ঠিকানা নিয়ে ৩২ বার তদন্তে উষ্মা হাইকোর্টের

আগের সংবাদ

সেন্টমার্টিন দ্বীপ লিজ দিয়ে ক্ষমতায় বসবে না আ.লীগ > সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী : অন্য দেশের সঙ্গেও অর্থ বিনিময়ের সুযোগে ব্রিকসে যোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত

পরের সংবাদ

টানা বৃষ্টি : সিলেটসহ চার জেলায় বন্যার শঙ্কা

প্রকাশিত: জুন ২১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিলেট, সুনামগঞ্জ, নীলফামারী ও কুড়িগ্রামে নদনদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে নি¤œাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বৃষ্টির এ ধারা অব্যাহত থাকলে ওইসব জেলায় বন্যা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
সিলেট : জ্যৈষ্ঠের শেষ থেকে সিলেটে বৃষ্টি ঝরছে। এই বৃষ্টি আরো কয়েকদিন অব্যাহত থাকবে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তর নিশ্চিত করেছে। সে হিসেবে আজ বুধবারও বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে সিলেট মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় ইতোমধ্যে সুরমার পানি প্রবেশ করেছে। এছাড়া জেলার বিভিন্ন উপজেলা প্লাবিত হয়েছে। বিশেষ করে গোয়াইনঘাট উপজেলার নি¤œাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার পাশাপাশি সেখানের ৭টি ইউনিয়নে সড়কপথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। একই সঙ্গে কোম্পানীগঞ্জ, জকিগঞ্জ ও কানাইঘাট উপজেলার কয়েকটি সড়কে পানি উঠে যাওয়ায় যাতায়াতে বিঘœ ঘটছে।
সিলেটের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজীব হোসাইন জানান, সিলেটে আরো কয়েকদিন ভারি বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। সিলেট অঞ্চলে জুন মাসে স্বাভাবিক গড় বৃষ্টিপাত ৮১৮ দশমিক ৪ মিলিমিটার। তবে চলতি জুন মাসের ১৯ দিনে সিলেটে বৃষ্টিপাত হয়েছে ১ হাজার ৮৫ দশমিক ৯ মিলিমিটার। বাকি ১১ দিনে সিলেটে আরো বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। গত বছরের জুন মাসে ১ হাজার ৪০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছিল। এতে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছিল। সেই হিসেবে এখন বন্যা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
সুনামগঞ্জ : হাওড়বেষ্টিত ভাটির জনপদ সুনামগঞ্জে ফের বন্যার পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। গত ৪-৫ দিনের ভারি বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে সুনামগঞ্জের সীমান্তবর্তী তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর ও ছাতক উপজেলার নি¤œাঞ্চল তলিয়ে গেছে। এসব এলাকায় রাস্তাঘাটে পানি ওঠায় সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। এতে ৩ লাখেরও বেশি মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জে ৫২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সুনামগঞ্জের সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও ছাতকে তা ৮০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। একই সময়ে ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টি হয়েছে ১৫৫ মিলিমিটার।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সুনামগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার জানান, আগামী ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জে ভারি বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে হাওড় ও নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে স্বল্পমেয়াদি বন্যার পূর্বাভাস রয়েছে।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী বলেন, বন্যার পূর্বাভাস মাথায় রেখে জেলা প্রশাসন সব ধরনের দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে।
নীলফামারী : তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে নীলফামারীর জলঢাকা ও ডিমলা উপজেলার কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে কয়েক হাজার মানুষ। তিস্তার পানি নিয়ন্ত্রণে ৪৪টি জলকপাট খুলে দেয়া হয়েছে। ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খান জানান, ইউনিয়নের ঝাড়সিংহেশ্বর চরসহ বেশ কিছু এলাকায় পানি প্রবেশ করেছে। ওসব এলাকায় সব সময় খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। নি¤œাঞ্চলে বসবাসরতদের উঁচু স্থানে আশ্রয় নেয়ার জন্য ইতোমধ্যে মাইকিং করা হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফ উদ দৌলা ভোরের কাগজকে বলেন, দুই দিনের টানা বর্ষণে গতকাল মঙ্গলবার ভোর সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ৫১ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে বন্যা দেখা দেবে।
কুড়িগ্রাম : কুড়িগ্রামের ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা ও দুধকুমার নদীর পানি বৃদ্ধি অপরিবর্তিত রয়েছে। ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ না করলেও তলিয়ে গেছে পটল, ঢেড়সসহ বিভিন্ন সবজি ক্ষেত। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার তথ্য অনুযায়ী ব্রহ্মপুত্র নদের পানি কুড়িগ্রামের চিলমারী পয়েন্টে বিপৎসীমার ৬৯ সেন্টিমিটার, ধরলা নদীর পানি বিপৎসীমার ৬৯ সেন্টিমিটার, তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ৭৫ সেন্টিমিটার ও দুধকুমার নদীর পানি পাটেশ্বরী পয়েন্টে বিপৎসীমার ৪২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। তবে বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। এতে বন্যার আশঙ্কা রয়েছে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ-আল-মামুন জানান, জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত নদনদীর পানি গত ২৪ ঘণ্টায় স্থিতিশীল রয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়