পাগলায় মানববন্ধন : মন্দিরের জায়গা উদ্ধারের দাবি

আগের সংবাদ

স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে দ্বিধা করবে না যুক্তরাষ্ট্র : মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর

পরের সংবাদ

জাহাজ কমিশনিং অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী : আধুনিক ও অনুকরণীয় স্মার্ট বাহিনী হবে কোস্ট গার্ড

প্রকাশিত: জুন ২২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড সদস্যদের দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে সততা ও বিশ্বাসের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে বাহিনীর সুনাম ও মর্যাদা সমুন্নত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, আমি আপনাদের আশ্বাস দিচ্ছি, আমার সরকার এই বাহিনীর ক্রমাগত অগ্রগতির পাশাপাশি আপনাদের সামগ্রিক কল্যাণে প্রয়োজনীয় সব সহায়তা দেবে। ২০৩১ থেকে ২০৪১ সালের মধ্যে কোস্ট গার্ড একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ, পরিপক্ক, আধুনিক এবং অনুকরণীয় স্মার্ট বাহিনী হবে।
চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় গতকাল বুধবার সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের স্থানীয়ভাবে তৈরি পাঁচটি অত্যাধুনিক জাহাজ কমিশন করার সময় তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের মহাপরিচালক রিয়ার এডমিরাল আশরাফুল হক চৌধুরী। বক্তব্য রাখেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. মুস্তাফিজুর রহমান। বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড এবং নতুন কমিশনকৃত জাহাজের অপারেশনাল কার্যক্রম তুলে ধরে একটি সংক্ষিপ্ত ভিডিও দেখানো হয়। পাঁচটি জাহাজের মধ্যে দুটি অভ্যন্তরীণ টহল জাহাজ ‘বিসিজিএস জয় বাংলা’ এবং ‘বিসিজিএস অপূর্ব বাংলা’ নারায়ণগঞ্জের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ডকইয়ার্ড এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস লিমিটেড নির্মিত এবং দুটি টাগবোট ‘বিসিজিটি প্রত্যয়’ এবং ‘বিসিজিটি প্রমত্তা’ এবং ভাসমান ক্রেন ‘বিসিজিএফসি শক্তি’ তৈরি করেছে খুলনা শিপইয়ার্ড। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের মহাপরিচালক নতুন কমিশনকৃত জাহাজের কমান্ডিং অফিসারদের কাছে ‘কমিশনিং ফরমান’ হস্তান্তর করেন। পরে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের নতুন কমিশনপ্রাপ্ত জাহাজগুলোর নামফলক উন্মোচন করেন। কোস্ট গার্ডের সদস্যরা প্রধানমন্ত্রীকে রাষ্ট্রীয় সালাম দেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ভবিষ্যতে নতুন দায়িত্ব পালনে সক্ষম হিসেবে কোস্ট গার্ডকে একটি আধুনিক ও সমসাময়িক বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে সরকার কাজ করছে। গভীর সমুদ্রে জনগণের জানমালের নিরাপত্তার পাশাপাশি জাতীয় স্বার্থে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের যোগাযোগ ব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর সঙ্গে ডিজিটাল সংযোগ স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। ভাসানচরে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডে ড্রোন প্রযুক্তি সংযোজন করা হয়েছে। গভীর-সমুদ্র এবং ‘সুনীল অর্থনীতি’ অঞ্চলের সুরক্ষায় দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ২০২৬-২০৩০ সালের মধ্যে আরো দুটি সর্ব-আবহাওয়ায় এবং গভীর-সমুদ্রে অফশোর প্যাট্রোল ভেসেল (ওপিভিএস), একটি হাসপাতাল সুবিধাযুক্ত জাহাজ, হোভারক্রাফ্ট এবং বেশ কয়েকটি উচ্চ-গতির জাহাজ যুক্ত করার পরিকল্পনা নিয়েছি। ২০৩১ থেকে ২০৪১ সালের মধ্যে কোস্ট গার্ড একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ, পরিপক্ক, আধুনিক এবং অনুকরণীয় স্মার্ট বাহিনী হবে। আমরা ক্ষমতায় আছি বলেই ২০০৯ সাল থেকে কোস্ট গার্ডের জনবল বেড়েছে। কোস্ট গার্ড গভীর সমুদ্র নির্ভর অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে গতিশীল ও নিরাপদ রাখার পাশাপাশি সুনীল অর্থনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রকল্প ও ব্যক্তিবর্গকে নিরাপত্তা দিতে আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে আসছে।
তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে আমরা কোস্ট গার্ডের বিভিন্ন জোনের জন্য জমি,

অবকাঠামো নির্মাণ এবং বিভিন্ন ধরনের নৌযান সরবরাহ করি। ২০০৯ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এসে উপকূলীয় সংকট ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র, ঘাঁটিতে অফিসার এবং নাবিকদের বাসস্থান, অফিসারদের মেস, নাবিকদের কোয়ার্টার এবং কোস্ট গার্ডের স্টেশন ও ফাঁড়িতে প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ করেছি। পটুয়াখালী অঞ্চলে নিজস্ব প্রশিক্ষণ ঘাঁটি ‘বিসিজি বেস অগ্রযাত্রা’ নির্মাণ করা হয়েছে। গত ১৪ বছরে মোট ১৫৪টি আধুনিক ও দ্রুতগতির বিভিন্ন আকারের জাহাজ এবং জলযান তৈরি করে কোস্ট গার্ডে সংযোজন করা হয়েছে। এছাড়া, চারটি অফশোর প্যাট্রোল ভেসেল (ওপিভি), এবং নিজস্ব ইয়ার্ডে তৈরি অত্যাধুনিক ১০ মিটার রেসকিউ বোট এবং জাপান থেকে আনা ২০ মিটার রেসকিউ বোট বাহিনীর বহরে যুক্ত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, কোস্ট গার্ড জাহাজ নির্মাণ, মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য গজারিয়ায় একটি ডকইয়ার্ডও নির্মিত হয়েছে। আশা করছি, বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড নিজস্ব ইয়ার্ডে জাহাজ নির্মাণের ফলে স্বয়ংসম্পূর্ণতা ও সক্ষমতার একটি নতুন স্তরে পৌঁছাবে।
নতুন জাহাজগুলো অতি আধুনিক যন্ত্রপাতি, সেন্সর এবং নজরদারি রাডার দিয়ে সজ্জিত। উপকূলীয় টহল জাহাজগুলোতে তিনটি স্বয়ংক্রিয় কামান রয়েছে, যা অপারেশনাল কার্যক্রম রক্ষা ও পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। জাহাজগুলোর নজরদারি ক্ষমতা ৯৬ নটিক্যাল মাইল এবং কামানের পাল্লা ৪ কিলোমিটার। জাহাজগুলো এই রেঞ্জের মধ্যে অন্যান্য জাহাজ, অপরাধী বা শত্রæদের যে কোনো কিছু শনাক্ত করতে সক্ষম, কামানগুলো বিসিজিকে কার্যক্রম পরিচালনা করতে সহায়তা করবে। এই পাঁচটি নৌযান চালু হলে বহির্নোঙরে বাণিজ্যিক জাহাজে চুরি রোধ, সমুদ্র পথে মানব ও মাদক পাচার নিয়ন্ত্রণ, সুনীল অর্থনীতি, সীমান্তে টহল এবং উদ্ধার অভিযান পরিচালনার সক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং সামুদ্রিক দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে বিসিজির অপারেশনাল কার্যক্রম ত্বরান্বিত হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়