পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় : সবাই সার্বভৌমত্বকে সম্মান দেখাবে- এই প্রত্যাশা বাংলাদেশের

আগের সংবাদ

মেয়র প্রার্থীদের প্রতিশ্রæতির ফুলঝুরি : ‘পরিকল্পিত সিলেটে’ প্রাধান্য

পরের সংবাদ

নির্বাচন থেকে পিছু হটার অজুহাত খুঁজছে বিএনপি : জেনেভায় নাগরিক সংবর্ধনায় প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: জুন ১৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : নিজেদের অপকর্মের জন্য ভোট পাবে না জেনে নির্বাচন প্রক্রিয়া থেকে এখন পিছু হটার বাহানা খুঁজছে বিএনপি- এমন মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, এমনিতে বিএনপি চোরের দল, ভোট ডাকাতের দল, ভোট ডাকাতি ছাড়া তো তাদের পক্ষে ক্ষমতায় আসা সম্ভব না। আর যারা দেশের সম্পদ বিক্রির মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল জনগণ আর তাদের চায় না, সেজন্য তারা ভোটও পায় না। কারণ তারা জানে যে ভোট পাবে না। সেজন্য নানাভাবে ছুতা খোঁজে, কীভাবে নির্বাচন থেকে পিছটান মারবে, সেই তালেই তারা আছে।
বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় জেনেভার হিল্টন হোটেলে সুইজারল্যান্ড আওয়ামী লীগ আয়োজিত নাগরিক সংবর্ধনায় তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় মঞ্চে বসা ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। অনুষ্ঠানে সুইজারল্যান্ডসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বসবাসরত বাংলাদেশিসহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, সময়মতো নির্বাচন হবে, জনগণ ভোট দেবে, জনগণ ভোটের মালিক। তারা যাকে খুশি তাকে ভোট দেবে। যে দল জনগণের ভোট পাবে সেই দল সরকার গঠন করবে। এটাই গণতান্ত্রিক ধারা, আর বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকবে।
‘বিএনপি সরকার ফেলে দেবে, সরকার এতটা দুর্বল নয়’- মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১০ ডিসেম্বর তোলপাড়, একেবারে সরকারকে ফেলেই দেবে। এত দুর্বল অবস্থায় তো আমরা আসি নাই যে আমাদের ফেলে দেবে। কারণ আমাদের তো জনগণ আছে। আমাদের শক্তি হচ্ছে জনগণ। আমরা জনগণের শক্তিতেই বিশ্বাসী। বিএনপির নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবির বিরোধিতা করে তিনি বলেন, সম্পূর্ণ স্বাধীন নির্বাচন কমিশন আমরা গঠন করে দিয়েছি। তারপরও বিএনপি এখন দাবি করে কী- তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায়।
বিএনপি শিশু বা পাগল হয়ে গেছে কিনা- এমন প্রশ্ন তুলে শেখ হাসিনা বলেন, আপনাদের মনে আছে খালেদা জিয়া একবার বলেছিল, পাগল আর শিশু ছাড়া নির্দলীয় নিরপেক্ষ হয় না। তো এখন ওরা কি পাগল হয়ে গেল, নাকি শিশু হয়ে গেল- সেটা আমি জানতে চাই। শিশু পাগল, এটা ভালো নাম। তারা এখন শিশু পাগল হয়ে গেছে।
নিজেদের দুর্বলতা ঢাকতে বিএনপি অপপ্রচার চালাচ্ছে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা দিনে-দুপুরে মানুষ খুন করে, যারা লুটপাট করেছে, দুর্নীতি করেছে, আজকে দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত আসামি। সেই আসামি যে দলের নেতা সেই দল নির্বাচনে যাবে কী নিয়ে সেটাই তো কথা। নিজেদের দুর্বলতা ঢাকতে এখন নানা ধরনের অপপ্রচার, চাতুর্য করে বেড়াচ্ছে।’
গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ত্যাগের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে যে গণতান্ত্রিক ধারাটা প্রতিষ্ঠা হয়েছে বাংলাদেশে- এটা আমাদের আন্দোলনেরই ফসল। এর জন্য আমার পার্টির নেতাকর্মীরা জীবন পর্যন্ত দিয়েছে। আর গ্রেনেড হামলা থেকে কোনোমতে বেঁচে গেছি।
গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতার সুফল তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে বলেই আজকে বিশ্বে বাংলাদেশ একটা মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছে। ওই চোরাদের ক্ষমতায় এনে, স্বাধীনতাবিরোধীদের ক্ষমতায় এনে, খুনিদের এনে আমরা বাংলাদেশের মাথা অন্যের কাছে নত হতে দেব না।
বাংলাদেশের যে কোনো ক্রাইসিসে প্রবাসীদের ভূমিকার প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স দেশের অর্থনীতিতে বিরাট ভূমিকা রাখে। হুন্ডির মাধ্যমে দেশে রেমিট্যান্স না পাঠিয়ে বৈধ পথে ব্যাংকিং ব্যবস্থার মাধ্যমে টাকা পাঠাতে প্রবাসীদের আহ্বান জানান তিনি। বিদেশ যেতে আগ্রহীদের দালালের

বিষয়ে সচেতন ও সতর্ক থাকার পরামর্শও দেন সরকারপ্রধান। একই সঙ্গে রেজিস্ট্রেশন করে বৈধ উপায়ে বিদেশে যাওয়ার আহ্বানও জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ডব্লিউটিওর মহাপরিচালকের সাক্ষাৎ : এদিকে বৃহস্পতিবার বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) মহাপরিচালক ড. ওকনজো ইওয়েলা সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার আবাসস্থলে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় ডব্লিউটিওর মহাপরিচালক মৎস্য খাতে ভর্তুকি কমানোর পরামর্শ দেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের ওই সাক্ষাতের ফলাফল সম্পর্কে অবহিত করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ডব্লিউটিওর মহাপরিচালক বলেছেন, তারা বাংলাদেশের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করবে। যদিও বাংলাদেশ মৎস্য চাষে বড় ধরনের ভর্তুকি দেয় না। ডব্লিউটিও ডিজি ডব্লিউটিওর বিরোধ নিষ্পত্তি সংস্থার কথা উল্লেখ করেন। এটি কতিপয় বড় দেশের ক্ষেত্রে কয়েক বছর ধরে নিষ্ক্রিয় রয়েছে। ডিজি আগামী সেপ্টেম্বরে নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠেয় জি-২০ সম্মেলনে অংশ নেয়ার এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে কথা বলার সময় এই বিষয় তুলে ধরতে প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ জানান যাতে এই বিরোধ নিষ্পত্তি সংস্থা সক্রিয় হয়। এটি ডব্লিউটিওর মূল শক্তি। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে আবুধাবিতে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) মন্ত্রী পর্যায়ের ১৩তম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওই বৈঠকে বাংলাদেশের উন্নীতকরণ নিশ্চিত করা হবে। ডব্লিউটিও ডিজি বাংলাদেশকে তাদের রপ্তানির ডালা বৈচিত্র্যময় করতে বলেছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি চান যে, বাংলাদেশ তৈরি পোশাক রপ্তানির ওপর নির্ভরতা হ্রাসে ওষুধ এবং আইটি খাতের ওপর বেশি জোর দিক।
গভীর সমুদ্রে মৎস্য আহরণের বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এ খাতে বাংলাদেশের সক্ষমতার অভাব রয়েছে। সে কারণে তিনি জাপান, থাইল্যান্ড ও মালদ্বীপ থেকে বিশেষজ্ঞদের অভিজ্ঞতা নেয়ার ওপর জোর দেন। প্রধানমন্ত্রী জানান, এ বিষয়ে তিনি ইতোমধ্যে মালদ্বীপ ও জাপানের সঙ্গে কথা বলেছেন।
এর আগে একই স্থানে কাতারের শ্রমমন্ত্রী ড. আলী বিন সামিক আল মারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তিনি বলেন, তার দেশে প্রায় ৩ লাখ ৭০ হাজার বাংলাদেশি জনশক্তি রয়েছে। এসব শ্রমিকের কর্মক্ষমতা নিয়ে তারা সন্তুষ্ট। তারা বাংলাদেশ থেকে আরো জনবল নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এজন্য একটি চুক্তিও সই করেছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়