কনস্টেবল বাদল হত্যায় ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড

আগের সংবাদ

দুর্ভোগের অবসান চান নগরবাসী : সুপেয় জলের তীব্র সংকট জলজটের খুলনায়

পরের সংবাদ

এবারো সমাবেশের অনুমতি পাবে না জামায়াত!

প্রকাশিত: জুন ৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

** বিবেচনায় অতীত ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম ** এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি : ডিএমপি **
ইমরান রহমান : আগামী ১০ জুন শনিবার ঢাকায় সমাবেশ করতে পুলিশের অনুমতি পাবে না বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। এরই মধ্যে তাদের আবেদন পর্যালোচনা করে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে কথা বলেছেন ডিএমপির পদস্থ কর্মকর্তারা। জামায়াতের কর্মসূচির অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে শনিবারের কর্মসূচি ঘিরে পুলিশ ও গোয়েন্দারা নিজেদের মধ্যে তথ্য ও অভিজ্ঞতা বিনিময় করেছেন। অতীতে কর্মসূচির নামে জ্বালাও পোড়াও, গাড়িতে পেট্রোল মেরে নিরীহ লোকজন হত্যা, পুলিশের ওপর হামলা এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে দলটির শীর্ষ নেতাদের প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকা উঠে এসেছে পর্যালোচনায়। পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন বাতিলের বিষয়ও রয়েছে। সবমিলিয়ে ৫ তারিখের ন্যায় ১০ জুনও ঢাকায় সমাবেশের অনুমতি পাচ্ছে না দলটি। ডিএমপির একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডিএমপির একাধিক কর্মকর্তা ভোরের কাগজকে বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর অতীত ইতিহাস সন্তোষজনক নয়। বিশেষ করে ২০১৪ সালে জাতীয় নির্বাচনের আগে তারা সারাদেশে জ্বালাও পোড়াওয়ের মাধ্যমে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছিল। মাঠ পর্যায়ে দায়িত্বরত পুলিশের ওপর পরিকল্পিতভাবে অতর্কিত হামলা করেছিল। সে সময় জনসাধারণের সঙ্গে অনেক পুলিশ সদস্যও হতাহতের শিকার হন। যেহেতু সামনে আরেকটি জাতীয় নির্বাচন সন্নিকটে চলে আসছে। তাই জামায়াতে ইসলামীর আবারো সক্রিয় হয়ে ওঠা সন্দেহের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা সমাবেশ ও মিছিলের নামে আবারো কোনো ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম করতে চায় কিনা, সেটিই মুখ্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেই সঙ্গে গত কয়েক মাস ধরে তথ্য আসছে, জাতীয় নির্বাচন ঘিরে তারা সচ্ছল সদস্যদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে আলাদা ফান্ড তৈরির কাজ করছে। কি কারণে এমনটি করা হচ্ছে সেটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
সমাবেশের বিষয়ে গতকাল বুধবার এক অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, জামায়াতকে সমাবেশ করতে দিলে কোনো নাশকতা বা বিশৃঙ্খলার সম্ভাবনা রয়েছে কিনা, তা যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত দেবে ডিএমপি। ১০ জুন জামায়াতকে সমাবেশ করতে দেয়া হবে কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (অপারেশন্স) বিপ্লব কুমার সরকার ভোরের কাগজকে বলেন, এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। জামায়াতে ইসলামীর আবেদন কমিশনার স্যার রিসিভ করেছেন। গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত তিনিই জানাবেন।
ডিএমপি অনুমতি না দিলেও যদি জামায়াত সমাবেশ করে, তাহলে কি ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হবে? জানতে চাইলে তিনি বলেন, যদির উপরে ভিত্তি করে আমি কোনো কিছু বলতে চাই না। আমাদের কথা একদম পরিষ্কার, যেে কোনো রাজনৈতিক দল সভা-সমাবেশ করতে ডিএমপির কাছে অনুমতি চাইতে পারে। এ বিষয়ে কে নিবন্ধিত আর কে অনিবন্ধিত সেটি মুখ্য বিষয় না। দেখার বিষয় হচ্ছে, কেউ সভা সমাবেশের নামে জনসাধারণের জানমালের ক্ষতি করছে কিনা, জননিরাপত্তায় বিঘœ ঘটাচ্ছে কিনা? যদি কোনো সংগঠন তেমনটি করে থাকে, তাহলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, তিন দফা দাবিতে আগামী শনিবার জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে বিক্ষোভ সমাবেশ করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। ইতোমধ্যেই সব কর্মীকে বার্তা দিয়েছে দলটি। শনিবার বড় সমাবেশ করতে চায় তারা। ডিএমপির অনুমতি না পাওয়ায় গত ৫ জুনের কর্মসূচি স্থগিত হলেও এবার অনুমতি পাওয়ার বিষয়ে আশাবাদী তারা।
উল্লেখ্য, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিরোধ, আমিরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানসহ জাতীয় নেতা ও আলেম ওলামাদের মুক্তি এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার দাবিতে আগামী ১০ জুন দুপুর ২টায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে সমাবেশ ও মিছিল করতে চায় জামায়াতে ইসলামী। সমাবেশের অনুমতি চেয়ে গত মঙ্গলবার বিকালে জামায়াতের ৮ সদস্যের প্রতিনিধিদল মিন্টো রোডের ডিএমপি কার্যালয়ে গিয়ে আবেদনপত্র জমা দেন। একই দাবিতে গত ২৯ মে পুলিশের কাছে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনের অনুমতি চাইতে গিয়ে আটক হয়েছিলেন জামায়াতে ইসলামীর চার নেতা। পরে যাচাই-বাছাই শেষে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়েছিল।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়