প্রশিক্ষণার্থী চিকিৎসকদের আন্দোলন দুদিন স্থগিত : প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাওয়ার আশ্বাস বিএসএমএমইউ উপাচার্যের

আগের সংবাদ

আনন্দে পাঠ উৎসবে মূল্যায়ন : ষষ্ঠ ও সপ্তমে চলছে ‘ষান্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন উৎসব’, ঈদুল আজহার পর মূল্যায়নের বিশ্লেষণ

পরের সংবাদ

বাংলাদেশ-আফগানিস্তান টেস্ট : বড় সংগ্রহের পথে টাইগাররা

প্রকাশিত: জুন ১৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : মিরপুরের শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে গতকাল সফররত আফগানিস্তানের বিপক্ষে একমাত্র টেস্ট ম্যাচের প্রথম দিনশেষে টাইগারদের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ৩৬২ রান। মিরপুরের মাঠে সাদা পোশাকে প্রথম দিনে এটিই সর্বোচ্চ দলীয় রেকর্ড। এই রেকর্ড গড়ার পথে ১১৮ বলে সেঞ্চুরি করেন টপ অর্ডার ব্যাটার নাজমুল হোসেন শান্ত। শেষ পর্যন্ত ১৭৫ বলে ১৪৬ রানের ইনিংস খেলে সাজঘরে ফেরেন তিনি। আর শেষ দিকে মুশফিকুর রহিমের ৬৯ বলে অপরাজিত ৪১ ও মেহেদী হাসান মিরাজের ৬৬ বলে অপরাজিত ৪৩ রানের সুবাদে বড় সংগ্রহের পথেই রয়েছে টাইগাররা।
টস জিতে টাইগারদের ব্যাটিংয়ে পাঠায় আফগানরা। সবুজ উইকেটে তারা প্রথমেই সফলতা খুঁজে পায়। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলেই মাত্র ১ রান করা টাইগার ওপেনার জাকির হাসানকে সাজঘরে ফেরান নিজাত মাসুদ। এতেই রেকর্ড বইয়ে নাম লেখান মাসুদ। বিশ্বের ২২তম বোলার হিসেবে টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম বলেই উইকেট শিকার করেন ২৪ বছর বয়সি এই পেসার। তার অফ স্টাম্পের বাইরের বলে খোঁচা দেন জাকির। বল উইকেটরক্ষকের হাতে জমা পড়লেও তাতে সাড়া দেননি নন-স্ট্র্রাইকের আম্পায়ার অস্ট্রেলিয়ার পল রাইফেল। এতে রিভিউ নেয় আফগানিস্তান। রিভিউতে জাকিরকে আউট দেন থার্ড আম্পায়ার দক্ষিণ আফ্রিকার আড্রিয়ান হোল্ডস্টক। তবে শুরুর এই ধাক্কা সামলে নিয়ে আরেক ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়কে সঙ্গে নিয়ে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে বড় সংগ্রহের পথে চলতে থাকেন ওয়ানডাউনে নামা নাজমুল হোসেন শান্ত। ওয়ানডে

স্টাইলে ব্যাট করে মাত্র ৫৮ বলেই ফিফটি তুলে নেন তিনি। দাপুটে ব্যাটিংয়ে আর কোনো উইকেট না হারিয়ে ১১৬ রান তুলে লাঞ্চ বিরতিতে যায় বাংলাদেশ। লাঞ্চ বিরতি শেষে ধীরগতিতে ব্যাট করে ১০২ বলে ফিফটির দেখা পান জয়। এর কিছুক্ষণ পরেই মাত্র ১১৮ বলে টেস্ট ক্যারিয়ারে নিজের তৃতীয় সেঞ্চুরির দেখা পান শান্ত- যা মিরপুরে কোনো বাংলাদেশি ব্যাটারের দ্বিতীয় দ্রুততম টেস্ট সেঞ্চুরি। শান্তকে সঙ্গ দেয়া জয় প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন ১৩৭ বলে ৭৬ রান করে। ইনিংসের ৪৫তম ওভারে রহমত শাহর অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বল তাড়া করতে গিয়ে স্লিপে ধরা পড়েন। তার বিদায়ে ভাঙে ২১২ রানের জুটি- যা দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান। এর আগে ইমরুল কায়েস ও শামসুর রহমান মিলে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দ্বিতীয় উইকেটে ২৩২ রানের জুটি গড়েছিলেন। জয় সাজঘরে ফেরার পর দ্রুত আউট হন সাবেক টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল হক। পেসার নিজাত মাসুদের দ্বিতীয় শিকার হন তিনি। তার ব্যাট থেকে আসে ২৫ বলে ১৫ রান। এই অভিজ্ঞ ব্যাটারকে হারিয়ে দল যখন কিছুটা বিপাকে তখনই প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন শান্ত। সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে আরো বড় সংগ্রহের পথে হাঁটলেও দলীয় ৫৮তম ওভারের শেষ বলে আমির হামজাকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে কাউ-কর্নারে ধরা পড়েন তিনি। সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ১৭৫ বলে ১৪৬ রান। ম্যাচ শেষে শান্ত বলেন, ‘আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আমি যতটুকু খেলেছি, কাউকেই দুর্বল মনে হয়নি। প্রত্যেক দলের সঙ্গেই কষ্ট করে রান করতে হয়েছে। আর ওরাও তো পরিকল্পনা করেই বল করেছে। আমি যে আউটটা হয়েছি, অবশ্যই আমার ভুল ছিল। কিন্তু সে তো পরিকল্পনা করেই বল করেছে। কোনো দলের বিপক্ষেই সহজভাবে রান করা যায় বলে আমার মনে হয় না। আফগানরা চেষ্টা করেছে ভালো জায়গায় বল করতে। এই গরমে যেভাবে বল করেছে, আমি মনে করি ভালো বোলিংই করেছে। স্পিনাররাও বেশ কিছু ওভার ভালো বোলিং করেছে। ওদের সামলানোর পুরো কৃতিত্বই আমাদের ব্যাটসম্যানদের। যতটুকু হয়েছে, আলহামদুলিল্লাহ খুশি।’
ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে তার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, ব্যাটে চুমু খেয়ে তার এমন বিশেষ উদযাপনের আসল রহস্যটা। কারণ হিসেবে এই টপ অর্ডার ব্যাটার বলেন, ‘রান যখন করি না, তখন তো করতে পারি না। রান করার পর মন চায় উদযাপন করতে, এজন্য করি। এটা কারো উদ্দেশে না। আমার নিজের ভালো লাগার জন্য করি। কিন্তু ফলাফল নিয়ে খুব বেশি চিন্তা করিনি কখনো, খুবই সত্যি কথা এটা। আশপাশের কথাবার্তা এসব নিয়েও চিন্তা করিনি। হ্যাঁ, অনেক সময় খারাপ লাগা কাজ করেছে। তবে খুব বেশি ফোকাস করিনি। আমার মূল ব্যাপার ছিল কোথায় ঘাটতি আছে, সেটাতে উন্নতি করা। তখন ফলাফল আসেনি, এখন আসছে, এটা কন্টিনিউ করতে চাই।’
শান্ত আউট হলে উইকেটে আসেন প্রথমবারের মতো টেস্ট অধিনায়কের দায়িত্ব পাওয়া লিটন দাস। তবে প্রথমবার সাদা পোশাকে নেতা হিসেবে ব্যাট করতে নেমে দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেয়ার বদলে দলের বিপদ বাড়িয়ে দ্রুত সাজঘরে ফেরেন তিনি। ১৫ বলে ৯ রান করে জহির খানের শিকার হন লিটন। দলীয় ৩০০ রান পূর্ণ করার আগেই ৫ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। শান্তর দ্রুততম সেঞ্চুরির দিনে শেষ দিকে এসে দলের হাল ধরেন মিস্টার ডিপেন্ডেবল খ্যাত মুশফিকুর রহিম ও তরুণ অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ। দিনশেষে মুশফিক অপরাজিত থাকেন ৪১ রানে। আর মিরাজ অপরাজিত থাকেন ৪৩ রানে। ৭৯ ওভারে ৩৬২ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে প্রথম দিন শেষ করে টাইগাররা। আফগানদের হয়ে সর্বোচ্চ দুটি উইকেট নেন মাসুদ। একটি করে উইকেটের দেখা পান জহির, আমির ও রহমত শাহ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়