পাগলায় মানববন্ধন : মন্দিরের জায়গা উদ্ধারের দাবি

আগের সংবাদ

স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে দ্বিধা করবে না যুক্তরাষ্ট্র : মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর

পরের সংবাদ

দামে হতাশ ক্রেতারা : হাট কাঁপাচ্ছে ‘চিতা’ ও ‘তোতাপরি’

প্রকাশিত: জুন ২২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

আব্দুল হামিদ মিঞা, বাঘা (রাজশাহী) থেকে : বাঘা উপজেলায় এবার কুরবানির পশুর হাট কাঁপাচ্ছে অস্ট্রেলীয় ফ্রিজিয়ান জাতের ‘চিতা’ নামের একটি ষাঁড় ও পাকিস্তানি জাতের ‘তোতাপরি’ ছাগল। ষাঁড়টির মালিক আড়ানী পৌরসভার মাহাষ্যপাড়া গ্রামের সুজিত চন্দ্র সরকার এবং ছাগলটির মালিক উপজেলার দিঘা গ্রামের রকি হোসেন। পশুর মালিকরা জানান, কোনো প্রকার ওষুধ ছাড়াই প্রাকৃতিক খাবার খাইয়ে পরম যতেœ ষাঁড় ও ছাগলটিকে লালনপালন করেছেন তারা। গরম থেকে এ দুটিকে বাঁচাতে ব্যবহার করা হয়েছে বৈদ্যুতিক ফ্যান। ওই ষাঁড় ও ছাগলটি দেখতে প্রতিদিনই তাদের বাড়িতে ভিড় করছে উৎসুক জনতা, আসছেন ক্রেতারাও।
রকি হোসেনের ৫৮ ইঞ্চি লম্বা ও ৪০ ইঞ্চি উচ্চতার খয়েরি লাল রঙের ছাগলটির নাম রাখা হয়েছে ‘তোতাপরি’ আর সুজিত চন্দ্র সরকারের ১০ ফুট লম্বা ও সাড়ে ৫ ফুট উচ্চতার কালো-সাদা রঙের দুষ্টু প্রকৃতির ষাঁড়টির নাম রাখা হয়েছে ‘চিতা’। সুজিত চন্দ্র সরকারের নিজের পালিত গাভী থেকে জন্ম নেয়া ষাঁড়টি অস্ট্রেলীয় ফ্রিজিয়ান জাতের। তিন বছর আগে জন্ম নেয়া ষাঁড়টির নাম রাখেন তিনি ‘চিতা’। এর ওজন ধরা হয়েছে প্রায় ২০ মণ। দাম হাঁকা হয়েছে ১৫ লাখ। সুজিত চন্দ্র সরকার জানান, আলোচনা সাপেক্ষে এর দাম একটু কম পেলেও বিক্রি করবেন। গ্রামে বিক্রি না হলে শহরের হাটে তুলবেন।
তিনি জানান, রোদ, মেঘ ও বৃষ্টি নামে তার আরো ৩টি গরু রয়েছে। চিতার জন্মের পর একই গাভীর পেট থেকে জন্ম নেয় ‘রোদ’ ও ‘মেঘ’। আর এক বছর আগে এক লাখ ৩৫ হাজার টাকা দিয়ে যেটি কিনেছেন তার নাম রাখা হয়েছে ‘বৃষ্টি’। তার মা রেখা রানী সরকার আদর করে গরুগুলোকে সেই নামে ডাকেন। প্রাকৃতিক খাবার ছাড়াও তাদের খাওয়ান খড়, ভুট্টা, ধান, গম, খেসারি ও বুটের মিশ্রিত দানাদার খাবার। কোনো ধরনের মেডিসিন ব্যবহার করেননি। প্রতিদিন একেকটি গরুর খাবারে খরচ হয় ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা। কুরবানিতে বিক্রি করবেন বলে ‘রোদ’, ‘মেঘ’ আর ‘বৃষ্টি’র দাম হেঁকেছেন ওজনভেদে ৬ লাখ থেকে ৫ লাখ টাকা। মুক্তি রানী সরকার বলেন, পরিবারের রান্নার পাশাপাশি ওদের জন্য দুই বেলা ভাত-খিচুড়ি রান্না করে দিই। রেখা রানী সরকার বলেন, নিজের সন্তানের মতো পরম যতেœ পশুদের পালন করছি। কুরবানিতে বিক্রি হয়ে গেলে বেশি খারাপ লাগবে। তারা জানান, ওদের সঙ্গে সময় কাটাতে গিয়ে একটা মায়া হয়ে গেছে।
ষাঁড় দেখতে আসা পাশের গ্রামের আফাজ উদ্দীন নামের একজন বলেন, লোকমুখে গল্প শুনে দেখতে এসেছি। এলাকার মজিবর রহমান বলেন, আমার জানামতে এত বড় ষাঁড়গরু আশপাশের কয়েক গ্রামের ভেতর নেই। তিনি জানান, এই গরু দেখতে দূরদূরান্ত থেকে মানুষ আসছে। তবে এত দামের ষাঁড় কেনার খদ্দের এখনো পাওয়া যায়নি। অনেকেই শুধু দেখতে আসছেন। জানা যায়, এবার উপজেলা প্রাণিসম্পদ মেলায় প্রথম স্থান দখল করেছে রকি হোসেনের ‘তোতাপরি’। ১১০ কেজি ওজনের ‘তোতাপরি’ ছাগলটির মাংস ধরা হয়েছে ৮০ থেকে ৮৫ কেজি। এক লাখ ২০ হাজার টাকা দাম হলেও বিক্রি করেননি। এক লাখ ৩০ হাজার টাকা হলে বিক্রি করবেন।
ছাগলের মালিক রকি হোসেন জানান, ১৬ মাস আগে ৫ মাসের বাচ্চা কিনেছিলেন ১৯ হাজার টাকা দিয়ে। তাকে খাওয়ান- ছোলা, শুকনো খড় ও গমের ভুষি এবং ভুট্টার ময়দা। ছাগল কিনতে আসা মাজদার রহমান জানান, পছন্দের ছাগলটির দাম ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) শরিফুল ইসলাম বলেন, ছাগল-ষাঁড়গুলো ছোট থেকেই তাদের তত্ত্বাবধানে রয়েছে। প্রাকৃতিক খাবার না খাওয়ালে এই গরমে এগুলো বাঁচত না। এবারের কুরবানির জন্য উপজেলায় অনেক গরু, ছাগল, মহিষ প্রস্তুত রয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে তাদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়