হাসান গোর্কি, রংপুর থেকে : প্রচণ্ড তাপদাহের কারণে নির্ধারিত সময়ের আগেই বাজারে এসেছে সুস্বাদু আঁশহীন হাঁড়িভাঙা আম। জুন মাসের তৃতীয় সপ্তাহে এই আম বাজারে আসার কথা থাকলেও চাষিদের আবেদনসহ পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সময়ের আগেই গত শনিবার থেকে আম পাড়া শুরু হয়েছে আনুষ্ঠানিকভাবে। এদিন রংপুর নগরীর বাসটার্মিনাল হাঁড়িভাঙা আমের হাটে সকালেই আম নিয়ে হাজির হন ব্যবসায়ীরা। আমের হাট প্রথম দিনেই জমজমাট হয়ে উঠে ক্রেতাদের সরব উপস্থিতিতে। সঙ্গে সঙ্গে সিটি বাজারসহ অন্যান্য স্থানেও পাওয়া যায় হাঁড়িভাঙা আম।
উদ্বোধনী দিনে আমের মণ ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকা প্রকার ভেদে ১ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকায় বিক্রি হয়। সেই হিসেবে প্রতি কেজি হাঁড়িভাঙা আম ৪০ টাকা থেকে ৪৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। কোথাও বা ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে এই আম বিক্রি হয়। এবার আমের বাজার ভালো যাবে বলে ধারণা করছেন আম ব্যবসায়ীরা।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, হাঁড়িভাঙা আম চাষিরা একটি স্মারকলিপি দিয়েছিলেন। তাদের দাবি ছিল, হাঁড়িভাঙা আম বাজারজাতে সময় ২০ জুনের পরিবর্তে ১০ জুন করা। কারণ হিসেবে তারা বলেছেন, অনাবৃষ্টির কারণে আম পাকা শুরু হয়েছে, পরিপুষ্ট হয়েছে। বাগানে আম রাখা যাচ্ছে না। তবে সাইজ ছোট হয়ে গেছে। এতে আম চাষি ও ব্যবসায়ীরা লোকসানের মুখে পড়বে। ফলে চাষিদের দাবি অনুযায়ী এবং পারিপার্শ্বিক আবহাওয়া মাথায় রেখে সময়ের আগেই হাঁড়িভাঙা আম বাজারজাত করার সিদ্ধান্ত দেয় প্রশাসন।
কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ বছর রংপুর জেলায় এক হাজার ৯০৫ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় বেশি। তাছাড়া ঝড় কিংবা বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হওয়ায় আমের তেমন ক্ষতি হয়নি।
এদিকে, আম পাড়াকে ঘিরে ব্যস্ততা বেড়েছে আম চাষি, ব্যবসায়ী, রিকশা-ভ্যানচালকসহ বিভিন্ন উপকরণ তৈরির সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের। বিগত বছরগুলোর মতো এবারও হাঁড়িভাঙার ফলন নিয়ে আশাবাদী চাষিরা। আঁশবিহীন এবং অত্যন্ত সুমিষ্ট হওয়ায় এই আম সকলেরই কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয়। গতবারের চেয়ে এবার ফলন বেশি হওয়ায় সব মিলিয়ে ২২০ কোটি থেকে ২৫০ কোটি টাকার বিক্রি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
রংপুর কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ওবায়দুর রহমান মণ্ডল বলেন, এখন ব্যাপকভাবে হাঁড়িভাঙা আম চাষ হচ্ছে। খুব বেশি পরিশ্রম ও অর্থ বিনিয়োগ করতে না হয় না বলে মানুষ আমচাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। এ জন্য চাষি, ব্যবসায়ী ও বাগান মালিকদের কৃষি বিভাগ থেকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হচ্ছে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।