প্রিপেইড মিটার স্থাপনে আর্থিক লেনদেন না করার আহ্বান

আগের সংবাদ

হাটে পর্যাপ্ত গরু, দাম চড়া : কেনাবেচা আজ থেকে > শর্ত মানছেন না ইজারাদার > ট্রাক নিয়ে টানাটানি

পরের সংবাদ

কার্যকর পয়ঃবর্জ্যরে ব্যবস্থাপনা জরুরি

প্রকাশিত: জুন ২৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

স্যানিটেশন প্রক্রিয়ার একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় পয়ঃবর্জ্য ব্যবস্থাপনা। বিশেষ করে পয়ঃবর্জ্য মজুতকরণ, পরিষ্কারকরণ, অপসারণ, পরিবহন, পরিশোধন ও চূড়ান্ত পরিত্যাগকরণের বিষয়গুলো বারবার সামনে আসছে। এই পয়ঃবর্জ্য সঠিক ব্যবস্থাপনায় সম্পদ হতে পারে। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে শুধু সিটি করপোরেশন অথবা পৌরসভায় নয়, পয়ঃবর্জ্য ব্যবস্থাপনা গ্রাম পর্যায়েও করতে হবে। পাশাপাশি এই খাতে লজিস্টিক সাপোর্ট ও অর্থায়ন বাড়ানোর কথা বলা হচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর সিরডাপ আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘সিটি স্যানিটেশন অ্যান্ড ফিকাল স্লাজ ম্যানেজমেন্ট লার্নিং শেয়ারিং’ শীর্ষক এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারে বক্তারা ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনে এনজিও ফোরামের বাস্তবায়নাধীন প্রকল্প রেজিলিয়েন্ট, ইনক্লুসিভ অ্যান্ড ইনোভেটিভ সিটিজ ইন বাংলাদেশের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সিটিওয়াইড ইনক্লুসিভ স্যানিটেশন (সিডব্লিউআইএস) বিষয়ে আলোচনা করেন। এনজিও ফোরাম ফর পাবলিক হেলথ ও ভোরের কাগজ যৌথভাবে এই সেমিনারের আয়োজন করে। সত্যিকার অর্থে জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ সুরক্ষায় পাবলিক টয়লেট বৃদ্ধি ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা, ব্যবহৃত পানি পুনর্ব্যবহার এবং পয়ঃবর্জ্যরে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা জরুরি। জানা যায়, প্রতিদিন বিভিন্ন ধরনের হাজার হাজার টন বর্জ্য তৈরি হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে শিল্পকারখানার বর্জ্য, ইলেকট্রনিক বর্জ্য, চিকিৎসা বর্জ্য, গৃহস্থালি বর্জ্য, পয়ঃবর্জ্য প্রভৃতি। সারাদেশের মানুষকে নিরাপদ স্যানিটেশন সুবিধা দেয়ার লক্ষ্যে সরকারি-বেসরকারি সংগঠন, উন্নয়ন সহযোগী, ঋণপ্রদানকারী সংস্থাগুলো সারাদেশে কাজ করছে। কিন্তু নির্মম সত্য হচ্ছে, আমাদের শহর অঞ্চলের পয়ঃবর্জ্য ব্যবস্থাপনা নেই বললেই চলে। ঢাকার বেশিরভাগ পয়ঃবর্জ্য বুড়িগঙ্গা বা তুরাগ নদীতে গিয়ে পড়ে, যার ফলে প্রতিনিয়তই পানি ও পরিবেশ দূষিত হয়ে নানাবিধ রোগব্যাধি ছড়াচ্ছে। শুধু ঢাকায় প্রতিদিন ১৩ লাখ ঘনমিটার পয়ঃবর্জ্য তৈরি হচ্ছে। যার মধ্যে ১ লাখ ২০ হাজার ঘনমিটার পরিশোধন ক্ষমতাসম্পন্ন পাগলা পয়ঃবর্জ্য পরিশোধনাগারের মাধ্যমে মাত্র ৫০ হাজার ঘনমিটার পরিশোধন করা হচ্ছে। বাকি ১২ লাখ ৫০ হাজার ঘনমিটার অপরিশোধিত অবস্থায় সরাসরি নদীতে ফেলা হচ্ছে। ফলে নদীর পানির গুণগত মানের অবনতি হচ্ছে। অতি দূষণে নদীর মাছ ও জলজ প্রাণী হারিয়ে যাচ্ছে। শিল্প, বাণিজ্য, কৃষি ও গৃহস্থালি কাজে নদীর পানি ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। জীবাণুজনিত দূষণে জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে দাঁড়িয়েছে। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, কেবল রাজধানীতেই নয়, বিভাগীয় জেলা-উপজেলা শহরেও মানসম্মত ড্রেনেজ, স্যুয়ারেজ ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা নেই বললেই চলে। নীতিগত দিক দিয়ে বিবেচনা করলে দেশে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সুনির্দিষ্ট কোনো আইনও বর্তমানে তেমন কার্যকর নয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পয়ঃবর্জ্য ব্যবস্থাপনায় উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। বাংলাদেশেও উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করার বিষয়টি পর্যালোচনা হতে পারে। পয়ঃবর্জ্য, কঠিন বর্জ্যসহ অন্যান্য সব ধরনের বর্জ্য এমনভাবে ব্যবস্থাপনা করতে হবে, যাতে পরিবেশ দূষিত না হয়। মানুষের স্বাস্থ্যের হানি না ঘটে। শুধু সিটি করপোরেশন অথবা পৌরসভায় নয়, এই পয়ঃবর্জ্য ব্যবস্থাপনা গ্রাম পর্যায়েও করতে হবে। প্রয়োজনে পয়ঃবর্জ্যকে সম্পদে রূপান্তরিত করার ব্যবস্থা নিতে হবে। নতুন কোনো আবাসিক এলাকা করার সময় তাদের নিজস্ব পয়ঃবর্জ্য ব্যবস্থাপনা রাখা বাধ্যতামূলক করতে হবে। সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলাম। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ অত্যন্ত ঘনবসতি হওয়ায় পয়ঃবর্জ্যরে পরিমাণ অনেক বেশি। তা সত্ত্বেও খোলা স্থানে পয়ঃবর্জ্য ব্যবস্থাপনায় দেশে অনেক উন্নতি হয়েছে। শুধু সিটি করপোরেশন অথবা পৌরসভায় নয়, এই পয়ঃবর্জ্য ব্যবস্থাপনা গ্রাম পর্যায়েও করতে হবে। আমরা চাই, উদ্যোগটি দ্রুত বাস্তবায়ন হোক।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়