করমণ্ডল এক্সপ্রেস : চেন্নাইগামী ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত শতাধিক, বাংলাদেশি যাত্রী থাকার আশঙ্কা

আগের সংবাদ

দেয়াল

পরের সংবাদ

মিষ্টি আলুতে ভাগ্যবদলের স্বপ্ন দেখছেন সিলেটের কৃষকরা

প্রকাশিত: জুন ৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

খালেদ আহমদ, সিলেট ব্যুরো : মিষ্টি আলু লাভজনক হওয়ায় এই আলু চাষে ঝুঁকছেন সিলেট বিভাগের বিভিন্ন উপজেলার কৃষকরা। গত কয়েক বছর ধরে তারা বেশ উৎসাহ নিয়ে মিষ্টি আলু চাষ করছেন। এর মাধ্যমে এখন ভাগ্যবদলেরও স্বপ্ন দেখছেন।
সিলেট কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর সিলেট বিভাগের ১,৩৮৯ হেক্টর জমিতে মিষ্টি আলুর চাষ হয়েছে। এর মধ্যে সিলেট জেলার ১৬২, মৌলভীবাজার জেলার ৩৬৩, হবিগঞ্জ জেলার ১৮২ ও সুনামগঞ্জ জেলার ৬৮২ হেক্টর জমি। সব মিলিয়ে এ বছর ২৪ হাজার ৫৯৫ টন মিষ্টি আলু উৎপাদন হয়েছে। সুনামগঞ্জ জেলায় সবচেয়ে বেশি মিষ্টি আলুর চাষ হয়েছে। গত কয়েক বছর ধরে বাজারে যেমন এর চাহিদা বেড়েছে তেমনি দামও ভালো পাওয়া যাচ্ছে। মিষ্টি আলু চাষে সার তেমন একটা প্রয়োগ করতে হয় না বলে খরচ কম। এ ফসলে তেমন কোনো রোগ-বালাইও দেখা যায় না। তাই এটি চাষে অল্প পুঁজি ও শ্রমে অধিক লাভ পাওয়া যায়।
মিষ্টি আলু চাষ করে সফলতা পেয়েছেন সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার খালপার গ্রামের কৃষক সৈয়দুর রহমান। এ বছর কন্দাল ফসল উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় তিনি দ্বিতীয়বারের মতো ১৫ শতক জমিতে বারি ৫টি জাতের মিষ্টি আলু চাষ করেছেন। সৈয়দুর রহমান বলেন, কৃষি অফিস থেকে দ্বিতীয়বারের মতো লতি ও সার পেয়ে বারি-১২, বারি-১৪, বারি-১৫, বারি-১৬ ও বারি-১৭ জাতের মিষ্টি আলু চাষ করি। গত বছর আশানুরূপ ফসল পেয়ে এ বছর একটু বেশি জমিতে চাষ করেছি। এ পর্যন্ত চাষ বাবদ প্রায় ১৫ হাজার টাকা খরচ হলেও ৫০ হাজার টাকার বেশি দাম পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। উৎপাদন খরচ কম ও ভালো মূল্য পাওয়ায় আগামীতে অনেক কৃষক এটি চাষ করবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। দক্ষিণ সুরমার বিভিন্ন এলাকায় একাধিক প্রজাতির মিষ্টি আলুর চাষ হয়েছে। সবচেয়ে বেশি হয়েছে কামালবাজার এলাকায়। দক্ষিণ সুরমা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রাজিব হোসেন বলেন, মিষ্টি আলু স্বল্প জীবনকালীন এবং অত্যন্ত পুষ্টিসমৃদ্ধ উচ্চমূল্যের একটি সবজি। এখানকার আবহাওয়া এবং মাটি মিষ্টি আলু চাষের জন্য উপযোগী এবং ঝুঁকিও কম। এটি মাটিকে ঢেকে রাখে বলে মাটিতে অনেক দিন রস থাকে, আগাছা কম হয় এবং এর পাতা পচে উৎকৃষ্ট সার হয়।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, সিলেটের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মাহমুদুল ইসলাম নজরুল ভোরের কাগজকে বলেন, সিলেটের বিভিন্ন এলাকায় মিষ্টি আলু চাষ হয়েছে। বিশেষ করে সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ, বিশ্বম্ভরপুর, ধর্মপাশা ও সুনামগঞ্জ সদর এলাকায় নতুন নতুন জাতের চাষ হয়েছে একটু বেশি। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন জাতগুলো এ অঞ্চলে ব্যাপক আকারে চাষের সম্ভাবনা তৈরি করেছে। অনেক কৃষকই মিষ্টি আলু চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, সিলেট অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ মো. মোশাররফ হোসেন খান বলেন, মিষ্টি আলু চাষে সিলেটের মাটি খুবই উপযুক্ত। বর্তমানে মিষ্টি আলুর বহুমাত্রিক ব্যবহার হচ্ছে। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে মিষ্টি আলুর জাত আবিষ্কার হয়েছে। বিভাগের বিভিন্ন এলাকার কৃষকরা নতুন নতুন জাতের মিষ্টি আলু চাষ করে লাভবান হচ্ছেন। খাদ্য ও পুষ্টির চাহিদা মিটিয়ে এর মাধ্যমে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়া যায়। তিনি বলেন, গত কয়েক বছর ধরে সিলেটের চাষিরা মিষ্টি আলু চাষে এগিয়ে এসেছেন। ফলে বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলে মিষ্টি আলু নিয়ে নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়