শিশুশ্রম নিরসনে সমন্বিত পদক্ষেপের আহ্বান

আগের সংবাদ

ভারত-আমেরিকার বৈচিত্র্যময় অংশীদারত্ব গড়ার প্রত্যয় : হোয়াইট হাউসে মোদি-বাইডেন বৈঠক শেষে যৌথ ঘোষণা

পরের সংবাদ

সাগর-রুনি হত্যারহস্য : অমীমাংসিত রাখার কোনো সুযোগ নেই

প্রকাশিত: জুন ২৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

১১ বছর পেরিয়ে গেলেও সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের তদন্ত তিমিরেই রয়ে গেল। খুনিরা রয়েছে অধরা। ৯৯ বার পেছাল সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার তারিখ। প্রতিবেদন দাখিলের পরবর্তী দিন ধার্য করা হয়েছে আগামী ৭ আগস্ট। গতকাল বৃহস্পতিবার মামলাটির তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য ছিল। কিন্তু এ দিন মামলার তদন্ত সংস্থা র‌্যাব প্রতিবেদন দাখিল করেনি। এ হত্যার ঘটনায় এ পর্যন্ত কাউকে শনাক্ত করা যায়নি। এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনার দীর্ঘ সময়ে তদন্তে অগ্রগতি না থাকায় দুটি পরিবারে বিচার পাওয়া নিয়ে সন্দেহ তৈরি হওয়া অস্বাভাবিক নয়। মর্মান্তিক এ হত্যাকাণ্ডের পর খুনি ধরতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আল্টিমেটাম, বিচার দাবিতে সাংবাদিক সমাজের আন্দোলনে কোনো ফল হয়নি। দীর্ঘ সময়ে হত্যার রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এ হত্যাকাণ্ডের রহস্যময়তা দেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর বিরাট ব্যর্থতার নজির বলা যায়। মামলাটি বর্তমানে র‌্যাবের দায়িত্বে এবং ওই বিশেষ বাহিনীও হত্যারহস্য উন্মোচনে ব্যর্থ। এত সব ব্যর্থতার দায়ভার কোনো না কোনোভাবে সরকারের ওপরই বর্তায়। র‌্যাব বলছে, সাগর-রুনির হত্যায় জড়িত সুনির্দিষ্ট কারো পরিচয় এখনো জানা যায়নি। যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো আলামতের সূত্র ধরে অজ্ঞাত যাদের ডিএনএ প্রোফাইল মিলেছিল, সেসবের মাধ্যমে জড়িতদের চেহারা শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। নতুন একটি প্রযুক্তি দিয়ে ডিএনএ নমুনার সূত্র ধরে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির চেহারা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। অনেক প্রতীক্ষার পর যুক্তরাষ্ট্রের পরীক্ষাগার থেকে ডিঅক্সিরাইবোনিউক্লিক অ্যাসিড (ডিএনএ) পরীক্ষার রিপোর্টগুলো হাতে পেয়েছে এলিট ফোর্স র?্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র?্যাব)। রিপোর্ট ও অপরাধচিত্রের প্রতিবেদন (ক্রাইম সিন রিপোর্ট) পর্যালোচনায় দুজনের ডিএনএর পূর্ণাঙ্গ প্রোফাইল পেলেও সন্দেহভাজন খুনি শনাক্ত হয়নি। দুই পরিবারের দাবি, অজ্ঞাতনামা অনেক দিন ধরেই শুনছি। এখন আসল খুনির চেহারা দেখতে চাই। আমরাও এই হত্যাকাণ্ডের কূলকিনারা দেখতে চাই। ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারে ভাড়া বাসা থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সরওয়ার এবং এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনির ক্ষতবিক্ষত লাশ। ওই সময় বাসায় ছিল তাদের একমাত্র সন্তান পাঁচ বছর বয়সি মাহির সরওয়ার মেঘ। ঘটনাস্থলে গিয়ে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন বলেছিলেন, ‘৪৮ ঘণ্টার’ মধ্যে খুনিদের গ্রেপ্তার করা হবে। দুই দিন পরে তৎকালীন আইজিপি হাসান মাহমুদ খন্দকার বলেছিলেন, ‘প্রণিধানযোগ্য অগ্রগতি’ হয়েছে। সেই ৪৮ ঘণ্টার অগ্রগতি ১১ বছরেও জানা যায়নি। দেশের বিভিন্ন সংস্থা হয়ে মামলার তদন্ত ঘুরেছে সুদূর মার্কিন মুল্লুক পর্যন্ত। কবর থেকে লাশ তোলা শুধু নয়, তদন্তের সব শাখা-প্রশাখায় বিচরণ করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। কিন্তু ফল শূন্য। হয়নি দৃশ্যমান তদন্তের অগ্রগতি। হত্যাকারীদের চিহ্নিত করা গেছে কিনা বা কবে নাগাদ তদন্ত শেষ হতে পারে, এত বছর পরও এসব প্রশ্নের উত্তর মিলছে না কারো কাছে। সাগর-রুনি হত্যারহস্য অমীমাংসিত রাখার কোনো সুযোগ নেই; এ হত্যাকাণ্ডের বিচার অবশ্যই করতে হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়