নম্বর জালিয়াতির অভিযোগ : নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রককে হাইকোর্টে তলব

আগের সংবাদ

ভোটের হাওয়া কোন দিকে? বরিশালে চার প্রার্থীর মধ্যে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস

পরের সংবাদ

শেষ মুহূর্তের প্রচারে ব্যস্ততা বেড়েছে মেয়র প্রার্থীদের : বিসিসি নির্বাচন

প্রকাশিত: জুন ৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

এম কে রানা, বরিশাল থেকে : বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আর বাকি মাত্র ৪ দিন। শেষ মুহূর্তে নির্বাচনী প্রচারণার মাঠ সরগরম করছেন প্রার্থীরা। বিশেষ করে গোটা নগরবাসীর দৃষ্টিতে থাকা মেয়র প্রার্থীরা প্রচারণার মাঠে ব্যাপক সরব। দুপুরের পরপরই প্রচার মাইকে প্রার্থীদের পক্ষে প্রচারণা দৃষ্টি কাড়ছে যে কারো। তাছাড়া প্রতিদ্ব›দ্বী মেয়র প্রার্থীরাও রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে ছুটছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। তবে নির্বাচনী প্রচারণায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আবুল খায়ের আবদুল্লাহর প্রচারণা সবার থেকে এগিয়ে। এরপরই এগিয়ে যাচ্ছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস ও ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম। এছাড়া শেষ মুহূর্তে ব্যাপক প্রচারণা চালাচ্ছেন স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী সাবেক ছাত্রদল নেতা কামরুল আহসান রূপন। তবে শেষ দিকে এসে আওয়ামী লীগের একাট্টা হয়ে প্রচারণা চালানোর কারণে কিছুটা অস্বস্তিতে ফেলছে প্রধান ২ প্রতিদ্ব›দ্বী লাঙ্গল ও হাতপাখার প্রার্থীকে।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় বরিশাল নগরীর সদর রোড সার্কিট হাউসের বিপরীতে আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থীর প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ে নৌকার মেয়র প্রার্থীকে সমর্থন জানিয়ে মতবিনিময় সভা করেন নগরীর সর্বস্তরের আলেম-ওলামাদের বৃহৎ অংশ। মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নৌকা মার্কার প্রধান সমন্বয়ক এডভোকেট কে বি এস আহম্মেদ কবির। মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন ওলামা লীগ বরিশাল মহানগরের সভাপতি মাও. মাহমুদুল হাসান আনসারী। মতবিনিময় সভা শেষে নগরীর বিভিন্ন স্থানে নৌকা প্রতীক নিয়ে জনসংযোগ ও র?্যালি করেন তারা।
আল্লাহর সাহায্য নিয়ে এবং সম্মানিত ভোটারদের সমর্থন ও ভোট নিয়ে বিজয়ী হব ইনশাল্লাহ। আমি বিজয়ের লক্ষ্য নিয়ে মাঠে আছি। অনেকে গুজব ছড়ানোর চেষ্টা করবে, আপনারা গুজবে কান দেবেন না। মাঠে থাকবেন। এবার দখলবাজদের খবর আছে, কোনো ভোটচুরি ও ডাকাতি করার সুযোগ থাকবে না। আমি গত ৪ জুন ৩০টি দফা দিয়ে আমার ইশতেহার ঘোষণা করেছিলাম। নৌকার প্রার্থীর ইশতেহার ঘোষণায় ৩৫টি দফা উল্লেখ করেছেন। পত্রিকায় পড়ে দেখলাম আমার ইশতেহারের সঙ্গে নতুন ৫টি যোগ করেছেন। তিনি নতুন কিছু কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন ‘বাড়ি বানাতে আর চাঁদা দিতে হবে না।’ আমার প্রশ্ন আগে কাকে টাকা দিতে হতো? তিনি কোন দলের মেয়র ছিলেন? আপনি কোন দলের মেয়র প্রার্থী। তিনি আরো বলেছেন আগে উন্নয়ন হয়নি, তিনি উন্নয়ন করবেন। তাকে প্রধানমন্ত্রী পাঠিয়েছেন। আগের মেয়রকে কে পাঠিয়েছিল? গত ৫ বছর আপনারা ক্ষমতায় ছিলেন, এখন ক্ষমতার মেয়াদ আছে ৬ মাস। ক্ষমতায় থাকতেই উন্নয়ন করেননি তাহলে ভবিষ্যতে কীভাবে করবেন? প্রতারণার রাজনীতি জনগণ বোঝে, তাদের সঙ্গে দয়া করে আর মিথ্যাচার করবেন না। আপনাদের কোনো ফাঁদে বরিশালবাসী পা দেবে না। নির্বাচনের আর ৪ দিন বাকি। বর্তমান মেয়রকে কোথায় লুকিয়ে রেখেছেন? তাকে সঙ্গে নিয়ে কেন আসেন না? এত ভয় কিসের। বরিশালের ভোটারদের বোকা ভাববেন না। তাহলে মস্তবড় ভুল করবেন। বৃহস্পতিবার জাতীয় পার্টি মনোনীত মেয়র প্রার্থী প্রকৌশলী ইকবাল হোসেন তাপস বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে গণসংযোগ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এসব কথা বলেন।
এদিকে ইসলামী আন্দোলনের হাতপাখার মেয়র প্রার্থীও নাগরিক সমস্যার সমাধান ও নগরীর উন্নয়নকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন। হাতপাখার প্রার্থী মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে নগরীর একটি অভিজাত রেস্তোরাঁয় ১৭ দফার ইশতেহার ঘোষণা দেন। তিনি দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও দূষণমুক্ত নগরী করার প্রতিশ্রæতি দিয়েছেন। নগরীর উন্নয়নের জন্য দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সমম্বয়ে ‘নগর বিশেষজ্ঞ কমিটি’ গঠনের প্রতিশ্রæতি দিয়েছেন মুফতি ফয়জুল। তিনি বলেছেন, নির্বাচিত হতে পারলে নগর উন্নয়নের জন্য ওলামায়ে কেরাম, সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ, বুদ্ধিজীবী ও বিভিন্ন পেশাজীবীদের সমম্বয়ে পরামর্শ কমিটি গঠন করবেন। ইশতেহারে তার অন্য প্রতিশ্রæতিগুলোর উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- নগর সরকার গঠনে কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণ, বিশুদ্ধ পানির সংকট সমাধান, খাদ্যে ভেজাল নিয়ন্ত্রণ, ওয়ার্ডভিত্তিক উন্নয়ন পরিকল্পনা, মাতৃসদন প্রতিষ্ঠা, জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধনসহ সব ধরনের নাগরিক সেবা সহজ করা, ভিক্ষুকদের অসহায়ত্ব দূরিকরণ, হোল্ডিংট্যাক্স ও সব ধরনের লাইসেন্স ফি সহনীয় করা, নগরীর গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে ফুটওভার সেতু নির্মাণ, নগরের মধ্যে শেরেবাংলা মেডিকেল ও সদর হাসপাতাল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ, মসজিদ-মন্দির-গির্জাভিত্তিক ধর্মীয় শিক্ষা চালু, দেশি সংস্কৃতির ঐতিহ্য রক্ষা এবং অপসংস্কৃতির আগ্রাসন রোধে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ।
এদিকে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে প্রচারণায় এগিয়ে আছেন সাবেক ছাত্রদল নেতা দেয়াল ঘড়ি প্রতীকের কামরুল আহসান রূপন। বৃহস্পতিবার নগরীর কাটপট্টি ও লাইনরোড এলাকায় গণসংযোগ করেন তিনি। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে বলেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীকে অন্যান্য প্রার্থীর চেয়ে বেশি সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে। নির্দিষ্ট সময়ের পরও অর্থাৎ গভীর রাত পর্যন্ত তার প্রচারণা কার্যক্রম চলে। তিনি বলেন, ভোটাররা যদি সুষ্ঠুভাবে ভোট দিতে পারেন তবে তিনি বিজয়ী হবেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়