সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে মামলা করে বিপাকে ভুক্তভোগীরা

আগের সংবাদ

উন্নয়ন ও প্রত্যাশায় ফারাক অনেক : ক্লিন সিটি খ্যাত রাজশাহীর মানুষ অনেক সেবা পান না

পরের সংবাদ

কুরিয়ার-পার্সেলে মাদক ছড়াচ্ছে

প্রকাশিত: জুন ১৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

দেশে এখন মাদকের সয়লাব। পুরুষের পাশাপাশি অনেক নারীও এই মাদক ব্যবসায় জড়িত হয়ে পড়েছে। এর মূল কারণ দারিদ্র্য। দেশে যে হারে দারিদ্র্য বাড়ছে সেখানেই মাদকের রমরমা ব্যবসাও চাঙ্গা। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মধ্যেও সততার অনেক অভাব। দেশে এখন দেশি-বিদেশি কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে পার্সেলে মাদক আসা-যাওয়া করছে। বিমানবন্দর হয়ে বিদেশ থেকে আসা পার্সেলে বিপুল পরিমাণ ভয়ানক মাদক দেশে ঢুকছে, যা দেখার কেউ নেই। সম্প্রতি শিক্ষামন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিবের সরকারি বাসা থেকে ভয়ংকর মাদক উদ্ধারের পর তিনি এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন। সরকারি লোকজন বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি অংশ ইতোমধ্যে মাদক চালান ও বহনে বেশ তৎপর। দেশের বিভিন্ন সীমান্ত বা বর্ডার এলাকা, আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, রেলপথ এবং বাসে নিরাপদে মাদকের অনুপ্রবেশ রোধ করা দুরূহ হয়ে পড়েছে। এ ব্যাপারে সরকার আন্তরিক হলেও রক্ষকই তো ভক্ষক। এই সেদিন বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ভেতরে একটু রেস্টুরেন্টে খেতে গিয়ে রেস্টুরেন্টের স্মোকিং জোনে তরুণদের সঙ্গে তরুণীদের সিগারেট ও মাদক গ্রহণের মহোৎসব দেখে আমি নিজেই হতবাক। বিশ্ববিদ্যালয়ের সুন্দর সুন্দর শিক্ষার্থীরা যেভাবে মাদকে আসক্ত হয়ে পড়েছে তা ভবিষ্যতের জন্য অশনিসংকেত। উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় মাদক চোরাকারবারিরা ইন্টারনেটে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করে ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে মাদকের ব্যবসা করছে। লোকাল মাদক ব্যবসায়ীরা কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে বিদেশ থেকে ডিএমটি, এলএসডি, ডিওবি, কুশ, স্কোপলোমিন, মলি ফেন্টানিলসহ আরো কিছু অপ্রচলিত মাদক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, কাস্টমস বা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের লোকজনদের চোখ ফাঁকি দিয়ে অহরহ দেশে আনছে, যা দেখার কেউ নেই। ভয়ংকর এসব মাদক-সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অচেনা ও অজানা। আমাদের দেশের বিমানবন্দরগুলোর কাছেও এ ধরনের মাদক অপরিচিত এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা একেবারে অনবিজ্ঞ। যার কারণে শিশুখাদ্য, খেলনা, ওষুধসামগ্রী, প্রসাধনী ও কেমিক্যালসামগ্রী ইত্যাদির নামে পার্সেলে কুরিয়ার সার্ভিসে আসা এসব মালামাল বা পদার্থ যে ভয়ানক মাদক তা সহজে বুঝে ওঠা দুষ্কর বা অসম্ভব। মাদক ব্যবসায় অনেক বেকার তরুণ ও তরুণীও নেমে পড়েছে। অনেক সময় ফেসবুক ও ইন্টারনেটে কায়দা করে চমক বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে মানুষকে মাদক গ্রহণের জন্য আকর্ষণ করে থাকে। দেশে অভিনব কায়দায় মাদক বহন করা হচ্ছে, যা সহজে ধরা পড়া সম্ভব হয়ে উঠে না। সতর্ক করার পরও দেশি কুরিয়ার সার্ভিস বা অনলাইন ডেলিভারির মাধ্যমে মাদকের রমরমা ব্যবসায় নজরদারি আরো কঠোরভাবে বাড়াতে না পারলে দেশের তরুণ-তরুণীরা ধ্বংসের পথে চলে যাবে, তখন কারো করার কিছু থাকবে না। এখনই যদি মাদক প্রতিরোধে সরকার এগিয়ে না আসে তাহলে দেশের জন্য অনেক ক্ষতি হয়ে পড়বে। তবে নিরাপদে মাদক পরিবহনে যারা জড়িত তাদের অনেকেই সরকারি লোকজন। এদের খুঁটির জোর শক্ত বলেই শিক্ষামন্ত্রীর এপিএস এখনো শক্ত। এরপর মাদক নিরাময় কেন্দ্রগুলোর দিকে তাকান। একই অবস্থা সেখানেও সেবার নামে মাদকের ব্যবসা চলছে। চিকিৎসার নামে মাদক নিরাময় কেন্দ্রগুলোর বেহাল অবস্থা। আশাকরি সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দেশ হতে ভয়াবহ মাদকের অস্থিরতা দূর করতে জোর তৎপরতা এবং সচেতনতা গড়ে তুলতে প্রচেষ্টা চালাবেন তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
মাহবুবউদ্দিন চৌধুরী : গণমাধ্যমকর্মী
১৭, ফরিদাবাদ-গেন্ডারিয়া, ঢাকা।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়