কাগজ প্রতিবেদক : মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষকে কষ্ট করতে হচ্ছে উল্লেখ করে এই হার নিয়ন্ত্রণের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, মূল্যস্ফীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা উচিত। সরকারের সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি নির্দেশ, ইনফ্লেশন কমাতে হবে। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান জানান।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) বিসিএস কর একাডেমিক তৈরির একটি প্রকল্প অনুমোদনের সময় বলেছেন, ‘জমি কম, জমি কম, জমি কম লাগাও। এত জমি নেয়া যাবে না। আরো কমাও। এত জমি ব্যবহার করা যাবে না। আরো কম জমি নিতে হবে। খরচ কমাও, জমির ব্যবহার কমাতে হবে। দেশে চলমান বৈদেশিক মুদ্রার সংকট সামাল দিতে প্রধানমন্ত্রী পাইপলাইনে থাকা বিদেশি ঋণের অর্থ ব্যবহারের দিকে নজর দেয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন। বিভিন্ন সময়ে দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় দাতা সংস্থার সঙ্গে যেসব ঋণ চুক্তি হয়েছে, সময়মতো তার অর্থ ব্যবহার করতে না পারায় এ পর্যন্ত প্রায় ৫৪ বিলিয়ন (৫ হাজার ৪০০ কোটি) ডলার পাইপলাইনে জমে আছে বলে তথ্য দেন পরিকল্পনামন্ত্রী। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী সবাইকে বলেছেন, ‘মূল্যস্ফীতির বিরুদ্ধে ফাইট করা উচিত’। আমাদের, সরকারের সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি নির্দেশ, ‘ইনফ্লেশন কমাতে হবে’।
এম এ মান্নান বলেন, নিরাপদ খাবার পানি, স্যানেটারি, স্বাক্ষরতা, গড় আয়ু, ইন্টারনেট ব্যবহার বেড়েছে, যা প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করা হয়েছে। প্রবাসী আয় একটু বেড়েছে উল্লেখ করে এম এ মান্নান বলেন, দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতিশীল পর্যায়ে এসেছে। তাছাড়া মূল্যস্ফীতি কমছে। জুনের শেষে মূল্যস্ফীতি আরো কমবে। আন্তর্জাতিক বাজারে তেল ও চালের দাম কমছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। তৃণমূলে সেচ কাজে সোলার প্যানেল ব্যবহার ছড়িয়ে দেয়ার নির্দেশনাও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। একই সঙ্গে কৃষি উৎপাদনও বাড়াতে হবে। বেসরকারিভাবে সোলার প্যানেল বানালে সুবিধা দেয়া হবে বলেও মন্তব্য করেছেন শেখ হাসিনা। সোলার প্যানেল প্রকল্পটি নিয়ে আলোচনার সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেচযন্ত্রের
শতভাগ সোলারে চালানো আমাদের গোল (উদ্দেশ্য)। এটা হয়ত কালকে পারব না, পরশুদিন পারব না, তরশুতো পারব বা পরের দিনতো পারব। প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, মোট কথা হলো, আমাদের সোলারে জোর দিতে হবে, বিশেষ করে আমাদের ইরিগেশনের জন্য। দেশে শুধু সেচযন্ত্র চালানোর জন্য বছরে প্রায় ৮১ লাখ লিটার জ্বালানি তেল লাগে। সৌরশক্তি দিয়ে সব পাম্প চালানো গেলে এই বিপুল পরিমাণ তেল আর আমদানি করতে হবে না।
সোলারের জন্য আমাদের বেশি জায়গা রাখতে হয়, সে প্রসঙ্গটি নিয়েও প্রধানমন্ত্রী কথা বলেন। তিনি বলেন, সোলার প্যানেলের খুঁটির হাইট একটু বাড়িয়ে দিলে নিচে সবজি ও মাছ চাষ করা যায় কিনা- এগুলো আমাদের চেষ্টা করা উচিত। এ বিষয়ে কৃষি বিভাগকে, বিশেষ করে ড. আব্দুর রাজ্জাককে দায়িত্ব দিয়েছেন। কেউ যদি বেসরকারিভাবে সৌরবিদ্যুতে যেতে চায়, তাকে সরকারের পক্ষ থেকে সার্বিক সহায়তা দেয়ার কথাও বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, শুল্ক, অন্যান্য কর, ব্যয় ইত্যাদিতে ছাড় বিবেচনা করা হবে, প্রয়োজনে মওকুফও করা হবে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।