কাগজ প্রতিবেদক : বিশ্ববিদ্যালয় পড়–য়া দম্পতিকে অচেতন করে টাকা, পয়সা ও স্বর্ণালংকার লুটের ঘটনা ঘটেছে। তারা হলেন- সুলতানা মনি (২৪) ও এরশাদ আবির (২৪)। গত শনিবার মধ্যরাতে কেরানীগঞ্জের আটি নিমতলী ছোট বাওয়াল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। গতকাল রবিবার দুজনকেই ঢাকা মেডিকেল কলেজে (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সুলতানা মনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের ¯œাতকের ছাত্রী ও আবির ময়মনসিংহের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চলচ্চিত্র ও গণমাধ্যম বিভাগের তৃৃতীয় বর্ষের ছাত্র।
দুজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসা নাসরিনের নানি জরিনা খাতুন জানান, কেরানীগঞ্জের ওই বাড়িটি নাসরিনের বাবার বাড়ি। গত মাসের ৮ তারিখ তাদের বিয়ে হয়। গত শনিবার আবির ময়মনসিংহ থেকে বেড়াতে আসেন শ্বশুরবাড়িতে। রাতে নাসরিনের মা মেহেরুন্নেসা তাদের জন্য বিরিয়ানি রান্না করেন। এরপর নাসরিনের মা ও তার ছোট বোন তনু বিরিয়ানি খেয়ে শুয়ে পড়েন এবং রান্নাঘরে নতুন দম্পতির জন্য বিরিয়ানি রেখে দেন। পরে রাত ১১টার দিকে রান্নাঘর থেকে বিরিয়ানি এনে খাওয়ার পর অসুস্থ অনুভব করে দুজন। এ অবস্থাতেই একপর্যায়ে ঘুমিয়ে পড়েন তারা।
তিনি আরো জানান, পরে গত শনিবার গভীর রাত ২টার দিকে তাদের বাড়ির তিন পাশের গ্রিল কেটে ১০-১২ জন দুর্বৃত্ত ঘরে ঢোকে। তখন নাসরিনের মা ও ছোট বোন ঘুম থেকে জেগে উঠলে তাদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ফেলে দুর্বৃত্তরা। এরপর আলমারি, শোকেজ ভেঙে ৪-৫ লাখ টাকা, কয়েক ভরি স্বর্ণালংকার ও ৩টি মোবাইল ছিনিয়ে নেয়। একপর্যায়ে তারা ভাঙা গ্রিল দিয়ে পালিয়ে যায়। পরবর্তী সময়ে খবর পেয়ে স্বজনরা তাদের বাসায় যায়। এরপর থানা পুলিশকে ঘটনাটি জানায়। সবশেষ গতকাল রবিবার বেলা ১১টার দিকে তাদের চিকিৎসার জন্য ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান। চিকিৎসকরা তাদের দেখে মেডিসিন বিভাগে ভর্তি করান।
এদিকে হাসপাতালে এরশাদ আবির কিছুটা সুস্থ হওয়ার পর নিজেই জানান, গত শনিবারই তিনি ময়মনসিংহ থেকে কেরানীগঞ্জে শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে আসেন। রাতে যখন রান্নাঘর থেকে বিরিয়ানি এনে দুজন খান, তখনই বিরিয়ানি তেতো লাগছিল। সেজন্য অল্প একটু খেয়েই রেখে দেন তিনি। এর কিছুক্ষণ পরই প্রথমে নাসরিন মাথা ঘুরে পড়ে যাওয়ার অবস্থা হয়। এরপর তিনি নিজেও অসুস্থ হয়ে পড়েন। তখন তারা দুজনই বিছানায় শুয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। পরবর্তী সময়ে বাসায় কী হয়েছে তা কিছুই জানা নেই তার। তবে তার মানিব্যাগে ২৫ হাজার টাকা ও দুটি পেনড্রাইভ ছিল। যেই পেনড্রাইভে তার অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ছিল। সেগুলোও লুট করে নিয়ে গেছে। রান্না ঘরের জানালা দিয়ে দুর্বৃত্তরা প্রথমে চেতনানাশক ছিটিয়ে রেখে দিয়েছিল বলে ধারণা তার। ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া জানান, তাদের দুজনকেই মেডিসিন বিভাগে ভর্তি দেয়া হয়েছে। ঘটনাটি সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ তদন্ত করছে।