মশার লার্ভার ঘনত্ব পরিমাপ ও ম্যাপিং কার্যক্রম শুরু আজ

আগের সংবাদ

ভূ-রাজনীতির নতুন ক্ষেত্র ‘ব্রিকস’ : যুক্তরাষ্ট্রের ওপর চাপ বাড়াচ্ছে বাংলাদেশ, ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কে নতুন মাত্রা

পরের সংবাদ

ভুল চিকিৎসা : নবজাতকের পর মারা গেলেন মা আঁখিও

প্রকাশিত: জুন ১৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : রাজধানীর গ্রিন রোডে সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় নবজাতক মারা যাওয়ার সাত দিন পর মারা গেলেন মা মাহবুবা রহমান আঁখি (২৫)। গতকাল রবিবার বিকাল পৌনে ৪টার দিকে ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। আঁখির মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার স্বামী ইয়াকুব আলী সুমন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আঁখি মারা গেছে। চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেছেন।
জানা যায়, অস্ত্রোপচার ছাড়া সন্তান জন্ম দিতে নিজের ইচ্ছার কথা স্বামীকে জানিয়েছিলেন আঁখি। সেজন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ঘেঁটে সেন্ট্রাল হাসপাতালের প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সংযুক্তা সাহার কথা জানতে পারেন। এরপর ওই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়েছিলেন এই দম্পতি। গর্ভে সন্তান আসার পর থেকে ওই চিকিৎসকের কাছেই তিনি চিকিৎসা নিয়েছেন। প্রসব ব্যথা উঠলে গত ৯ জুন মধ্যরাতে কুমিল্লা থেকে ঢাকার সেন্ট্রাল হাসপাতালে আঁখিকে নিয়ে আসে তার পরিবার।
ইয়াকুব আলী সুমন বলেন, সেদিন আমাদের বলা হয়েছিল ডা. সংযুক্তা সাহা হাসপাতালে আছেন। কিন্তু ওই চিকিৎসকের সহকারীরা প্রথমে স্বাভাবিকভাবে বাচ্চা প্রসবের চেষ্টা করেন। সে সময় জটিলতা তৈরি হলে অস্ত্রোপচার করা হয়। ভূমিষ্ঠ শিশুটি ওইদিনই মারা যায়। পরে সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় আঁখিকে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ল্যাবএইডে ভর্তির পরও আঁখির শারীরিক অবস্থার কোনো উন্নতি হচ্ছিল না।
এ ঘটনায় ‘অবহেলাজনিত মৃত্যুর’ অভিযোগ এনে ১৪ জুন রাতে ধানমন্ডি থানায় ৫ জনকে আসামি করে মামলা করেন স্বামী ইয়াকুব আলী সুমন। এ মামলায় সেন্ট্রাল হাসপাতালের দুই চিকিৎসক ডা. শাহজাদী মুস্তার্শিদা সুলতানা ও ডা. মুনা সাহাকে গ্রেপ্তার করে ধানমণ্ডি থানা পুলিশ। ওইদিনই তাদের কারাগারে পাঠান আদালত। তাদের আদালতে তোলা হলে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেন তারা।
এদিকে গত শুক্রবার সেন্ট্রাল হাসপাতালে অভিযান চালায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। অভিযানে হাসপাতালটির চিকিৎসা ব্যবস্থাপনায় বেশকিছু ঘাটতি দেখতে পান অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। জরুরি চিকিৎসায় পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় আইসিইউসহ প্রতিষ্ঠানটিতে সব ধরনের অস্ত্রোপচার বন্ধের নির্দেশ দেয় অধিদপ্তর। পাশাপাশি ডা. সংযুক্তা সাহাকে ওই প্রতিষ্ঠানে বিশেষজ্ঞ সেবা দিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়।
ধানমন্ডি থানা সূত্রে জানা যায়, কুমিল্লার তিতাস উপজেলা থেকে অন্তঃসত্ত্বা মাহবুবা রহমান আঁখিকে গত শুক্রবার রাজধানীতে এনে সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে তাকে যে চিকিৎসকের (ডা. সংযুক্তা সাহা) অধীনে ভর্তি করা হয়, তিনি তখন দেশের বাইরে ছিলেন। এ বিষয়ে রোগী বা স্বজনদের জানানো হয়নি। অন্য চিকিৎসকরা তার স্বাভাবিক প্রসব করাতে ব্যর্থ হন। পরে জটিলতা দেখা দিলে অস্ত্রোপচার করা হয়। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে জন্ম নেয়া শিশুটি ওইদিনই মারা যায়। আর আঁখির অবস্থা সংকটাপন্ন হয়ে পড়ে। পরে ল্যাবএইড হাসপাতালে নেয়া হয়। গতকাল রবিবার তার মৃত্যু হয়। জানা গেছে, ময়নাতদন্তের জন্য নবজাতক ও আঁখির মরদেহ ঢাকা মেডিকেলের মর্গে রাখা হয়েছে।
আঁখির চাচাতো ভাই শামীম সংবাদমাধ্যমকে বলেন, আজই (গতকাল) আঁখির মরদেহ কুমিল্লায় নিয়ে যাওয়া হবে। লাকসামে আমাদের বাড়িতে দাফন করা হবে। আঁখিকে আট মাসের রেখে আমার চাচা মারা গিয়েছিলেন। চাচি আর বিয়ে করেননি। আঁখি আমাদের সবার খুব আদরের ছিল।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়