চট্টগ্রাম অফিস : ‘ধ্বনির সম্পদ আছে আমাদের চেতনার গভীরে, যে ধ্বনিতে দীপ্ত হয় চিরচেনা প্রিয় কন্ঠস্বর’ শিরোনামে চট্টগ্রামে ২ দিনব্যাপী আবৃত্তি উৎসব শুরু হয়েছে। গতকাল শুক্রবার চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে বোধন আবৃত্তি পরিষদের আয়োজনে বোধন আবৃত্তি উৎসব-২০২৩ শুরু হয়। উৎসবে ঢাকা, কলকাতাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের আবৃত্তিকার অংশ নিয়েছেন।
সকালে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদনের মধ্য দিয়ে উৎসবের শুভসূচনা হয়। অতিথিদের প্রদীপ প্রজ্বালন ও বোধনের সব সদস্যের পরিবেশনায় উদ্বোধনী আবৃত্তি কবি উৎপলকান্তি বড়–য়ার রচনায় ‘আঁধার ভেঙে আলোর বুনন’ পরিবেশিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ আবৃত্তি শিল্পী সংসদের সভাপতি একুশে পদকপ্রাপ্ত জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ টেলিভিশন চট্টগ্রাম কেন্দ্রের মহাব্যবস্থাপক নূর আনোয়ার হোসেন (রনজু) বলেন, চট্টগ্রাম সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে পরিবেষ্টিত। সেখানে বোধন শক্তিশালী জায়গা করে নিয়েছে। অনেক বাধা পেরিয়ে এসেছে বোধন, বোধন যা করছে তার জন্য শুভকামনা।
এতে আরো বক্তব্য রাখেন বোধনের প্রতিষ্ঠাতা এডভোকেট বিশ্বজিৎ দাশ ভুলু, প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য অঞ্চল চৌধুরী, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রদীপ দাশ এবং বোধনের উপদেষ্টা লিলি বড়–য়া। বোধনের সভাপতি আবদুল হালিম দোভাষের সভাপতিত্বে উৎসব ঘোষণা করেন বোধনের নির্বাহী সদস্য সুদীপ বড়–য়া খোকন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সহসভাপতি আবৃত্তিশিল্পী শিমুল নন্দী। সম্মাননা দেয়া হয় বোধনের প্রতিষ্ঠাতা এডভোকেট সুভাষ বরণ চক্রবর্তী, এডভোকেট বিশ্বজিৎ দাশ ভুলু ও এডভোকেট স্বপন চক্রবর্তী এবং প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য অঞ্চল চৌধুরী, ইন্দিরা চৌধুরী, সালমা নিগার ছন্দা, পারভেজ চৌধুরী ও প্রশান্ত চক্রবর্তীকে। স্মারক নেন বোধনের উপদেষ্টা এডভোকেট স্বভু প্রসাদ বিশ্বাস, ফজল হোসেন, লিলি বড়ুয়া, পিযুষ কান্তি বিশ্বাস, সাইফুল আলম বাবু এবং সুবেহ খান বাসু। উদ্বোধনী পর্ব সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক আবৃত্তিশিল্পী প্রণব চৌধুরী।
বিকালে শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে বৈকালিক আয়োজন শুরু হয়। বোধনের সাবেক প্রযোজনা সম্পাদক প্রয়াত আবৃত্তিশিল্পী সুমন বিশ্বাসকে নিবেদিত ‘তারুণ্যের জয়গান’ পর্বে একক আবৃত্তি পরিবেশন করেন অনির্বাণ চৌধুরী, ঐশী পাল, উম্মে সালমা নিঝুম, বর্ষা চৌধুরী এবং মৃত্তিকা চক্রবর্তী। ‘নয়ন তোমায় বড্ড হারায়’ পর্বে গান ও আবৃত্তি পরিবেশন করেন প্রশান্ত চক্রবর্তী ও পপলী চক্রবর্তী। ‘নানা জনপদের কথা’ পর্বে একক আবৃত্তি, ‘মিলন হলো দোঁহে’ শিরোনামে দ্বৈত আবৃত্তি পরিবেশন করেন মেজবাউর মোকাম রাবিন ও পলি পারভীন (ঢাকা) এবং মিলি চৌধুরী ও ফারুক তাহের (চট্টগ্রাম)। এরপর আবৃত্তিসাধক উৎপল কুণ্ডুর জীবন ও আবৃত্তি চর্চার ওপর নির্মিত তথ্যচিত্র ‘অতএব উৎপল’ প্রদর্শন করা হয়। তথ্যচিত্রটি সম্পর্কে বলেন ডা. পার্থ প্রতিম পান। এরপর মোমবাতি হাতে বোধনের সব সদস্য ও দশর্কদের অংশগ্রহণে সমবেত আবৃত্তি পরিবেশিত হয়। ‘বহুবর্ণ’ পর্বে একক আবৃত্তি পরিবেশন করেন ডা. পার্থ প্রতিম পান (শিলিগুড়ি), পারভেজ চৌধুরী, অমিতাভ কাঞ্জিলাল (শিলিগুড়ি)।
বোধনের সাবেক সভাপতি রণজিৎ রক্ষিত স্মরণে কবি ফাউজুল কবিরের কবিতা ‘মন ভালো হলে চলে এসো’ পরিবেশন করেন শিমুল নন্দী, প্রণব চৌধুরী, জাভেদ হোসেন এবং মাইনুল আজম চৌধুরী। পর্বটি সঞ্চালনা করেন রাজিউর রহমান বিতান। উৎসবের সমাপনী দিন আজ শনিবার (১০ জুন) সকালে ড. নিমাই মন্ডলের প্রবন্ধ ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাঠ্যক্রমে বিষয় হিসেবে আবৃত্তির প্রয়োজনীয়তা’ বিষয়ে সেমিনার হবে। বিকালে পরিবেশিত হবে দেশ ও দেশের বাইরের বরেণ্য আবৃত্তিশিল্পীদের পরিবেশনায় একক, দ্বৈত ও বৃন্দ আবৃত্তি।