কাগজ প্রতিবেদক : ফার্স্ট-সেকেন্ড আর জিপিএ-৫-এর জন্য শিক্ষার্থীদের ওপর চাপ প্রয়োগ না করার আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি বলেন, আমরা নিজেদের জীবনে যা করতে পারিনি, সন্তানের মাধ্যমে তা করতে চাই। সেজন্য বাচ্চাদের চাপাচাপি, জোর-জবরদস্তি করে সেদিকে নিয়ে যেতে হবে এমন মানসিকতা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। এগুলো শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা নষ্ট করে। গতকাল রবিবার বিকেলে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট অডিটোরিয়ামে বঙ্গবন্ধু সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ ২০২৩ এর জাতীয় পর্যায়ে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীদের পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমরা সারাক্ষণ অন্যের সন্তানের সঙ্গে তুলনা করতে থাকি। প্রত্যেকটি মানুষ নানান ধরনের। একেকজন মেধা, আগ্রহ, প্রতিভা, সক্ষমতা একেক দিকে। মা-বাবা শিক্ষকেরা যদি সেটা চিন্তা করে বাচ্চাদের সেদিকে একটু অনুপ্রাণিত করেন তাহলে আমরা শিক্ষার্থীদের মধ্যে সৃজনশীলতা দেখব। নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে দীপু মনি বলেন, ২০২৫ সাল নাগাদ আমাদের সব শ্রেণির শিক্ষার্থীরা নতুন শিক্ষাক্রমে পড়াশোনা করবে। মুখস্থ তো নয়ই, এখানে জ্ঞানার্জনের পাশাপাশি আমাদের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন দক্ষতাও অর্জন করবে। আমি চাই শিক্ষার্থীরা বই মুখস্থ করবে না, তারা অভিজ্ঞতা, প্রকল্পভিত্তিক শিখনের মাধ্যমে দক্ষতা অর্জন করবে। আগামীর দিনটাই প্রযুক্তির, আমাদের প্রযুক্তি শিখতে হবে, উদ্ভাবনও করতে হবে। অন্যরা উদ্ভাবনা করবে, আমরা শুধু ব্যবহার করব তা কিন্তু হবে না। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ প্রতিবছর বঙ্গবন্ধু সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। চলতি বছর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে ১৩-১৫ মার্চ, উপজেলা পর্যায়ে ২০-২১ মার্চ, জেলা পর্যায়ে ৩ মে, বিভাগীয় পর্যায়ে ৯ মে এবং জাতীয় পর্যায়ে ১৫ মে বঙ্গবন্ধু সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ প্রতিযোগিতা হয়েছে। জাতীয় পর্যায়ের এই প্রতিযোগিতায় প্রায় এক লাখ শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছে। প্রতিযোগিতার বিভিন্ন ধাপ অতিক্রম করে জাতীয় পর্যায়ে ১৫ জন শিক্ষার্থী ‘বছরের সেরা মেধাবী’ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে।
যাদের প্রত্যেকে গতকাল রবিবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সনদ, ক্রেস্ট (পদক), মেডেল ও এককালীন বিশেষ মেধাভিত্তিক বৃত্তি হিসেবে দুই লাখ টাকার চেক পেয়েছে। বিকালে শিক্ষামন্ত্রীর কাছ থেকে বিভাগীয় পর্যায়ে বিজয়ী ১২০ জনের প্রত্যেকে সনদ, ক্রেস্ট (পদক), মেডেল ও ৩০ হাজার টাকার চেক নেয়।
পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. কামাল হোসেন, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ, অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (মাধ্যমিক -১) খালেদা আক্তার।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।