হাসপাতালে খালেদা জিয়া

আগের সংবাদ

অপরাধের স্বর্গরাজ্য রোহিঙ্গা ক্যাম্প

পরের সংবাদ

হকির প্রাথমিক দল ঘোষণা : এশিয়ান গেমস

প্রকাশিত: জুন ১৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : দীর্ঘ বিরতির পর আগামী সেপ্টেম্বরে চীনের হাংজুতে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে এশিয়ান গেমসের ১৯তম আসর। আসরটি ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে আয়োজিত হওয়ার কথা থাকলেও করোনার কারণে তা স্থগিত করে ২০২৩ সালের সূচি দেয়া হয়। এশিয়ান গেমসকে সামনে রেখে গতকাল ৪০ সদস্যের প্রাথমিক দলের নাম প্রকাশ করে বাংলাদেশ হকি ফেডারেশন। আগামী ১৫ জুন বিকালে মওলানা ভাসানী স্টেডিয়ামে জাতীয় দলের ম্যানেজার মাহবুবুল এহসান রানার কাছে প্রাথমিক দলে ডাক পাওয়া খেলোয়াড়দের রিপোর্ট করতে বলা হয়েছে।
ক্রীড়াভিত্তিক একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে গতকাল হকি ফেডারেশনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা হুমায়ন জাতীয় দলসংক্রান্ত প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মমিনুল হক সাঈদের স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিটি গত ১০ জুন স্বাক্ষর করা হলেও তা গতকাল প্রকাশ করা হয়। এশিয়ান গেমসের আগে প্রাথমিক দলের কোচিংয়ের দায়িত্বে থাকার কথা রয়েছে একজন কোরিয়ান কোচের। তার সঙ্গে কাজ করতে পারেন সাবেক খেলোয়াড় আশিকুজ্জামান। এশিয়ান গেমসে ভালো ফলাফল করতেই এত আগে ক্যাম্প শুরু করার পরিকল্পনা করেছে বাংলাদেশ হকি ফেডারেশন।
এশিয়ান গেমসের ১৯তম আসরে বাংলাদেশের ১৫টি ডিসিপ্লিনে অংশগ্রহণ করার কথা ছিল। গত ৬ মে বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশনের (বিওএ) নির্বাহী সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল এবারের এশিয়ান গেমসে শুধু বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল অংশগ্রহণ করবে। তবে বাংলাদেশ থেকে কোনো পুরুষ ফুটবল দল এবারের এশিয়ান গেমসে অংশগ্রহণ করবে না। পরবর্তীতে গত ২০ মে গোপন ব্যালটের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করা হয়। গোপন ব্যালটের ভোটে পুরুষ ফুটবল দলকে এশিয়ান গেমসে পাঠানোর পক্ষে ভোট দেন ২১ জন বিওএ সদস্য, আর বিপক্ষে ভোট দেন ৬ জন। তখন সিদ্ধান্ত নেয়া হয় এশিয়ান গেমসের ১৯তম আসরে পুরুষ ও নারী উভয় ফুটবল দলই খেলবে। বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশনের সর্বশেষ সিদ্ধান্ত অনুসারে এবারের এশিয়ান গেমসে বাংলাদেশ ১৬টি ডিসিপ্লিনে অংশগ্রহণ করবে। ডিসিপ্লিনগুলো হলো- আর্চারি, অ্যাথলেটিক্স, ক্রিকেট ফেন্সিং, ফুটবল (পুরুষ), ফুটবল (নারী), বক্সিং, হকি, গলফ, জিমন্যাস্টিকস, কাবাডি, কারাতে, ব্রিজ, শ্যুটিং, তায়কোয়ান্দো, ভারোত্তোলন, দাবা ও সাঁতার। তাছাড়া ই-স্পোর্টসে বাংলাদেশ অংশগ্রহণ করতে পারে। এই বিষয়ে বিওএর পর্যালোচনা করার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত নিশ্চিত কোনো তথ্য জানা যায়নি।
এশিয়ান গেমসে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ নারী ফুটবলে অংশগ্রহণ করতে চলেছে। এই আয়োজনের পুরুষ ফুটবল ডিসিপ্লিনে সাধারণত অনূর্ধ্ব-২৩ দল অংশগ্রহণ করে। আর নারী ফুটবলে অংশগ্রহণ করে সিনিয়র ফুটবল দল। তাই এবার সাবিনারা তাদের ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ কোনো পর্যায়ে অংশগ্রহণ করবে আগামী সেপ্টেম্বরে। তাছাড়া বাংলাদেশ বক্সিং ডিসিপ্লিনেও নতুন করে খেলা শুরু করবে।
প্রথমবার ভারতের নয়া দিল্লিতে ১৯৫১ সালে এশিয়ান গেমস আয়োজিত হয়। এশিয়ান গেমসে বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হয় ১৯৭৮ সালে, এশিয়ান গেমসের ৮ম আসরে। এরপর থেকে আয়োজিত ১১টি আসরের সবকটিতেই বাংলাদেশের অংশগ্রহণ ছিল। ৮ম ও ৯ম আসরে বাংলাদেশ অংশগ্রহণ করলেও লাল সবুজের প্রতিনিধিদের কেউ কোনো পদক দেশে আনতে পারেনি। বাংলাদেশ প্রথম কোনো পদক পায় ১৯৮৬ সালে, এশিয়ান গেমসের দশম আসরে। দক্ষিণ কোরিয়ার সিওলে অনুষ্ঠিত সেই আসরে বাংলাদেশের পক্ষে বক্সিং ডিসিপ্লিনে ব্রোঞ্জ পদক পেয়েছিলেন মোশারফ হোসেন। এরপর থেকে টানা ১৭তম এশিয়ান গেমস পর্যন্ত প্রতিটি আসরেই বাংলাদেশ কোনো না কোনো পদক পেয়েছে। তবে ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত ১৮তম এশিয়ান গেমসে বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা শূন্য হাতে দেশে ফেরে।
এই পর্যন্ত এশিয়ান গেমসে বাংলাদেশের পদক সংখ্যা ১২টি। এর মধ্যে ১৯৮৬ সালে মোশারফ হোসেনের অর্জন করা ব্রোঞ্জ পদক প্রথম। একাদশ আসরে ১৯৯০ সালে বাংলাদেশ প্রথম রূপার পদক পায় কাবাডিতে। বাংলাদেশ জাতীয় কাবাডি দলের হাত ধরে ১৯৯৪ সালে এশিয়ান গেমসের ১২তম আসরেও বাংলাদেশ রৌপ্য পদক পায়। পরের তিন আসরেও বাংলাদেশ একবার ব্রোঞ্জ, একবার সিলভার এবং আরেকবার ব্রোঞ্জ পদক পায় জাতীয় কাবাডি দলের সফলতায়। ২০০৬ সালে কাতারের দোহায় অনুষ্ঠিত এশিয়ান গেমস পর্যন্ত বাংলাদেশ সর্বোচ্চ সফল ছিল কাবাডিতে। পরের আসরে ২০১০ সালে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের কল্যাণে বাংলাদেশ একমাত্র স্বর্ণ পদক জয় করে। এটিই এশিয়ান গেমসে বাংলাদেশের একমাত্র স্বর্ণ জয়। এশিয়ান গেমসের সেই আসরে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল একটি রৌপ্য পদক এবং কাবাডি দল একটি ব্রোঞ্জ পদকও জয় করে। অর্থাৎ বাংলাদেশ ২০১০ সালে প্রথমবারের মতো এশিয়ান গেমসের এক আসরে ৩টি পদক পায়। পরের আসরেও বাংলাদেশে তিনটি পদক আসে। সেগুলো হলো, ক্রিকেট দলের জয় করা একটি রৌপ্য ও একটি ব্রোঞ্জ পদক এবং কাবাডি দলের একটি ব্রোঞ্জ পদক।
স্বর্ণ পদক জয় করায় এশিয়ান গেমসে বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল ডিসিপ্লিন হিসেবে ধরা হয় ক্রিকেটকে। আর সংখ্যার বিচারে সফল ডিসিপ্লিন কাবাডি। এই পর্যন্ত কাবাডি দল জিতেছে ৭টি পদক; যার মধ্যে ৩টি রূপা এবং ৪টি ব্রোঞ্জ। ক্রিকেট দল জিতেছে ৪টি পদক; যার মধ্যে রয়েছে একটি স্বর্ণ, দুটি রূপা এবং একটি ব্রোঞ্জ। বক্সিংয়ে বাংলাদেশ ১৯৮৬ সালেই একটি ব্রোঞ্জ পদক পেয়েছিল।

আসন্ন এশিয়ান গেমসের হকিকে সামনে রেখে ক্যাম্পে ডাক পাওয়া খেলোয়াড়রা হলেন-বিপ্লব কুজুর, অসিম গোপ, আবু সাঈদ নিপ্পন, নুরুজ্জামান নয়ন, সাইজুদ্দিন, ফরহাদ শিটুল, আশরাফুল ইসলাম, খোরশেদুর রহমান, সোহানুর রহমান সবুজ, মেহেদী হাসান, রেজাউল করিম বাবু, হুজাইফা হোসেন, রামিম হোসেন, শহিদুল সৈকত, আমিরুল ইসলাম, মেহরাব হাসান সামিন, রোমান সরকার, নাঈম উদ্দিন, ফজলে রাব্বি, আবেদ উদ্দিন,প্রিন্স লাল, আজিজার রহমান, রাহিদ হোসেন, তৈয়ব আলী, আল নাহিয়ান শুভ, সারোয়ার হোসেন, পুস্কর ক্ষিসা মিমো, দ্বিন ইসলাম ইমন, রাকিবুল হাসান, মাহাবুব হোসেন, আরশাদ হোসেন, রাসেল মাহমুদ জিমি,ওবায়দুল জয়, তাসিন আলী, মিলন হোসেন,আমান শরিফ,উক্ক্যহীন রাখাইন,শফিউল আলম শিশির ও রকিবুল হাসান।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়