পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় : সবাই সার্বভৌমত্বকে সম্মান দেখাবে- এই প্রত্যাশা বাংলাদেশের

আগের সংবাদ

মেয়র প্রার্থীদের প্রতিশ্রæতির ফুলঝুরি : ‘পরিকল্পিত সিলেটে’ প্রাধান্য

পরের সংবাদ

বড় ব্যবধানে জয়ের অপেক্ষায় টাইগাররা

প্রকাশিত: জুন ১৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : হোম অব ক্রিকেট মিরপুরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টের চতুর্থ দিনে আজ বড় ব্যবধানে জয়ের সুবাস পাচ্ছে টাইগাররা। তৃতীয় দিনশেষে গতকাল আফগানদের প্রতি ৬৬২ রানের পাহাড়সম লক্ষ্য ছুড়ে দিয়েছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে প্রতিপক্ষকে দেয়া এটি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের টার্গেট। এর আগে ২০২১ সালে হারারে টেস্টে জিম্বাবুয়েকে ৪৭৭ রানের টার্গেট দিয়েছিল বাংলাদেশ। গতকাল বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জের জবাব দিতে নেমে ৪৫ রানে ২ উইকেট হারিয়ে তৃতীয় দিন শেষ করে সফরকারীরা। ম্যাচের অবশিষ্ট দুই দিনে জিততে আফগানদের প্রয়োজন ৬১৭ রান

আর বাংলাদেশের ৮ উইকেট।
টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ইনিংসে ৩৮২ রান তোলে টাইগাররা। এই রান তাড়া করতে নেমে মাত্র ১৪৬ রানে অলআউট হয় আফগানিস্তান। এরপর দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে গতকাল ৪ উইকেট হারিয়ে ৪২৫ রানে ইনিংস ঘোষণা করে হাথুরুসিংহের শিষ্যরা। তৃতীয় দিনে ব্যাট করতে নেমে দারুণ শুরু করেন আগের দিনে সমান ৫৪ রানে অপরাজিত থাকা দুই ব্যাটার নাজমুল হোসেন শান্ত ও জাকির হাসান। তৃতীয় দিন নিজের ইনিংস বড় করতে পারেননি জাকির। ব্যক্তিগত ৭১ রানে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন তিনি। জাকির ফেরার পর ক্রিজে শান্তর সঙ্গী হন সাবেক টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল হক। আফগান বোলারদের বিপক্ষে ওয়ানডে স্টাইলে ব্যাট করতে থাকেন তারা। এতে প্রথম সেশনেই টেস্ট ক্যারিয়ারের চতুর্থ সেঞ্চুরির দেখা পান শান্ত। ১১৫ বলে ১৪টি চারে সেঞ্চুরি করেন তিনি। প্রথম ইনিংসে শান্ত করেছিলেন ১৪৬ রান। বাংলাদেশের দ্বিতীয় ব্যাটার হিসেবে এক টেস্টের দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি করার কীর্তি গড়েন তিনি। এর আগে ২০১৮ সালে চট্টগ্রামে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্টের দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি করেছিলেন মুমিনুল। গতকাল তৃতীয় দিনশেষে সংবাদ সম্মেলনে মুমিনুল হক বলেন, ‘আপনারা আমার শেষ ৪ ইনিংস দেখেন, রান অত খারাপ নয়। আপনারা হয়তো প্রতি ম্যাচে ২০০ রানের আশা করেন। যে কারণে আপনাদের কাছে হয়তো মনে হয় রানে নেই। আমার আক্ষেপ ছিল আমি লম্বা ইনিংস ব্যাট করতে পারিনি। আমার যেটা অভ্যাস যে, ২-৩-৪ সেশন ব্যাটিং করা। ওটা নিয়ে একটু আক্ষেপ ছিল। আলহামদুলিল্লাহ ওটা করতে পেরেছি, দলকে সাহায্য করেছি। এটাই সন্তুষ্টি। আরেকটি বিষয় হলো অধিনায়কত্ব না থাকলে একটা সুবিধা থাকে। এতকিছু চিন্তা করতে হয় না। শুধু ব্যাটিংয়ে মনোযোগ দিতে পারি।’
নাজমুল হোসেন শান্ত গতকাল আউট হওয়ার আগে ১৫১ বলে ১৫টি চারের সাহায্যে ১২৪ রান করেন। এরপর উইকেটে এসে ইনিংস লম্বা করতে পারেননি উইকেটরক্ষক ব্যাটার মুশফিকুর রহিম। মাত্র ৮ রানে সাজঘরে ফেরেন তিনি। চার বলের ব্যবধানে শান্ত-মুশফিক বিদায় নিলেও মুমিনুলকে নিয়ে আগ্রাসী ব্যাটিং করেন প্রথমবারের মতো অধিনায়কের দায়িত্ব পাওয়া লিটন দাস। ৪ উইকেটে ৩৭৮ রান তুলে চা-বিরতিতে যায় স্বাগতিকরা। বিরতি পর ৭৩তম ওভারের দ্বিতীয় বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ২৬ ইনিংস পর টেস্ট ক্যারিয়ারের ১২তম সেঞ্চুরি তুলে নেন মুুুমিনুল। ২০২১ সালের এপ্রিলে সর্বশেষ টেস্ট সেঞ্চুরি করেছিলেন মুমিনুল। তার আগে টেস্ট ক্যারিয়ারের ১৬তম হাফসেঞ্চুরি করেন লিটন। শেষ পর্যন্ত ৮০ ওভারে ৪ উইকেটে ৪২৫ রানে ইনিংস ঘোষণা করে বাংলাদেশ। এই নিয়ে টেস্টে ১৭তম বার ইনিংস ঘোষণা দিল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ইনিংসে ১১তম বার। এর আগে ১০ বারের মধ্যে ৬ বার জয়ের বিপরীতে একবার হেরেছে। আর ৩ বার হয়েছে ড্র। ১২টি চার ও ১ ছক্কায় ১৪৫ বলে ১২১ রানে অপরাজিত থাকেন মুমিনুল। ৮টি চারে ৮১ বলে ৬৬ রানে অপরাজিত থাকেন লিটন। আফগানিস্তানের হয়ে ২টি উইকেট নেন জহির খান। আর একটি উইকেটের দেখা পান আমির হামজা।
বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে চতুর্থ ইনিংসের প্রথম বলেই উইকেট হারায় আফগানরা। ইবরাহিম জাদরানকে লেগ বিফোর আউট করেন বাঁহাতি পেসার শরিফুল ইসলাম। পরের ওভারে বাংলাদেশকে দ্বিতীয় উইকেট এনে দেন পেসার তাসকিন আহমেদ। ৫ রান করে তাসকিনের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন ওপেনার আব্দুল মালিক। ৭ রানে ২ উইকেট পতনের ধাক্কা সামাল দেয়ার চেষ্টা করেন রহমত শাহ ও অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শহীদি। ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে তাসকিনের করা তৃতীয় ডেলিভারিতে ঘটে অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা। আফগানদের অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শহীদি ভেবেছিলেন বলটি বাউন্সার হবে। যে কারণে বল আসার আগেই বসে পড়েন তিনি। কিন্তু সেই ডেলিভারি খুব বেশি উপরে ওঠেনি। বল সরাসরি গিয়ে আঘাত করে শহীদির হেলমেটে। যে কারণে রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে শহীদি উঠে যান ব্যক্তিগত ১৩ রান করে। পরবর্তীতে নতুন করে ক্রিজে আসেন নাসির জামাল। ১১তম ওভারের পর আলোকস্বল্পতায় খেলা বন্ধ হয়ে গেলে সেখানেই তৃতীয় দিনের খেলা সমাপ্ত হয়। রহমত ১০ ও জামাল ৫ রানে অপরাজিত আছেন। বাংলাদেশের তাসকিন ও শরিফুল ১টি করে উইকেট নেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়