ভর্তিতে অতিরিক্ত অর্থ আদায় ৪ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে শোকজ

আগের সংবাদ

বাজেট বাস্তবায়ন করা সম্ভব : বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী

পরের সংবাদ

মরিনহোর শিরোপারথ থামিয়ে সপ্তম ইউরোপা জিতল সেভিয়া

প্রকাশিত: জুন ২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২, ২০২৩ , ১:২৪ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : ইউরোপা লিগের কিং খ্যাত সেভিয়া এবারো তাদের নামের প্রতি সুবিচার করেছে। জোসে মরিনহোর রোমাকে ফাইনালে টাইব্রেকারে ৪-১ গোলে হারিয়ে সপ্তমবারের মতো এই টুর্নামেন্টের শিরোপা ঘরে তুলেছে তারা। এর আগে ছয়বার ফাইনাল খেলে প্রতিবারই জিতেছিল মেন্ডিলিবারের শিষ্যরা। অন্যদিকে রোমার কোচ জোসে মরিনহো পাঁচবার ইউরোপীয় ফাইনালে উঠে একবারো হারেননি। তাই গতকালের ম্যাচটি ছিল যে কোনো এক পক্ষের জয়ের রেকর্ড ভাঙার দিন। শেষ পর্যন্ত নিজেদের রেকর্ড টিকিয়ে রাখে সেভিয়া।ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ ফাইনালে পরাজিত হয়ে হারের পদক ভক্তের কাছে ছুড়ে মারেন মরিনিও। হারের কোনো স্মৃতি সংরক্ষণে রাখেন না বলেও জানান এই পর্তুগিজ কোচ।
ইউরোপা লিগের ফাইনাল ম্যাচটি গতকাল শেষ হয় টানটান উত্তেজনার মধ্য দিয়ে। নির্ধারিত ৯০ মিনিট শেষে রোমা ও সেভিয়া ১-১ সমতায় থাকায় ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত মিনিটে। সেখানেও তাদের ব্যবধান ১-১ গোলেই সীমাবদ্ধ থাকে। শেষ পর্যন্ত ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। রোমার হয়ে প্রথম শট নেন জিয়ানলুকা মানচিনি। তার শট আটকে দিয়ে রোমাকে পিছিয়ে দেয় সেভিয়ার গোলরক্ষক ইয়াসিন বুনো। এরপর রোমার জালে বল জড়িয়ে সেভিয়াকে এগিয়ে নেন রজার আইবানেজ। শেষ পর্যন্ত সেভিয়ার আর্জেন্টাইন তারকা গনসালো মন্টিয়েলের গোলে নিজেদের সপ্তম শিরোপা নিশ্চিত করে লুইস মেন্ডিলিবারের শিষ্যরা।
মরিনহোনর ষষ্ঠ ফাইনালের শুরুটা ভালোভাবেই করে তার শিষ্যরা। প্রথম মিনিট থেকেই তারা সেভিয়াকে চাপে রাখার চেষ্টা করে। নিজেদের রক্ষণভাগ সামলে তারা সেভিয়ার ডি বক্সে হানা দিতে শুরু করে। সেভিয়া নিজেদের থিতু করে নেয়ার মধ্যেই রোমা তাদের রক্ষণে কয়েকবার হামলা চালায়। একের পর এক আক্রমণ করার সুবাদে ১১তম মিনিটেই এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ আসে রোমার কাছে। তবে লিওনার্দো স্পিনাৎসোলার শট ঠেকিয়ে জাল রক্ষা করেন সেভিয়া গোলরক্ষক। এক পর্যায়ে খেই ফিরে পেয়ে বল দখলে এগিয়ে যায় সেভিয়া। তখন বল কম সময়ের জন্য পায়ে পেলেও রোমার আক্রমণভাগ তাদের দায়িত্বটা ঠিকভাবেই পালন করে। ৩২ মিনিটের সময় মানচিনির দারুণ এক পাস থেকে বল পান রোমার আর্জেন্টাইন তারকা পাওলো দিবালা। তাকে মার্ক করা ডিফেন্ডারকে ফাঁকি দিয়ে তিনি জালের দেখা পান। এই গোলের মধ্য দিয়ে ১-০ ব্যবধানে লিড নেয় রোমা। গোল হজম করে সমতায় ফেরার জন্য মরিয়া হয়ে উঠে সেভিয়া। প্রথমার্ধে একাধিক চেষ্টা করেও তারা সফল হতে পারেনি।
বিরতির পর মাঠে নেমে অধিক আক্রমণাত্মক সেভিয়াকে দেখা যায়। দ্রুত গতির আক্রমণ করে তারা কয়েকবার গোল পোস্টের কাছাকাছি গেলেও জালের দেখা পায়নি। ৫৫তম মিনিটে জেসুস নাভাগের ক্রসে আসা বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে নিজেদের পোস্টকেই লক্ষ্য বানান মানচিনি। রোমার এই খেলোয়াড়ের নিজের গোলেই সমতায় ফেরে সেভিয়া। এরপর সমতার ম্যাচে এগিযে যাওয়ার জন্য দুই দলই চেষ্টা চালায়। তবে নির্ধারিত ৯০ মিনিট শেষেও কোনো দল কাক্সিক্ষত গোলের দেখা পায়নি। অতিরিক্ত সময়ে খেলা গড়ালে সেখানেও দেখা যায় একই দৃশ্য। শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকারে সামর্থ্য প্রমাণ করে শিরোপা নিশ্চিত করে সেভিয়া।
গতকালের ফাইনালে নতুন অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হন রোমার কোচ জোসে মরিনহো। এর আগে ইউরোপীয় প্রতিযোগিতায় পাঁচটি ফাইনাল খেলেছে তার অধীনে থাকা দল।
প্রতিটি ফাইনালেই তার শীষ্যরা শিরোপার ছোঁয়া পেয়েছে। তবে গতকাল প্রথমবারের মতো ইউরোপীয় ফাইনালে পরাজিত মরিনিও। ম্যাচ শেষে তাকে রানার্সআপ কোচের পদক দেয়া হলে তিনি পদকটি এক ক্ষুদে ভক্তের দিকে ছুড়ে মারেন। এমন কাজের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পদক ছুড়ে মেরেছি। আমি হারের পদক চাই না, এগুলো সংরক্ষণও করি না, তাই ভক্তকে দিয়ে দিয়েছি।’
এ এস রোমার সঙ্গে ২০২৪ সালে এই পর্তুগিজ কোচের চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে। ম্যাচ শেষে তার ভবিষ্যৎ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার ভবিষ্যৎ? কয়েক মাস আগেও বলেছিলাম অন্য কোনো ক্লাব যোগাযোগ করলে সেটা মালিককেই আগে বলতাম। আমি কোনো কিছু গোপন করি না। গত ডিসেম্বরে পর্তুগাল থেকে যখন প্রস্তাব এসেছিল, তখনই ক্লাবকে জানিয়েছিলাম। এরপর থেকে কারো সঙ্গে কথা হয়নি। আমি রোমায় থাকতে চাই। তবে আমি এবং আমার খেলোয়াড়দের আরো ভালো কিছু প্রাপ্য।’
অন্যদিকে শিরোপার স্বাদ না পেলেও গতকালের ইউরোপা ফাইনালে রেকর্ড গড়ে লিওনেল মেসির পাশে নাম লিখেন রোমার আর্জেন্টাইন তারকা পাওলো দিবালা।
২০১১ সালে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে বার্সেলোনার হয়ে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে গোল করেছিলেন মেসি। সেই ফাইনালে বার্সেলোনা ৩-১ গোলে হারিয়েছিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে। মেসি ছাড়াও বার্সার হয়ে গোল করেছিলেন পেদ্রো ও ডেভিড ভিয়া। ইউনাইটেডের হয়ে গোল করেছিলেন ওয়েন রুনি। লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামের সেই ফাইনালের পর ইউরোপিয়ান ক্লাব ফুটবলে আর কোনো ফাইনালে আর্জেন্টাইন ফুটবলাররা গোল করতে পারেননি। মেসির পর দ্বিতীয় আর্জেন্টাইন হিসেবে ইউরোপার ফাইনালে প্রথম গোল করেন দিবালা। চোট সমস্যার কারণে গতকালের ম্যাচে খেলার কথা ছিল না দিবালার। ফিজিওর সহায়তায় তিনি মাঠে নামেন। গোল করেই তিনি ছুটে যান কর্নার পতাকার দিকে দাড়িয়ে থাকা ফিজিওর দিকে। সেখানে তাকে জড়িয়ে ধরে গোল উদযাপন করেন এই আর্জেন্টাইন ফুটবলার।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়