গ্রামীণ কল্যাণ : চাকরিচ্যুত শ্রমিকদের লভ্যাংশ দেয়ার রায়ে ৬ মাসের স্থিতাবস্থা

আগের সংবাদ

সংকট কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চ্যালেঞ্জ

পরের সংবাদ

জিএমপির নতুন কমিশনার হচ্ছেন মাহাবুব আলম

প্রকাশিত: জুন ১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) কমিশনার মোল্লা নজরুল ইসলামকে সরিয়ে দেয়া হচ্ছে দুয়েক দিনের মধ্যেই। তার স্থলাভিষিক্ত হবেন এপিবিএনে কর্মরত ডিআইজি মাহবুব আলম। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের একাধিক কর্মকর্তা গতকাল বুধবার দুপুরে ভোরের কাগজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। বিসিএস ১৮ ব্যাচের কর্মকর্তা মাহাবুব আলমের বাড়ি কুমিল্লা জেলার হোমনার খোদেদাউদপুর গ্রামে।
জানা গেছে, একাধিক অভিযোগের প্রেক্ষাপটে মোল্লা নজরুল ইসলামকে বদলির সিদ্ধান্ত হয়েছে আরো আগেই। তবে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের জন্য তা আটকে ছিল। অবশ্য ওই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর ২৫ এপ্রিল নির্বাচন কমিশনের কাছে মতামত চেয়ে চিঠি পাঠায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এর সন্তোষজনক জবাব না পাওয়ায় বদলি কার্যকর করা যায়নি।
মাহাবুব আলম ১৯৯৯ সালের ২৫ জানুয়ারি পুলিশ বাহিনীতে যোগ দেন। একসময় তিনি ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশে যুগ্ম কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
মাহবুব আলম তার বর্ণাঢ্য কর্মজীবনে টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার (এসপি) হিসেবে কর্মরত থাকা অবস্থায় লৌহজং নদের তীরে গড়ে তোলেন এসপি পার্ক। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, টাঙ্গাইল শহরের পুলিশ লাইন্সের বিপরীত দিকে লৌহজং নদের তীরে ছিল অবৈধ স্থাপনা। সেখানে গড়ে উঠা বস্তিতে বিক্রি হতো মাদক। অপরাধীদের আনাগোনার কারণে সাধারণ মানুষ সন্ধ্যার পর ওই এলাকায় যেত না। ২০১৬ সালে মাহবুব আলম সেখানে একটি পার্ক গড়ে তোলার উদ্যোগ নেন। স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে মতবিনিময় করে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেন। পরে নদী খনন ও তীর বাঁধাই করে গড়ে তোলা হয় পার্কটি। পুলিশ লাইন্স মোড় থেকে জেলা কারাগার পর্যন্ত নদীর দুই তীর দিয়ে প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে এই পার্ক। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে উদ্বোধনের পর থেকে জনসাধারণ বিনা খরচে উপভোগ করতে পারছেন বিনোদন কেন্দ্রটি। তখন এসপির এ ধরনের মহতী উদ্যোগের প্রশংসা ছড়িয়ে পড়ে দেশব্যাপী।
এখানেই থেমে থাকেননি এই চৌকস কর্মকর্তা। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশে দায়িত্ব পালনকালে টেকনোলজিক্যাল সাপোর্ট উন্নত করায় জোর দেন তিনি। আন্তরিক প্রচেষ্টায় সেটিও করতে সক্ষম হন। আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নে (এপিবিএন) গিয়েও একই ধরনের উদ্যোগ নেন। তার প্রচেষ্টায় টেকনোলজিক্যাল বিষয়ে আমূল পরিবর্তন এসেছে বাহিনীটিতে। বর্তমানে প্রতি মাসে গড়ে ৩০০ মোবাইল উদ্ধার করছে এপিবিএন। এ সংখ্যা আরো বাড়বে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। আমূল পরিবর্তন এসেছে অপারেশনাল কার্যক্রমেও। আগে সংস্থাটি অপারেশনে অন্যসব সংস্থা থেকে পিছিয়ে থাকলেও এখন আর সেই দুরাবস্থা নেই। গোয়েন্দা তথ্য ও অভিযোগের ভিত্তিতে যে কোনো অভিযান পরিচালনা করছে সংস্থাটি।
অন্যদিকে মোল্যা নজরুল ইসলাম গাজীপুরের পুলিশ কমিশনার হিসেবে যোগদানের পর পরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধ, মূল সড়কে অটোরিকশা চলাচল নিষিদ্ধ, লাইসেন্সবিহীন যানবাহনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং যানজট কমাতে বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়েছেন। এর মধ্যেই তার বিরুদ্ধে চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি ও তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন নানা অভিযোগের আঙুল তুলেন। স্থানীয়দের দাবি, মাহির শ্বশুরবাড়ির লোকজন পরিবহন ব্যবসা ও বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত। সব মিলিয়ে ঘোলাটে পরিস্থিতিতে মোল্যা নজরুলের বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগের তদন্তে নামে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স। অভিযোগ যায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়েও। অবশেষে দুয়েক দিনের মধ্যে তাকে গাজীপুর থেকে সরিয়ে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে সংযুক্ত করা হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়