হাসপাতালে খালেদা জিয়া

আগের সংবাদ

অপরাধের স্বর্গরাজ্য রোহিঙ্গা ক্যাম্প

পরের সংবাদ

সুনামগঞ্জের ৬ উপজেলার লক্ষাধিক মানুষের দুর্ভোগ : ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতায় দেড় যুগেও শেষ হয়নি সেতুর কাজ

প্রকাশিত: জুন ১৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি : হাওড়বেষ্টিত ভাটির জনপদ খ্যাত সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় আবুয়া নদীতে ফতেহপুর সেতুর নির্মাণ কাজ গত দেড় যুগেও শেষ হয়নি। মূলত নকশা ও ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতায় দীর্ঘদিন কাজ আটকে ছিল। সেতুর নির্মাণ কাজ এখনো শেষ না হওয়ায় জেলার ৬ উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।
জানা গেছে, ২০০৮ সালে ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৩৫ দশমিক ৯২৬ মিটার দীর্ঘ ও ১০ দশমিক ২৫ মিটার প্রস্থের ওই ফতেহপুর সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ওই সময় নদীর মধ্যভাগ অতিরিক্ত গভীর হওয়ায় মেইন পিলার নির্মাণের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়া সেতুর পশ্চিম তীরে ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতার কারণে সংযোগ সড়ক নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এরপর দ্বিতীয় ধাপে ২০১৭ সালে সড়ক ও জনপথ বিভাগের পক্ষ থেকে সেতু নির্মাণের বরাদ্দ বাড়িয়ে ২২ কোটি ৮৩ লাখ টাকা করা হয়। বর্তমানে সেতুর পূর্ব পাশে সংযোগ সড়কের কাজ শেষ হয়েছে। পশ্চিম পাশে চলছে মাটি ভরাটের কাজ। সব মিলে সেতুর নির্মাণ কাজ ৯৯ শতাংশ শেষ হয়েছে। চলতি মাসেই সেতুটি চালুর কথা জানিয়েছেন সুনামগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আবুয়া নদীতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ছোট খেয়া নৌকা দিয়ে প্রতিদিন শত শত মানুষ জেলা শহরে যাতায়াত করছে। খেয়া নৌকায় নদী পার হতে গিয়ে তাদের নানা বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। বর্ষাকালে এই দুর্ভোগ আরো বাড়ে। তখন প্রচণ্ড ¯্রােতের মধ্যে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় করে নদী পারাপার হয় সাধারণ মানুষ ও শিক্ষার্থীরা। এতে শিক্ষার্থীদের সময়মতো স্কুলে যাওয়া-আসা অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। তাছাড়া নিয়মিত ক্লাসে অংশ নিতে পারে না তারা। আর মাঝে মধ্যেই ঘটে হতাহতের ঘটনা। স্থানীয়দের দাবি, দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ করে ফতেহপুর সেতুিট চালু করা হোক।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্র জানায়, সুনামগঞ্জ জেলা শহরের সঙ্গে তাহিরপুর, ধর্মপাশা, মধ্যনগর, জামালগঞ্জ ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার মানুষ যাতে সহজ ও কম সময়ে যাতায়াত করতে পারে সেজন্য ফতেহপুর সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। সেতুটি চালু হলে জেলা সদরের সঙ্গে এসব উপজেলার ১৫ থেকে ২০ কিলোমিটার দূরত্ব কমে আসবে।
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার শাহ্পুর গ্রামের ব্যবসায়ী সাইফুল আমিন বলেন, নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় ফতেহপুর সেতুটি চালু হচ্ছে না। আর এ কারণেই বাধ্য হয়ে স্কুল, মাদ্রাসার শিক্ষার্থীসহ ৬ উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন খেয়া নৌকা দিয়ে পারাপার হচ্ছে। সেতুটি চালু হলে সময় ও অর্থ দুটোই সাশ্রয় হবে। পাশাপাশি এসব এলাকায় উৎপাদিত কৃষিপণ্য সহজে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা যাবে। জমে উঠবে যে কোনো ধরনের ব্যবসায়িক কার্যক্রম।
তাহিরপুর উপজেলার আনোয়ারপুর বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক মিলন তালুকদার বলেন, ফতেহপুর সেতুটি চালু না হওয়া পর্যন্ত ভাটি এলাকার ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে না।
বালিজুরী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজাদ হোসেন বলেন, একটি সেতু না থাকায় গত দেড় যুগেরও বেশি সময় ধরে লক্ষাধিক মানুষ চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। আশা করি মানুষের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত সময়ের মধ্যে ফতেহপুর সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ করবে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ সুনামগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুল ইসলাম প্রামাণিক বলেন, সেতুর ৯৯ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। চলতি মাসেই সেতুটি চালু করে দেয়া হবে। সেতুটি চালু হলে ছয় উপজেলার সঙ্গে জেলা সদরের দূরত্ব কমবে প্রায় ১৫-২০ কিলোমিটার।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়