মশার লার্ভার ঘনত্ব পরিমাপ ও ম্যাপিং কার্যক্রম শুরু আজ

আগের সংবাদ

ভূ-রাজনীতির নতুন ক্ষেত্র ‘ব্রিকস’ : যুক্তরাষ্ট্রের ওপর চাপ বাড়াচ্ছে বাংলাদেশ, ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কে নতুন মাত্রা

পরের সংবাদ

রেকর্ড আরো বড় করলেন মাবিয়া

প্রকাশিত: জুন ১৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বাংলাদেশ গেমসে ২০১৩ সালের থেকে মাবিয়া আক্তার সীমান্তের জাতীয় পর্যায়ে স্বর্ণ জয়ের শুরু। এক দশক সেই ধারাই অব্যাহত রয়েছে। ১৬তম জাতীয় সিনিয়র ভারোত্তোলন প্রতিযোগিতায় গতকাল ৬৪ কেজি ওজন শ্রেণিতে স্ন্যাচে ৮১ কেজি তুলে নিজেরই করা আগের রেকর্ড ভেঙেছেন মাবিয়া। অন্যদিকে জাতীয় ভারোত্তালনে মেয়েদের ৫৫ কেজি ওজন শ্রেণিতে রেকর্ড গড়ে স্বর্ণ জিতেছেন স্মৃতি আক্তার। স্ন্যাচ, ক্লিন এন্ড জার্ক এবং মোট উত্তোলন- তিন বিভাগেই রেকর্ড গড়েছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এই ভারোত্তোলক। মেয়েদের ৫৫ কেজি ওজন শ্রেণিতে স্ন্যাচে ৭২, ক্লিন এন্ড জার্কে ৯৩ মিলিয়ে মোট ১৬৫ কেজি তুলেন স্মৃতি। এবার ১৬তম জাতীয় সিনিয়র ভারোত্তোলন প্রতিযোগিতার প্রথম দিনে দিনাজপুরের ১৭ বছর বয়সি বৃষ্টি আক্তার বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর হামিশা পারভীনকে হারিয়ে স্বর্ণ জিতেছেন।
বৃষ্টি খেলেছেন বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপির হয়ে। তবে তাকে ভারোত্তোলক হিসেবে গড়ে তুলেছেন জাতীয় অ্যাথলেটিকসে চাকতি নিক্ষেপে (ডিসকাস) ৪৫টি স্বর্ণ জেতা আজহারুল ইসলাম খান। কিশোরগঞ্জে আজহারুলের নিজের নামে গড়া একাডেমিতে অনুশীলন করা এই মেয়ে জাতীয় ভারোত্তোলনে দ্বিতীয়বার অংশ নিয়েই স্বর্ণ জিতেছেন। সারা বছর ট্রেনিংয়ে থাকা অনেক অভিজ্ঞ ভারোত্তোলককে টপকে মফস্বল থেকে উঠে আসা বৃষ্টির স্বর্ণ জয় আলোড়ন সৃষ্টি করেছে ভারোত্তোলন অঙ্গনে।
জাতীয় ভারত্তোলন মানেই সাফে স্বর্ণজয়ী মাবিয়া আক্তার সীমান্তর রেকর্ড ভাঙা-গড়ার খেলা। গতকাল নিজের ইভেন্টে সেরা হয়ে মাবিয়া বলেন, আসলে আমার ইভেন্টে আমিই রেকর্ড গড়ছি আবার ভাঙছি। আমার প্রতিদ্ব›দ্বী সেভাবে উঠে আসছে না। আমি যে ওজন তুলছি তা খুব সহসা কেউ ভাঙতে পারবে বলেও মনে হচ্ছে না।
জাতীয় ভারত্তোলন প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় দিনে নারী ৬৪ কেজি ওজন শ্রেণিতে সীমান্ত স্ন্যাচে ৮১ এবং ক্লিন এন্ড জার্কে ৯৯ কেজি তুলে মোট ১৮০ কেজি স্কোর করে প্রথম হয়েছেন। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিথী রানী ১৩৬ কেজি স্কোর করে দ্বিতীয় হয়েছেন। সীমান্তের সঙ্গে ব্যবধান যোজন যোজন দূরত্বে।
গত এক দশকে জাতীয়-আন্তর্জাতিক অনেক পদকই এনেছেন সীমান্ত। এত প্রাপ্তি হওয়ায় নিজের পদক সংখ্যা সুনির্দিষ্টভাবে জানেন না দেশ সেরা এই ভারত্তোলক, আসলে আমি আমার পদক সেভাবে গুণি না। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সব জায়গাতেই সেরা হওয়ার চেষ্টা করি।
ভারত্তোলনে বয়স ও ওজনের সঙ্গে ইভেন্টও পরিবর্তন হয়। মাবিয়া গত ২০১৪ সাল থেকেই ৬৪ কেজিতে অংশগ্রহণ করছেন। একই ইভেন্ট চালিয়ে যাওয়ার কারণ সম্পর্কে বলেন, এই ওজন শ্রেণিতে আমার দীর্ঘদিন খেলা হয়ে যাচ্ছে। এটাতে আমিও সফল হচ্ছি। ফেডারেশন ও দেশের প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মাঝে মধ্যে অন্য ওজন শ্রেণিতেও খেলতে হয়। তবে সময়ের প্রয়োজনে আমার এই ইভেন্টও ছাড়তে হবে। গতকাল ১৬৫ কেজি তুলে রেকর্ড গড়া স্মৃতি ২০২১ সালে এই ওজন শ্রেণিতে রেকর্ড গড়ে সেরা হয়েছিলেন। ১৫১ কেজি তোলার পথে স্ন্যাচে ৬৮ কেজি ও ক্লিন এন্ড জার্কে উত্তোলন করেন ৮৩ কেজি।
একই বছর বাংলাদেশ গেমসে ফুলপতি ১৫১ কেজি উত্তোলন করে প্রথম হওয়ার পথে ক্লিন এন্ড জার্কে রেকর্ড ৮৪ কেজি তুলেছিলেন। এবার ৯৩ কেজি তুলে এ রেকর্ডও নিজের করে নিলেন স্মৃতি।
এ ইভেন্টে বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপির মোল্লা সাবিরা সুলতানা সব মিলিয়ে ১২৩ কেজি তুলে দ্বিতীয় এবং নড়াইলের সোলায়মান শেখ ভারোত্তোলন ক্লাবের শাম্মী সুলতানা ১১৯ কেজি তুলে হয়েছেন তৃতীয়।
মেয়েদের ৪৫ কেজি ওজন শ্রেণিতে বৃষ্টি আক্তার ১২১ কেজি উত্তোলন করে সেরা হন। আনসার ও ভিডিপির এই ভারোত্তোলন ক্লিন এন্ড জার্কে ৬৮ কেজি তুলে রেকর্ড গড়েছেন। ৪৯ কেজিতে সেনাবাহিনীর মার্জিয়া আক্তার ইকরা সব মিলিয়ে ১৩৮ কেজি উত্তোলন করে হয়েছেন প্রথম। পুরুষ বিভাগে দুই ইভেন্টের নিষ্পত্তি হয়েছে। ৫৫ কেজি ওজন শ্রেণিতে সেনাবাহিনীর আশিকুর রহমান তাজ ২০৪ কেজি তুলে প্রথম হয়েছেন। ৬১ কেজি ওজন শ্রেণিতে সেরা হয়েছেন একই দলের মোহাম্মদ আইনউদ্দিন, স্ন্যাচ ও ক্লিন এন্ড জার্ক মিলিয়ে তিনি উত্তোলন করেন ২১৬ কেজি।
বৃষ্টি আক্তার ৪৫ কেজি ওজন শ্রেণিতে স্ন্যাচে ৫৩ ও ক্লিন এন্ড জার্কে রেকর্ড ৬৮ কেজিসহ মোট ১২১ কেজি তুলে এ ইভেন্টে নতুন রানি হয়েছেন। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর হামিশা পারভীন ১১৯ কেজি তুলে পেয়েছেন রৌপ্য। বৃষ্টির স্বর্ণ পাওয়ায় দারুণ খুশি আজহারুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, ‘তৃণমূল থেকে উঠে আসা একটি মেয়ে যেভাবে স্বর্ণ জিতল, তা ভাষায় প্রকাশের মতো না। খুশিতে আমি কথাই বলতে পারছি না। বলতে পারেন আমি আনন্দে আত্মহারা।’ আজহারুল ইসলাম খান ৫৩ বছর বয়সেও অংশ নিয়ে থাকেন জাতীয় অ্যাথলেটিক চ্যাম্পিয়নশিপে। ঝুলিতে আছে ৪৫টি স্বর্ণ। তিনি এক সময় ভারোত্তোলনও খেলতেন। এ ডিসিপ্লিনেও তার আছে ৪ স্বর্ণ। তিনি যে একাডেমি তৈরি করেছেন, সেখানে অ্যাথলেটিকসের পাশাপাশি ভারোত্তোলনেও ট্রেনিং করান। ৬ জন মেয়ে নিয়ে তিনি এসেছেন জাতীয় ভারোত্তোলনে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়