েছে বাংলাদেশ। এই জয়ে সেমিফাইনালে খেলার আশা বাঁচিয়ে রেখেছে জামাল ভূঁইয়ারা। টুর্নামেন্টে টিকে থাকতে হলে জয়ের বিকল্প ছিল না হ্যাভিয়ের কাবরেরার শিষ্যদের সামনে। ড্র করলেও থাকত নানা হিসাব নিকাশ। তবে পিছিয়ে পড়েও দারুণ কামব্যাক করেছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। ২০০৩ সালের পর এই প্রথম সাফে মালদ্বীপকে হারাল বাংলাদেশ।
বেঙ্গালুরু শ্রী কান্তেরাভা স্টেডিয়ামে ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলতে থাকে বাংলাদেশ। পুরো ম্যাচেই আধিপত্য ধরে রাখে তারা। ম্যাচে ৫১ শতাংশ বল দখলে রাখে জামাল-জিকোরা। অপরদিকে ৪৯ শতাংশ বল দখলে রাখে মালদ্বীপ। গোলপোস্টে নেয়া ২০টি শটের মধ্যে ৯টি অন টার্গেটে ছিল বাংলাদেশের- যেখান থেকে তিনটিকে গোলে পরিণত করে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। আর ৭টি শটের ২টি অন টার্গেটে ছিল মালদ্বীপের- যার মধ্যে গোল হয় একটি। এই জয়ে দুই ম্যাচে বাংলাদেশের পয়েন্ট ৩। সমান ম্যাচে মালদ্বীপেরও পয়েন্ট সমান ৩। ২৮ জুন গ্রুপপর্বে বাংলাদেশের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচ ভুটানের বিপক্ষে। ভুটানকে হারাতে পারলেই সেমিফাইনালে চলে যাবে তারা। আর মালদ্বীপ গ্রুপে নিজেদের শেষ ম্যাচ খেলবে লেবাননের বিপক্ষে। সেদিনই চূড়ান্ত হবে, গ্রুপ ‘বি’ গ্রুপ থেকে কোন দুটি দল চ্যাম্পিয়ন-রানার্স আপ হবে।
ম্যাচ শেষে গোলস্কোরার রাকিব বলেন, ‘এই জয়টা আমাদের জন্য ভীষণ আনন্দের। প্রথম ম্যাচ হেরে আমরা চাপে ছিলাম। এ ম্যাচে আমাদের জয় দরকার ছিল। আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ ছিলাম যে আমরা জিততে পারব। কেননা, আমরা সাফে টিকে থাকতে চেয়েছিলাম। সমতা ফিরিয়ে যখন আমরা ড্রেসিংরুমে ফিরলাম, তখন ড্রেসিংরুমের আবহ খুব ভালো ছিল। আমরা সব সময় একসঙ্গে থাকি, আনন্দ করি। তবে একটু আতঙ্কও ছিল সবার মধ্যে। বিরতির সময় সবাই চুপচাপ ছিল, কিন্তু জয়ের পর সবাই খুব আনন্দ করেছে।’
শুরু থেকে বাংলাদেশ ভালো খেললেও প্রথমে গোলের দেখা পায় মালদ্বীপ। ম্যাচের ১৮ মিনিটে প্রথম আক্রমণেই গোল করে দলকে এগিয়ে দেন হামজা মোহামেদ। বক্সের একটু বাইরে থেকে তার নেয়া শট ঝাঁপিয়ে পড়েও আটকাতে পারেননি বাংলাদেশ গোলকিপার আনিসুর রহমান। পিছিয়ে পড়ে গোল শোধে মরিয়া হয় বাংলাদেশ। একের পর এক আক্রমণ চালাতে থাকে তারা। এর সুফল পায় ম্যাচের ৪২ মিনিটে। সোহেল রানার লম্বা ক্রস তপুর হেড বাতাসে রেখেই পোস্টের কাছ থেকে রাকিব হোসেনের হেডে ১-১ গোলে সমতায় ফেরে বাংলাদেশ। সমতা নিয়েই বিরতিতে যায় দুই দল। বিরতি থেকে ফিরে ম্যাচের ৬৩ মিনিটে তিনটি বদল আনেন বাংলাদেশ কোচ। জামাল ভূঁইয়ার জায়গায় মোরসালিন, সিনিয়র সোহেল রানার জায়গায় মজিবর রহমান, গোলদাতা রাকিবের বদলি ইব্রাহিম। এরপরেই ম্যাচের মোড় ঘুরে যায় বাংলাদেশের পক্ষে। ৬৭ মিনিটে ইব্রাহিমের কর্নার থেকে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। তপুর হেড থেকে তারিক কাজী বল ঠেলেন পোস্টে। ফিরতি বলে তৃতীয় চেষ্টায় পোস্টে বল ঠেলেন তারিকই। ৮২ মিনিটে চোট নিয়ে তারিক মাঠ ছাড়েন, বদলি আসেন মেহেদী। ৯০তম মিনিটে ৩-১ করেন বদলি নামা মোরসালিন, জাতীয় দলের হয়ে তৃতীয় ম্যাচে প্রথম গোল করলেন ১৮ বছরের তরুণ মোরসালিন।
জয়ের পর জাতীয় দলের কোচ হ্যাভিয়ের কাবরেরা বলেন, ‘বড় অর্জন। আমাদের অবশ্যই ম্যাচটা জিততে হতো। প্রতিপক্ষ অনেক শক্তিশালী। প্রথম গোলটা হজম করার পর ম্যাচটা কঠিন হয়ে পড়েছিল। তবে আমার ছেলেরা দারুণ খেলেছে ম্যাচে ফেরার জন্য। তাদের ওপর আস্থা রেখেছি। এবার আশা করি সেমিফাইনাল নিশ্চিত করতে পারবে তারা। আমাদের আরো একটা ফাইনাল আছে, ভুটানের বিপক্ষে। তাদের বিপক্ষেও ভালো খেলতে হবে।’
একটা সময় এই মালদ্বীপকে অনায়াসেই হারাত বাংলাদেশ। ১৯৮৫ সাফ গেমসে মালদ্বীপকে ৮-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছিল তারা। এরপর ২০০৩ সালে সাফে মালদ্বীপকে দুইবার হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশ। গ্রুপপর্বে ১-০ গোলে জয়ী হওয়ার পর ফাইনালে মালদ্বীপের মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ। ওই ম্যাচ ১-১ ড্র থাকার পর গড়ায় টাইব্রেকারে। সেখানে ৫-৩ গোলে জিতে চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ। ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে মালদ্বীপ। বাংলাদেশের ১৯২তম অবস্থানের বিপরীতে মালদ্বীপের অবস্থান ১৫৪। সাফে এ নিয়ে ৬ বারের দেখায় দুই জয়ের বিপরীতে তিনটিতে হেরেছে বাংলাদেশ। আর একটি ম্যাচ ড্র হয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়