তারেক-জোবায়দার বিরুদ্ধে আরো দুজনের সাক্ষ্য

আগের সংবাদ

সিগন্যালের ভুলেই দুর্ঘটনা : শোকে কাতর পুরো ভারত > তিন ট্রেনের সংঘর্ষে নিহত বেড়ে ২৮৮, আহত সহস্রাধিক

পরের সংবাদ

পর্যটক হারাচ্ছে লাউচাপড়া অবসর বিনোদনকেন্দ্র : শুধু দুটি ওয়াচ টাওয়ার ও একটি কৃত্রিম লেক

প্রকাশিত: জুন ৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

রাশেদুল ইসলাম রনি, বকশীগঞ্জ (জামালপুর) থেকে : ভারতীয় সীমান্তঘেঁষা বকশীগঞ্জ উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে গারো পাহাড়ের সারি আর বনভূমি। ১৯৯৬ সালে উপজেলার ধানুয়া কামালপুর ইউনিয়নের লাউচাপড়ায় অবসর বিনোদন কেন্দ্রটি গড়ে তোলে জামালপুর জেলা পরিষদ। প্রতি বছর এই বিনোদন কেন্দ্রে সমাগম ঘটে ভ্রমণ পিয়াসীদের। তবে দিন দিন পর্যটক হারাচ্ছে এই বিনোদন কেন্দ্রটি। পর্যটকরা বলছেন, বিশাল এই পর্যটন কেন্দ্রে রয়েছে শুধু দুটি ওয়াচ টাওয়ার ও একটি কৃত্রিম লেক। এখানে অভাব রয়েছে বিশুদ্ধ পানির, ক্যান্টিন, মসজিদ ও আধুনিক রাইডার। তাই দিন দিন পর্যটক কমছে এই বিনোদন কেন্দ্রটিতে। এতে ক্ষতির মুখে পড়েছেন স্থানীয় ব্যবসায়ী ও বিনোদন কেন্দ্রের ইজারাদাররা।
ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল থেকে বেড়াতে আসা নাঈম ইসলাম বলেন, এত বড় বিশাল পর্যটন কেন্দ্রে কিছুই নেই। শুধু দুটি টাওয়ার আছে। কোনো কিছু না থাকার কারণে পর্যটক আসতে চায় না। টাঙ্গাইল জেলার মধুপুর উপজেলা থেকে ঘুরতে আসা সাহেলা বেগম বলেন, এখানে শুধু একটা পাহাড়। পাহাড়ের ওপর থেকে আসার পরে দেখার আর কিছু নাই। আর এখানে খাবারের পরিবেশটা ভালো নয়। এই রিসোর্টে ক্যান্টিন থাকলে ভালো হতো। জামালপুর শহর থেকে আসা শাওন মোল্লা নামে একজন বলেন, এখানে যদি ভালো একটা নলকূপের ব্যবস্থা থাকত, একটা মসজিদ থাকত তাহলে আমাদের খাবারের পানির সমস্যা থাকত না। নামাজের সময় নামাজ পড়তে পারতাম। এগুলোর ঘাটতি আছে এখানে। স্থানীয়রা বলছেন, কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে দীর্ঘদিন ধরে উন্নয়ন না হওয়ায় দিন দিন পর্যটক শূন্য হয়ে পড়ছে এই বিনোদন কেন্দ্রটি। লাউচাপড়ার বাসিন্দা রাত্রি বলেন, আমাদের লাউচাপড়া বিনোদন কেন্দ্র দীর্ঘ দুই যুগ আগে প্রতিষ্ঠিত। কিন্তু এই জায়গায় কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে এবং বিভিন্ন রাইড, শিশুপার্ক না থাকার কারণে দিন দিন পর্যটকশূন্য হয়ে যাচ্ছে। পর্যটক না থাকায় প্রতিনিয়ত ক্ষতির মুখে পড়ছে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।
স্থানীয় ব্যবসায়ী ফারুক মিয়া বলেন, আগে বিক্রি করেছি দৈনিক ৫-১০ হাজার টাকা। আর এখন বিক্রি করছি ২ থেকে ৩ হাজার টাকা। কোনো দিন ৫০০ টাকাও বিক্রি হয় না। আরেক ব্যবসায়ী হোসেন আলী বলেন, পর্যটক আসে না তাই ব্যবসা একদম কম। ঘর ভাড়াই দিতে পারে না ব্যবসায়ীরা। এভাবে চলতে থাকলে এখান থেকে ব্যবসা গুটিয়ে অন্যত্র চলে যাওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় দেখছি না।
এই বিনোদন কেন্দ্রে পর্যটক বাড়াতে হলে প্রয়োজন ঝুলন্ত ব্রিজ, বিভিন্ন রাইডারসহ বিনোদনের সব ব্যবস্থা- এমনটাই মনে করছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় বাসিন্দা জয় দাংগো বলেন, আমাদের স্পটে একটা ঝুলন্ত ব্রিজ করার কথা। যদি সেটাও হতো তাহলে দর্শনার্থীরা আমাদের স্পটে আসত। লাউচাপড়া অবসর বিনোদন কেন্দ্রের ইজারাদারদের একজন ছামিউল মিয়া বলেন, আমরা ২৩ লাখ টাকা দিয়ে এবার বিনোদন কেন্দ্রটি ইজারা নিয়েছি। দিন দিন পর্যটক খুব কম আসছে। এবার কমপক্ষে ৭-৮ লাখ টাকা লোকসান হবে আমাদের। গতবারও আমরা কয়েক লাখ টাকা লোকসান দিয়েছি। এভাবে চলতে থাকলে আমরা আর কোনো বিনোদন কেন্দ্র ইজারা নেব না। তবে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার আশ্বাস দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এসব বিষয়ে জামালপুর জেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মুনমুন জাহান লিজা বলেন, লাউচাপড়া অবসর বিনোদন কেন্দ্র নিয়ে আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে। ধারাবাহিকভাবে পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়ন করা হবে। এখানে অর্থ পাওয়ার বিষয় রয়েছে। বরাদ্দের বিষয় রয়েছে। আমরা সামনে এটার উন্নয়ন করব।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়