প্রিপেইড মিটার স্থাপনে আর্থিক লেনদেন না করার আহ্বান

আগের সংবাদ

হাটে পর্যাপ্ত গরু, দাম চড়া : কেনাবেচা আজ থেকে > শর্ত মানছেন না ইজারাদার > ট্রাক নিয়ে টানাটানি

পরের সংবাদ

‘রিয়েল সেশন’ ভিডিওর মূল ক্রেতা ভারতীয় ও প্রবাসীরা : ব্ল্যাকমেইলের শিকার অনেকে

প্রকাশিত: জুন ২৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ইমরান রহমান : সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে মোবাইল নম্বর চাইতেন ফাতেমা তুজ জোহরা। পরে কিছুদিন মোবাইল ফোনে কথা বলার পর হোয়াটসঅ্যাপে ভিডিও কলে কথা বলার আবদার করতেন। প্রেমিকার আবদার মেটাতে ভিডিও কল দিলে, ধীরে ধীরে আরো ঘনিষ্ঠ হতে বলতেন ফাতেমা। সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে বিপরীত পাশে থাকা লোকজন ভার্চুয়ালি আপত্তিকর মুহূর্ত সৃষ্টি করতেন। এমনকি নিজের ফোনে থাকা আপত্তিকর ভিডিও পাঠিয়ে দিতেন। আর এতেই ঘটত বিপত্তি। ভিডিও কলের আপত্তিকর দৃশ্য স্ক্রিন রেকর্ডার দিয়ে রেকর্ড করে রাখতেন ফাতেমা। ফোনে কথা বলার বিশেষ মুহূর্তগুলোর অডিও রেকর্ড করে রাখতেন। নিতেন স্ক্রিনশটও। পরে এগুলো দেখিয়ে পাততেন ব্ল্যাকমেইলিংয়ের ফাঁদ।
চাহিদামতো মোটা অঙ্কের টাকা না পেলে এগুলো বিভিন্ন গোপন পর্নো সাইটে বিক্রি করে দিতেন ফাতেমা। পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘অডিও ভিডিও সেশন/রিয়েল সেশন’ বিক্রির বিজ্ঞাপন দেয়া হতো। যারা সাড়া দিতেন, তাদের কাছ থেকে অগ্রিম টাকা নিয়ে ভিডিওগুলো সরবরাহ করা হতো। মূলত পর্নো
ভিডিওগুলোর কোড নেম হিসেবে তারা ‘সেশন’ নামটি ব্যবহার করতেন।
ফাতেমা ও তার চক্রের ফাঁদে পড়ে নিঃস্ব হয়েছেন অসংখ্য মানুষ। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। রাজধানীর ভাটারা থানায় গত ১১ জুন পর্নোগ্রাফি আইনে দায়ের হওয়া একটি মামলার সূত্র ধরে ফাতেমা ও এই চক্রের অপর সদস্য আব্দুল্লাহ আল মামুনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। খুলনার দৌলতপুর ও পাইকগাছা থানা এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
ডিবি সূত্র জানায়, গ্রেপ্তারকৃতরা কৌশলে বিভিন্ন ব্যক্তির একান্ত ভিডিও সংগ্রহ ছাড়াও নিজেরা বিভিন্ন ধরনের পর্নো ভিডিও তৈরি করে দেশি-বিদেশি ক্রেতার কাছে সেগুলো বিক্রি করতেন। গ্রেপ্তারকৃতদের মোবাইল ফোন ও ম্যাসেঞ্জার পর্যালোচনা করে তদন্তসংশ্লিষ্টরা দেখতে পান, বিভিন্ন ব্যক্তির অশ্লীল ও আপত্তিকর পর্নো ভিডিও বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, মালয়েশিয়া, দুবাই, সৌদিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেেিশর বাংলা ও হিন্দি ভাষাভাষী ব্যক্তির কাছে বিক্রি করা হয়েছে। তাদের পর্নো ভিডিওগুলোর মূল ক্রেতা ভারতীয় নাগরিক ও বিভিন্ন দেশে অবস্থানরত প্রবাসী বাংলাদেশি। বাংলাদেশের অভ্যন্তরেও রয়েছে এসব পর্নো ভিডিওর ক্রেতা। পর্নো সাইটগুলোতে বাংলাদেশি পর্নো ভিডিওর চাহিদা বেশি থাকায় তারা এই পথ বেছে নেন বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন। তারা নিজেদের ‘ফেমডম’ বলে দাবি করেন এবং এসব পর্নো ভিডিওর ক্রেতাকে ‘স্লেভ’ বলে উল্লেখ করেন।
ডিবির সাইবার এন্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের (উত্তর) অরগানাইজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিমের টিম লিডার অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) মো. নাজমুল হক ভোরের কাগজকে বলেন, ভাটারা থানায় দায়ের হওয়া মামলার বাদীর কাছ থেকে চক্রটি ব্যক্তিগত অশ্লীল ও আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও হাতিয়ে নেয়। পরে সেগুলো দেখিয়ে ৫ কোটি টাকা চেয়ে ব্ল্যাকমেইলিংয়ের হুমকি দেয়। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহযোগিতায় তাদের ২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের সময় তাদের ২টি মোবাইল ফোন ও ২টি সিম কার্ড জব্দ করা হয়েছে। এ ধরনের ব্ল্যাকমেইলিংয়ের হাত থেতে বাঁচতে অনলাইনে নিজের ব্যক্তিগত ছবি বা ভিডিও কাউকে না পাঠানোর বিষয়ে সচেতন হতে বলেন ডিবি সাইবার কর্মকর্তা মো. নাজমুল হক।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়