প্রকাশিত: জুন ১৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
কাগজ প্রতিবেদক : বহুল আলোচিত জামালপুরে সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিমকে নৃশংসভাবে হত্যাকাণ্ডের ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। অন্যরা হলেন- মো. মনিরুজ্জামান মনির ওরফে মনিরুল (৩৫), জাকিরুল ইসলাম (৩১) ও মো. রেজাউল করিম (২৬)। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় বগুড়ার দুপচাঁচিয়া এলাকা থেকে রেজাউলকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে একইদিন সকালে চেয়ারম্যান বাবুসহ বাকি দুজনকে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাব জানিয়েছে, ফোন বন্ধ রেখে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে দূর সম্পর্কের আত্মীয়ের বাসায় আত্মগোপনে যান বাবু। তার ধারণা ছিল সেখান থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কেউ তাকে ধরতে পারবে না। তবে দেশত্যাগের পরিকল্পনা ছিল কিনা তা জানা যায়নি। এর আগে জামালপুর পুলিশ এ ঘটনায় ৯ জনকে গ্রেপ্তার করে। এ নিয়ে মোট ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
বহুল আলোচিত জামালপুরে সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিমকে নৃশংসভাবে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মূল পরিকল্পনাকারী চেয়ারম্যান বাবুসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর কারওয়ান বাজারের র্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে র্যাব লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক ও মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, গত ১৪ জুনের হামলায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাংবাদিক নাদিম পরেরদিন মারা গেলে তার স্ত্রী মামলা করেন। মামলা হওয়ার পর চাঞ্চল্য সৃষ্টি করা এ ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে র্যাব গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ায়। এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব অভিযান চালিয়ে মূল অভিযুক্তসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তারে সমর্থ হয়।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ঘটনার পর থেকে চেয়ারম্যান বাবু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গ্রেপ্তার এড়াতে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে তার এক দূরসম্পর্কের আত্মীয়ের বাড়িতে আত্মগোপনে ছিলেন। আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় র্যাব তাকে গ্রেপ্তার করে। এর আগেও তার বিরুদ্ধে জামালপুরের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। এছাড়া গ্রেপ্তার রেজাউল, মনির ও জাকির মাহমুদুল হাসান বাবুর সন্ত্রাসী গ্রুপের অন্যতম সহযোগী। ঘটনার দিন রেজাউল দৌড়ে গিয়ে নাদিমকে ধাক্কা দিয়ে মোটরসাইকেল থেকে ফেলে দেয়। পরে ঘটনাস্থলেই বাবুর নির্দেশে তারা নাদিমকে বেদম প্রহার করতে থাকে। একপর্যায়ে পাশের একটি অন্ধকার গলিতে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যায় ও এলোপাতাড়ি আঘাত করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। তাদের বিরুদ্ধেও জামালপুরের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।
বাবুর ছেলে রিফাতের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে কমান্ডার মঈন বলেন, সাংবাদিক নাদিমকে হামলার সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন প্রধান অভিযুক্ত বাবুর ছেলে ফাহিম ফয়সাল রিফাত। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে চেয়ারম্যান বাবু জানিয়েছেন, ঘটনার সময় ছেলে রিফাতও ছিল। তবে তাকে গ্রেপ্তারের আগে এ ব্যাপারে নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না। তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
ফেসবুক লাইভে নিজেদের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন। এরপরও তাকে মরতে হলো- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে র্যাব মুখপাত্র বলেন, ভুক্তভোগী সাংবাদিক ফেসবুকে লাইভ করেছেন, নিরাপত্তা চেয়েছেন। বিষয়টি স্থানীয় পুলিশ ভালো বলতে পারবে। তবে তিনি আমাদের কাছে কোনো অভিযোগ করেননি। তিনি যদি অভিযোগ করতেন তাহলে আমাদের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার সুযোগ ছিল।
হামলায় ঠিক কতজন জড়িত ছিল? জানতে চাইলে র্যাব গণমাধ্যম শাখার প্রধান বলেন, মামলার এজহারে ২২ জনের নাম উল্লেখ রয়েছে। তবে উদ্ধার করা সিসিটিভি ফুটেজে আমরা দেখতে পেয়েছি ১০-১২ জনকে। সব আসামিকে গ্রেপ্তারের পর হয়তো ব্যাপারটি স্পষ্ট হবে। মামলার তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তার তদন্তে বিস্তারিত উঠে আসবে।
কমান্ডার মঈন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে মাদক ও সন্ত্রাসমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এ কাজ করতে গিয়ে আমরাও মাঝে মাঝে প্রতিহিংসার শিকার হচ্ছি। আমাদের সহযোগী হিসেবে আপনারাও
(সাংবাদিকরা) হচ্ছেন। তবে এমন কিন্তু হয়নি যে অপরাধ করলে ছাড় দেয়া হচ্ছে। অপরাধী যে-ই হোক কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।
শেয়ার করুন
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।