প্রশিক্ষণার্থী চিকিৎসকদের আন্দোলন দুদিন স্থগিত : প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাওয়ার আশ্বাস বিএসএমএমইউ উপাচার্যের

আগের সংবাদ

আনন্দে পাঠ উৎসবে মূল্যায়ন : ষষ্ঠ ও সপ্তমে চলছে ‘ষান্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন উৎসব’, ঈদুল আজহার পর মূল্যায়নের বিশ্লেষণ

পরের সংবাদ

দলে ফিরেই আলোকিত জয়

প্রকাশিত: জুন ১৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের একমাত্র টেস্ট ম্যাচে পিঠের চোটের কারণে নিয়মিত ওপেনার তামিম ইকবাল মাঠে নামবেন না সেটা আগেই জানা ছিল। তামিমের অনুপস্থিতিতে তার বদলে ইনিংস ওপেন করেন মাহমুদুল হাসান জয়। গতকাল প্রায় এক বছর পর জাতীয় দলের জার্সি গায়ে মাঠে ফিরেই তিনি ক্যারিয়ারের তৃতীয় ফিফটি তুলে নেন। টপ অর্ডার ব্যাটার নাজমুল হোসেন শান্তর সঙ্গে তিনি গড়েন বাংলাদেশের টেস্ট ইতিহাসে দ্বিতীয় উইকেটে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জুটি। শেষ পর্যন্ত জয় ৭৬ রান করে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান। প্রথম দিন শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৫ উইকেট হারিয়ে ৩৬২ রান।
টস জিতে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় স্পিননির্ভর দল আফগানিস্তান। সবুজ উইকেটে পেসাররা বেশি সুবিধা পায়, সঙ্গে রান তুলতে পারে ব্যাটাররাও। আফগান পেসাররা সুযোগ কাজে লাগাতে না পারলেও তা কাজে লাগায় শান্ত-জয় জুটি। টেস্ট ম্যাচে ওয়ানডে স্টাইলে ব্যাট করে তারা। যদিও এর আগে ম্যাচের দ্বিতীয় ওভারেই বিদায় নেন ওপেনার জাকির হাসান। তিনে নামা শান্তকে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশের রান ঊর্ধ্বমুখী করতে থাকেন মাহমুদুল হাসান জয়। শান্ত-জয় জুটি প্রতিরোধ গড়ে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতেই বাংলাদেশকে ভালো একটি সংগ্রহের দিকে নিয়ে যায়। এক-দুই রান নিয়ে অবস্থান শক্ত করে আফগান বোলারদের ঘাম ঝরাতে থাকেন দুই টাইগার ব্যাটার। শেষ পর্যন্ত ২৬৭ বলে ২১২ রানের জুটি গড়ে বিদায় নেন মাহমুদুল হাসান জয়। ১৩৭ বলে ৭৬ রানের ইনিংস খেলার পর তিনি পার্টটাইম লেগস্পিনার রহমত শাহর বলে ইব্রাহিম জাদরানের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরের পথ ধরেন। তার ইনিংস ছিল ৯টি বাউন্ডারিতে সাজানো। দ্বিতীয় উইকেটে শান্ত-জয়ের উপহার দেয়া ২১২ রানের জুটি সাদা পোশাকে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এর আগে ২০১৪ সালে চট্টগ্রামের মাটিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে শামসুর রহমান শুভ এবং ইমরুল কায়েস দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে সর্বোচ্চ ২৩২ রান করেন। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে তৃতীয় সর্বোচ্চ ২০০ রান করেন তামিম ইকবাল এবং জুনায়েদ সিদ্দিকী।
মাহমুদুল হাসান জয় বাংলাদেশ জাতীয় দলের জার্সি গায়ে টেস্ট ক্যারিয়ার শুরু করেন ২০২১ সালের ৪ ডিসেম্বর। আফগানদের বিপক্ষে চলমান ম্যাচসহ জয় এ পর্যন্ত ৯টি টেস্টে মাঠে নেমেছেন। গতকাল বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসে জয়ের করা ৭৬ রান তার ক্যারিয়ারের তৃতীয় সর্বোচ্চ রান। প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে তিনি ডাক মেরে সাজঘরে ফিরে যান। দ্বিতীয় ইনিংস শেষে তার ব্যাট থেকে আসে মাত্র ৬ রান। অভিষেকের ম্যাচে আলো ছড়াতে না পারলেও তিনি ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সাদা পোশাকের ম্যাচে দ্বিতীয়বার মাঠে নামার সুযোগ পান। সেই ম্যাচের প্রথম ইনিংসে তার ব্যাট থেকে আসে ৭৮ রান, দ্বিতীয় ইনিংসে তিনি ব্যাটিং করেননি। ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ম্যাচে ফিফটি করে তিনি দলে জায়গা নিশ্চিত করে নেন। বাংলাদেশের হয়ে মাহমুদুল হাসান জয় ক্যারিয়ারের তৃতীয় ম্যাচ খেলেন ২০২২ সালের ৩১ মার্চ, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। সেই ম্যাচের প্রথম ইনিংসে তিনি ক্যারিয়ারসেরা রান করেন। প্রোটিয়াদের বিপক্ষে তিনি সেই ম্যাচের প্রথম ইনিংসে ১৩৭ রানের ইনিংস খেলেন, দ্বিতীয় ইনিংসে করেন ৪ রান। তৃতীয় ম্যাচেই তিনি ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি করে ক্রিকেটপাড়ার আলোচনায় আসেন। এরপর অবশ্য তার ছন্দপতন হতে শুরু করে। পরের ম্যাচের দুই ইনিংসে তার ব্যাট থেকে বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডে কোনো রানই যোগ হয়নি। দুই ইনিংসেই তিনি ফেরেন ডাক মেরে। ২০২২ সালের মে মাসে তিনি ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ফিফটি করেন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। সেই ম্যাচের প্রথম ইনিংসে তার ব্যাট থেকে আসে ৫৮ রান। এরপর গেল বছরের জুন পর্যন্ত তিনটি ম্যাচে মাঠে নামার সুযোগ পেয়েছেন জয়। ম্যাচ তিনটিতে তিনি নিজের হারানো ছন্দ খুঁজে পাওয়ার চেষ্টায় ছিলেন। গত বছরের মে মাসে লঙ্কানদের বিপক্ষে তিনি প্রথম ইনিংসে ডাক মারেন, দ্বিতীয় ইনিংসে করেন ১৫ রান। এরপর জুনের প্রথম টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেও প্রথম ইনিংসে ফিরে যান ডাক মেরে, তবে দ্বিতীয় ইনিংসে তিনি ৪২ রান করেন। চলমান আফগান টেস্টের আগে জয়ের সর্বশেষ ম্যাচ ছিল ২০২২ সালের জুন মাসে, উইন্ডিজদের বিপক্ষে। সেই ম্যাচে তিনি প্রথম ইনিংসে ১০ ও দ্বিতীয় ইনিংসে ১৩ রান করেন। ছন্দহীনতার কারণে এরপর থেকে তিনি আর বাংলাদেশ দলে সুযোগ পাননি। দীর্ঘ এক বছর পর আফগানিস্তানের বিপক্ষে চলমান সিরিজের একমাত্র টেস্ট ম্যাচ দিয়ে দলে ফিরেছেন মাহমুদুল হাসান জয়।
দলে ফিরেই তিনি নিজের সেই চেনা রূপ প্রকাশ করেন। তার ব্যাট থেকে আসা ৭৬ রানের সঙ্গে নাজমুল হোসেন শান্তর সেঞ্চুরির ওপর ভর করেই বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে বড় একটি সংগ্রহ গড়ার পথে রয়েছে।
মাহমুদুল হাসান জয়ের দলে ফেরার একমাত্র কারণ তার পারফরম্যান্স। সম্প্রতি বাংলাদেশ ‘এ’ দলের হয়ে তিনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ ‘এ’ দলের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজে দারুণ ছন্দে ছিলেন। সিরিজের তৃতীয় ম্যাচের প্রথম ইনিংসে তেমন কিছু করতে না পারলেও বাংলাদেশ ‘এ’ দলের দ্বিতীয় ইনিংসে সেঞ্চুরির দেখা পান জয়। সেই ম্যাচে তিনি ওপেনিংয়ে নেমে ২৬৮ বল খেলে ১১৪ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন, যেখানে বাউন্ডারি ছিল ১৪টি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়