সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে মামলা করে বিপাকে ভুক্তভোগীরা

আগের সংবাদ

উন্নয়ন ও প্রত্যাশায় ফারাক অনেক : ক্লিন সিটি খ্যাত রাজশাহীর মানুষ অনেক সেবা পান না

পরের সংবাদ

দুর্বৃত্তের হামলায় আহত সাংবাদিক মারা গেছেন : গ্রেপ্তার ৪

প্রকাশিত: জুন ১৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

বকশীগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি : জামালপুরের বকশীগঞ্জে দুর্বৃত্তের হামলায় গুরুতর আহত অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলানিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমের সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিম মারা গেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। নাদিম উপজেলার নিলাখিয়া ইউনিয়নের গোমের চর গ্রামের আবদুল করিমের ছেলে।
এর আগে গত বুধবার রাত ১০টার দিকে মোটরসাইকেলে করে বাড়ি ফিরছিলেন সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিম ও তার সহকর্মী আল মুজাহিদ বাবু। পথে বকশীগঞ্জ পাথাটিয়ায় পৌঁছালে সামনে থেকে অতর্কিত আঘাত করে চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে তাকে ফেলে দেয়া হয়। এরপর দেশীয় অস্ত্রধারী ১০-১২ জন দুর্বৃত্ত তাকে সড়ক থেকে মারধর করতে করতে টেনেহিঁচড়ে অন্ধকার গলিতে নিয়ে যায় এবং তার মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি আঘাত করে। সে সময় সহকর্মী মুজাহিদ তাদের আটকাতে গেলে তাকেও মারধর করে দুর্বৃত্তরা। পরে মুমূর্ষু অবস্থায় সহকর্মী মুজাহিদ ও স্থানীয়রা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু অবস্থা খারাপ হওয়ায় সেখানকার চিকিৎসক তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার তার মৃত্যু হয়।
বুধবার রাত ১০টার দিকে পাথাটিয়ায় ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের বুথের সামনে ঘটে যাওয়া ওই নৃশংস হামলার বর্ণনা দেন সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিমের সহকর্মী আল মুজাহিদ বাবু। তিনি বলেন, সাধুরপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুর অপকর্ম নিয়ে নাদিমসহ আমরা কয়েকজন নিউজ করেছিলাম, তারপর থেকেই তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে আছেন আমাদের ওপর। পরে আমাদের নামে ডিজিটাল আইনে মামলাও করেন তিনি। সেই মামলা বুধবার ময়মনসিংহের সাইবার ট্রাইব্যুনাল খারিজ করে দিয়েছেন। এ নিয়ে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেয়া হয়েছিল। এর দুই-তিন ঘণ্টা পর রাতে অফিস থেকে বাড়ি ফেরার পথে নাদিমের ওপর হামলা হয়।
তিনি আরো বলেন, নাদিমকে চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়া হয়। তারপর তাকে মারতে মারতে পাশের একটি অন্ধকার গলিতে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে গিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করেন চেয়ারম্যান মাহমুদ আলম বাবুর লোকজন। ঘটনার সময় ওই গলিতে অন্ধকারে আড়ালে দাঁড়িয়েছিলেন চেয়ারম্যান মাহমুদ আলম বাবু। সে সময় তার ছেলে ফয়সাল, রিফাত, রেজাউল, মনির, সাইদসহ আরো কয়েকজন ছিলেন। মারধরের সময় আমি আটকাতে গেলে আমাকেও তারা মারধর করেন। পরে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে চেয়ারম্যানের সন্ত্রাসী বাহিনী চলে যায়। পরে নাদিমকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হয়।
এদিকে এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ বিষয়ে জামালপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) নাছির উদ্দিন বলেন, সিসিটিভি ফুটেজ দেখে হামলাকারীদের শনাক্ত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে হামলায় জড়িত চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশের পাঁচটি দল মাঠে কাজ করছে। নিহত সাংবাদিকের স্ত্রী মনিরা বেগমের অভিযোগ, সাধুরপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুর লোকজন তার ওপর হামলা করে থাকতে পারেন। কয়েকদিন ধরে নিউজ নিয়ে তার সঙ্গে নাদিমের দ্ব›দ্ব চলছিল। এ ঘটনায় বকশীগঞ্জে কর্মরত সাংবাদিকরা শহীদ মিনারে বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে মিছিল নিয়ে বাসস্ট্যান্ড মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার দাবি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক শাহিন আল আমিন, জিএম বাবু, মেলান্দহের সাংবাদিক শাহজামাল প্রমুখ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়