যাত্রী কল্যাণ সমিতি : ২৭ জুন সরকারি ছুটি ঘোষণার দাবি

আগের সংবাদ

রাজশাহীতে নজীরবিহীন নিরাপত্তা

পরের সংবাদ

প্রসূতি ও নবজাতকের মৃত্যু : গাফিলতির কথা স্বীকার সেন্ট্রাল হাসপাতালের

প্রকাশিত: জুন ২০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : অবশেষে নবজাতকসহ মা মাহবুবা রহমান আঁখির চিকিৎসায় নিজেদের গাফলতির কথা স্বীকার করেছে সেন্ট্রাল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে আঁখির মৃত্যুর ঘটনায় দুঃখ প্রকাশও করেছে হাসপাতালটি। গতকাল সোমবার দুপুরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে হাসপাতালটির সিনিয়র ডেপুটি ডিরেক্টর ডা. এটিএম নজরুল ইসলাম এ অভিযোগ স্বীকার করেন। তিনি বলেন, আঁখির চিকিৎসায় হাসপাতালের অবশ্যই গাফিলতি ছিল। গাফিলতি ছিল প্রথমত ডা. সংযুক্তা সাহার, এরপর ওটির (অপারেশন থিয়েটার) চিকিৎসকদের। কারণ সে সময় তারা সিনিয়র ডাক্তারদের ডাকেনি।
এদিকে আঁখির মৃত্যুতে পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেয়া এবং দেশের সরকারি বেসরকারি হাসপাতালের অনিয়ম বন্ধে মনিটরিং সেল গঠনসহ ৪ দফা দাবি জানিয়েছেন তার সহপাঠীরা।? গতকাল সকালে সেন্ট্রাল হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে তারা এ দাবি জানান।
ডা. এ টি এম নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, এই ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। ৭ কর্ম দিবসের মধ্যে এই তদন্ত প্রতিবেদন আসার কথা। ইতোমধ্যে ৫ দিন চলে গেছে, আর বাকি আছে ২ দিন। আশা করছি, এই সময়ের মধ্যেই তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা সম্ভব হবে।
হাসপাতালের পক্ষ থেকে কারো বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে কিনা? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমাদের তদন্ত কার্যক্রম এখনো শেষ হয়নি। তদন্ত প্রতিবেদনের রিপোর্ট এলেই আমরা একশনে যাব।
একজন চিকিৎসকের পক্ষে প্রতিদিন দেড়শ থেকে দুইশ রোগী দেখা কতটা সম্ভব? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আসলে কোয়ালিটি সার্ভিস দিতে গেলে একজন চিকিৎসকের দৈনিক এত রোগী দেখা সম্ভব নয়। কিন্তু সংযুক্তা সাহা দেখতেন, কী বলব আর এটি নিয়ে।
এতদিন হাসপাতাল প্রশাসন কী বিষয়গুলো জানত না? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ বিষয়টি আমার জানা নেই। ডাক্তারের কাছে এলে চিকিৎসা তো মূলত তারাই দেয়। তারপর কোনো একটা ঘটনা ঘটলেই সেটা আমাদের কাছে আসে। বাইরে বিষয়গুলোতে আমাদের অবগত করা হয় না। এজন্যই আমরা এই বিষয়গুলো জানতে পারিনি। এদিকে হাসপাতালের পরিচালক ডা. এম. এ. বি. সিদ্দিক স্বাক্ষরিত এক নোটিসে বলা হয়েছে, হাসপাতালের সব বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, নিজেদের প্র্যাকটিস বাড়ানোর লক্ষ্যে ফেসবুক, ইউটিউব, ইন্ট্রাগ্রাম ইত্যাদি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস পোস্ট করে রোগী বা অভিভাবকদের আকর্ষণ করা থেকে বিরত থাকার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো। ইহা সম্পূর্ণ অনৈতিক ও মেডিকেল ইথিক্সের পরিপন্থি। এ ধরনের কোনো কাজ কোনো ব্যক্তি বা তার নিয়োজিত কোনো ব্যক্তি করলে ওই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে।
ময়নাতদন্ত সম্পন্ন : এদিকে মাহবুবা রহমান আঁখি (২৫) ও তার নবজাতক সন্তানের মরদেহ ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল সোমবার দুপুর সোয়া ২টা থেকে বিকাল সোয়া ৪টা পর্যন্ত ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে মরদেহ দুটির ময়নাতদন্ত করেন ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মোখলেসুর রহমান। পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য মরদেহ থেকে বিভিন্ন অর্গান রাখা হয়েছে। সেগুলোর রিপোর্ট এলে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে। আঁখির মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মারা গেছেন তিনি।
এদিকে আঁখির চাচা শফিকুর রহমান মজুমদার জানান, আঁখি ও তার নবজাতক সন্তানের মরদেহ

নিয়ে যাওয়া হবে গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার গায়নের ডহরা গ্রামে। সেখানে আঁখির বাবা মাহবুবুর রহমান মজুমদারের কবরের পাশেই দাফন করা হবে তাদের।
এর আগে মরদেহ বুঝে নিতে সকালে মর্গে হাজির হন পরিবারের সদস্যরা। এ সময় তারা আবারো অভিযুক্ত ডা. সংযুক্তা সাহাসহ হাসপাতালটির সংশ্লিষ্টদের কঠোর শাস্তির দাবি তোলেন। পাশাপাশি হাসপাতালটির লাইসেন্স বাতিলেরও দাবি জানান।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়