গণতন্ত্র মঞ্চের হুঁশিয়ারি : সমাবেশে বাধা দিলে পরিণতি ভালো হবে না

আগের সংবাদ

পাহাড় কাটার হিড়িক, দুই ফসলি জমির টপ সয়েল যাচ্ছে ভাটায়

পরের সংবাদ

ই-ট্রাফিক মামলায় রাজস্ব আদায়ে ব্যাপক সাফল্য : সাতক্ষীরা

প্রকাশিত: জুন ৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মসিউর রহমান ফিরোজ, সাতক্ষীরা থেকে : সাতক্ষীরায় ই-ট্রাফিক মামলায় জরিমানা আদায়ে সরকারি রাজস্ব আদায়ে ব্যাপক সাফল্য এসেছে। গত ১১ মাসে এই মামলায় জরিমানা আদায় হয়েছে ১ কোটি ৮৬ হাজার টাকা। এই সব রাজস্ব এসেছে গাড়ির কাগজপত্রসহ সড়কে নানা অনিয়মের মামলা থেকে। অধিকাংশ রাজস্ব এসেছে মোটরসাইকেল ব্যবহারকারীদের আইন অমান্য করার মামলায় জরিমানা আদায়ে।
সরজমিন গিয়ে জানা যায়, সাতক্ষীরায় পুলিশ সুপার কাজী মনিরুজ্জামান (পিপিএম) যোগদানের পর জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নেয়ার ফলে গত প্রায় এক বছরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ব্যাপক উন্নতি হওয়ায় অনেকটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে এ জেলার মানুষ। পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় ট্রাফিক বিভাগের কর্মতৎপরতায় গত জুলাই থেকে মে ২৩ পর্যন্ত ২ হাজার ৮৯২টি ই-ট্রাফিক মামলায় এ রাজস্ব জমা হয়েছে বলে জানা গেছে। যেটি জেলা পুলিশের অভূতপূর্ব সাফল্য বলে মনে করেন অনেকে।
সব কিছুর ঊর্ধ্বে তাদের কর্তব্যপরায়ণতা। তারা অনড় তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে। ঝড়বৃষ্টির মধ্যে সড়ক-মহাসড়কে শুধু একটি ছাতার আশ্রয়ে তাদের দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে। শুধু তাই নয়, তীব্র তাপদাহে একটি ছাতা ও এক বোতল পানি রোডের মাঝে তাদের সঙ্গী। তাদের লক্ষ্য সড়ক আইন প্রতিষ্ঠা করা। অতিরিক্ত গতিতে যান চালানোর বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়াসহ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি সাধনের পাশাপাশি সড়ক আইন শতভাগ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে হেলমেট পরিধান, রেজিস্ট্র্রেশন,ফিটনেসবিহীন গাড়ি, মোটরসাইকেল জব্দসহ গাড়ি, মোটরসাইকেলে ওভারলোডিংয়ের বিরুদ্ধে কঠোর ভূমিকা পালন করতে দেখা গেছে তাদের। যার ফলে বিআরটিএ অফিসে মোটরগাড়ি ব্যবহারকারীদের উপচেপড়া ভিড়। এতে শত শত কোটি টাকা সরকারি রাজস্ব আদায়ের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে ।
সাতক্ষীরা ট্রাফিক বিভাগের সূত্রে জানা গেছে, গত ১১ মাসে জেলাসদরসহ ছয় উপজেলায় ই-ট্রাফিক মামলা থেকে মোট ১ কোটি ৮৬ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করে তা জমা করা হয়েছে সরকারের রাজস্ব খাতে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি সাধনের পাশাপাশি শতভাগ নিশ্চিত করা হয়েছে হেলমেট পরিধান, রেজিস্ট্রেশন, ফিটনেসবিহীন গাড়ি, মোটরসাইকেল জব্দসহ ওভারলোডিং ও নানা ধরনের অন্যায়ের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। নেয়া হচ্ছে অতিরিক্ত গতির বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ। এছাড়াও জেলা জুড়ে অব্যাহত রয়েছে অপ্রাপ্ত বয়স্ক কারো কাছে মোটরসাইকেল হস্তান্তর না করাসহ বিভিন্ন ধরনের সচেতনতামূলক প্রচার-প্রচারণা।
সাতক্ষীরা জেলা ট্রাফিক ইন্সপেক্টর শ্যামল কুমার চৌধুরী (টিআই) বলেন, জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশনায়, অপ্রাপ্ত কারো কাছে মোটরসাইকেল হস্তান্তর না করা, হেলমেট পরিধান, দুই জনের অধিক মোটরসাইকেলে না চড়াসহ বিভিন্ন ধরণের সচেতনতামূলক প্রচার-প্রচারণা করে আসছি। কারণ হেলমেট পরিধান না করে মোটরসাইকেল চালানো বিপজ্জনক। আমি মনে করি, প্রতিটি নাগরিকের আইন মেনে গাড়ি পরিচালনা করা উচিৎ।
আইন অমান্য করে জরিমানা দেয়ার চেয়ে হেলমেট, ড্রাইভিং লাইসেন্স, ফিটনেস, রেজিস্ট্র্রেসনসহ সড়কের সব আইন মেনে গাড়ি পরিচালনা করা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তিনি জেলায় কর্মরত সব সহকর্মীর দায়িত্ব পালনে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে আরো বলেন, সড়ক-মহাসড়কে শৃঙ্খলা, যানজট, সড়ক দুর্ঘটনা রোধে সব সড়ক আইন পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় বাস্তবায়নের কাজ করে যাচ্ছি।
এ বিষয়ে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার কাজী মনিরুজ্জামান (পিপিএম) ভোরের কাগজকে বলেন, একটি দুর্ঘটনা সারা জীবনের কান্না’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে আমরা বিভিন্ন গণসচেতনতামূলক কর্মসূচির মাধ্যমে মোটরসাইকেল আরোহীদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করে শতভাগ হেলমেট ব্যবহার নিশ্চিত ও অতিরিক্ত গতিতে মোটরসাইকেল চালানো এড়াতে পেরেছি।
ফলে, সড়ক মহাসকড়কে দুর্ঘটনাও অনেকটা হ্রাস পেয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন,আমি সাতক্ষীরায় যোগদানের পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি। আশা করি জেলার মানুষ এখন স্বত্বিতে বসবাস করছে।
এছাড়াও ধর্মীয় উৎসবের দিন বিশেষ করে ঈদ, পূজা-পার্বণে শুধুমাত্র সড়ক দুর্ঘটনায় হাত-পা ভেঙে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে শত শত রোগী। অনেকে চিরনিদ্রায় শায়িত হয়েছে। আবার অনেকে চিরতরে পঙ্গু হয়ে ফিরেছেন পরিবারের কাছে। আমি সাতক্ষীরায় যোগদানের পর বিগত ঈদ, পূজা-পার্বণে পুলিশ ও ট্রফিক পুলিশের কঠোর পরিশ্রম ও কর্ম তৎপরতায় দুই একটি বিছিন্ন ঘটনা ছাড়া আর কোনো বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেনি। দিন দিন ফিরে আসছে সড়কে শৃঙ্খলা। কমে আসছে সড়ক মহা-সড়কের যানজট। আর সারা জীবনের কান্না হিসেবে খ্যাত সড়ক দুর্ঘটনা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়