ভর্তিতে অতিরিক্ত অর্থ আদায় ৪ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে শোকজ

আগের সংবাদ

বাজেট বাস্তবায়ন করা সম্ভব : বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী

পরের সংবাদ

নিত্যপণ্যের তুলনায় আরেক দফা সস্তা হবে তামাকপণ্য : প্রজ্ঞা ও আত্মার বাজেট প্রতিক্রিয়া

প্রকাশিত: জুন ২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : প্রস্তাবিত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট পাস হলে নিত্যপণ্যের তুলনায় তামাকপণ্য আরেক দফা সস্তা হবে, তরুণরা তামাক ব্যবহারে বিশেষভাবে উৎসাহিত হবে, তামাক ব্যবহারজনিত মৃত্যু ও অসুস্থতা বাড়বে এবং একই সঙ্গে এ খাতে সরকারের স্বাস্থ্য ব্যয় বাড়বে বলে মনে করছে বেসরকারি গবেষণা ও এডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রগতির জন্য জ্ঞান (প্রজ্ঞা) ও এন্ট্রি টোব্যাকো মিডিয়া এলায়েন্স (আত্মা)। তাৎক্ষণিক বাজেট প্রতিক্রিয়ায় গতকাল বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে একথা জানানো হয়।
এতে বলা হয়, তামাকবিরোধীদের প্রস্তাব আমলে না নেয়ায় সরকার অতিরিক্ত রাজস্ব আয়ের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকারও বাধাগ্রস্ত হবে। প্রস্তাবিত বাজেটে নি¤œ স্তরে ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরা মূল্য ৪০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। অর্থাৎ প্রতি শলাকার দাম বাড়ানো হয়েছে মাত্র ৫০ পয়সা (১২ দশমিক ৫০ শতাংশ)। এই স্তরের করহার প্রায় অপরিবর্তিত রেখে কেবল মূল্যস্তর বাড়ানোর কারণে বর্ধিতমূল্যের একটা উল্লেখযোগ্য অংশ তামাক কোম্পানির পকেটে চলে যাবে। প্রস্তাবিত বাজেটে মধ্যম স্তরের ১০ শলাকা সিগারেটের দাম ৬৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৬৭ টাকা (৩ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ), উচ্চ স্তরে ১১১ টাকা থেকে ১১৩ টাকা (১ দশমিক ৮০ শতাংশ) এবং প্রিমিয়াম বা অতি উচ্চ স্তরের ১০ শলাকার দাম ১৪২ টাকা থেকে ১৫০ টাকা (৫ দশমিক ৬৩ শতাংশ) নির্ধারণ করা হয়েছে। সম্পূরক শুল্ক অপরিবর্তিত রেখে প্রতি ১০ গ্রাম জর্দা ও গুলের খুচরা মূল্য যথাক্রমে ৫ টাকা ও ৩ টাকা বাড়ানো হয়েছে। বিড়ির দাম ও করহার অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।
কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য থেকে দেশের ৮টি মহানগরীর (ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট, বরিশাল, রংপুর এবং ময়মনসিংহ) নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের গড় খুচরা মূল্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ২০২২ সালের (৭ মার্চ) তুলনায় ২০২৩ সালে (৭ মার্চ) খোলা আটার দাম বেড়েছে ৭১ দশমিক ৭ শতাংশ, ব্রয়লার মুরগির দাম ৫২ দশমিক ৯ শতাংশ, চিনির দাম ৪৩ দশমিক ৯ শতাংশ, ডিমের দাম ২২ দশমিক ৩ শতাংশ, গুঁড়ো দুধের দাম ২১ দশমিক ২ শতাংশ, মসুর ডালের দাম ১৪ দশমিক ৫ শতাংশ এবং মোটা চালের দাম বেড়েছে ৯ দশমিক ৯ শতাংশ। অথচ প্রস্তাবিত বাজেটে তামাকপণ্যের দাম নামমাত্র বাড়ানো অথবা অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। ফলে নিত্যপণ্যের তুলনায় তামাকপণ্য আরো সস্তা হয়ে পড়বে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ।
প্রস্তাবিত বাজেটের প্রতিক্রিয়ায় প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের বলেন, নিত্যপণ্যের তুলনায় সিগারেট বাজারের ৭৫ শতাংশ দখলে থাকা কমদামি সিগারেটের মূল্যস্তর বা খুচরা মূল্য সামান্য পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। সুনির্দিষ্ট করারোপের মাধ্যমে এই স্তরের সিগারেটের দাম বাড়িয়ে জনগণের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে নিয়ে যাওয়ার দাবি জানাচ্ছি। প্রস্তাবিত বাজেটে ই-সিগারেট ও ভেপিং পণ্য আমদানির সুযোগ অব্যাহত রাখা হয়েছে, যা তরুণ জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়াবে। তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের খসড়া সংশোধনী দ্রুত চূড়ান্ত করার মাধ্যমে ই-সিগারেট ও ভেপিং পণ্য নিষিদ্ধ করতে হবে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে ৩৫ দশমিক ৩ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক ব্যবহার করেন এবং তামাক ব্যবহারজনিত রোগে প্রতি বছর ১ লাখ ৬১ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। চূড়ান্ত বাজেটে তামাকবিরোধীদের প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা হলে প্রায় ১৪ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক ধূমপান থেকে বিরত থাকতে উৎসাহিত হবে, দীর্ঘমেয়াদে ৪ লাখ ৮৮ হাজার প্রাপ্তবয়স্ক এবং ৪ লাখ ৯২ হাজার তরুণ জনগোষ্ঠীর অকাল মৃত্যু রোধ করা সম্ভব হবে এবং সিগারেট খাত থেকে গত বছরের তুলনায় সরকারের ৯ হাজার ৬শ কোটি টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব আয় হবে। এই বাড়তি রাজস্ব আইএমএফের ঋণ শর্ত পূরণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়