গ্রামীণ কল্যাণ : চাকরিচ্যুত শ্রমিকদের লভ্যাংশ দেয়ার রায়ে ৬ মাসের স্থিতাবস্থা

আগের সংবাদ

সংকট কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চ্যালেঞ্জ

পরের সংবাদ

চট্টগ্রামে ১৪ দলের গণসমাবেশ : দেশি বিদেশি অপশক্তিকে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান

প্রকাশিত: জুন ১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম অফিস : চট্টগ্রাম নগরীতে ১৪ দলের গণসমাবেশে নেতাদের উপস্থিতিতেই কয়েক দফা চেয়ার ছোঁড়াছুঁড়ি ও মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও যুবলীগ নেতা ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরীসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন। বুধবার বিকালে নগরীর কোতোয়ালি থানার লালদীঘি এলাকায় জেলা পরিষদ চত্বরে সমাবেশস্থলে এ ঘটনা ঘটেছে। দেশের শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং উন্নয়ন ধারাবাহিকতা বানচালে দেশি বিদেশি ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের উদ্যোগে এই গণসমাবেশের আয়োজন করা হয়। ঘটনার সময় গণসমাবেশের মঞ্চে ১৪ দল চট্টগ্রামের সমন্বয়ক খোরশেদ আলম সুজন, নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনসহ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার বিকালে সমাবেশ শুরুর পর একপর্যায়ে পাল্টাপাল্টি স্লোগান শুরু হয়। এর মধ্যেই হঠাৎ চেয়ার ছোঁড়াছুঁড়িতে লিপ্ত হতে দেখা গেছে মঞ্চের বিপরীতে বসে থাকা কর্মীদের মধ্যে, যাদের অধিকাংশ তরুণ-যুবক। এর মধ্যেই ছোড়া ইটের আঘাতে আহত হন নগরীর ১৩ নম্বর পাহাড়তলী ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরী। খোরশেদ আলম সুজন মঞ্চ থেকে নেমে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন। এরপরও দফায়-দফায় মারামারিতে লিপ্ত হন কর্মীরা। এর ফলে গণসমাবেশের কার্যক্রম প্রায় আধাঘণ্টা বন্ধ ছিল। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজ, ওমরগনি এম ই এস কলেজ ও ইসলামিয়া কলেজ ছাত্রলীগের কর্মী সমর্থকদের মধ্যে এই সংঘর্ষ হয়।
সমাবেশে দেয়া বক্তব্যে মারামারিতে লিপ্ত নেতাকর্মীদের উদ্দেশে চট্টগ্রামে ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি খোরশেদ আলম সুজন বলেন, ‘যারা মারামারি করেছে, তারা মারামারির উদ্দেশ্য নিয়েই এসেছে। মারামারি করতে আসলে লালদীঘি মাঠে আসেন। মারামারি করার ব্যবস্থা আমরা করে দেব। সমাবেশ মারামারি করার জায়গা নয়।’
আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, ‘যারা সমাবেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চায়, তারা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী হতে পারে না। বড় সংগঠনে পছন্দ-অপছন্দ থাকতে পারে। তাই বলে একে অপরের বিরুদ্ধে সংঘর্ষে জড়াতে পারি না। আমরা সবসময় এটা বলি। তবুও অনেকে উদ্দেশ নিয়ে এখানে আসেন। ষড়যন্ত্র করেন। মিছিল নিয়ে এসে বিশৃঙ্খলা করেন। এরা অনুপ্রবেশকারী।’ তবে মারামারির বিষয়ে জানতে চাইলে নগর ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরান হোসেন ইমু বলেন, ১৪ দলের সমাবেশ পন্ড করতে পরিকল্পিতভাবে ঘটনা ঘটানো হয়েছে। বিএনপি-জামায়াতের কর্মীরা মিছিলে ঢুকে সমাবেশে এসে কোনো ধরনের উসকানি ছাড়াই ইট-পাটকেল ও চেয়ার ছোঁড়াছুঁড়ি শুরু করে। উসকানি দিয়ে তারা ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে জড়াতে বাধ্য করেছে। কোতোয়ালি থানা পুলিশের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দুইপক্ষে সংঘর্ষ হয়েছে। আমরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি। কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে সেটা আমরা খতিয়ে দেখছি।’
আওয়ামী লীগ নেতারা ও পুলিশের হস্তক্ষেপে প্রায় পৌনে একঘণ্টা পর পরিস্থিতি শান্ত হলে সমাবেশের কার্যক্রম আবার শুরু হয়। চট্টগ্রাম নগর ১৪ দলের সমন্বয়ক খোরশেদ আলম সুজনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় বক্তব্য রাখেন, নগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন বাবুল, ওয়ার্কার্স পার্টি চট্টগ্রামের সভাপতি এডভোকেট আবু হানিফ, সাধারণ সম্পাদক শরীফ চৌহান, জাসদ নেতা জসীম উদ্দিন বাবুল, গণআজাদী লীগের নজরুল ইসলাম আশরাফী, ন্যাপ (মোজাফফর) নেতা ফয়েজ উল্লাহ্ মজুমদার, গণতন্ত্রী পার্টির নেতা স্বপন সেন, সাম্যবাদী দলের অমূল্য বড়–য়া, গণআজাদী লীগের খোরশেদ আলম, জেপির ডা. বেলাল মৃধা, কাউন্সিলর জহর লাল হাজারী, নীলু নাগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি দেবাশীষ নাথ দেবু, সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান আজিজ প্রমুখ।
সমাবেশে নেতারা বলেন, কোনো পরাশক্তির নিষেধাজ্ঞায় বাংলাদেশ পরাভব মানেনি, মানবে না। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে যখন নজিরবিহীন গণহত্যা চলেছিল, তাকে মদদ দিয়েছিল যে দেশটি এবং ১৯৭৪ সালে কৃত্রিম দুর্ভিক্ষ সৃষ্টির নীলনকশাকারী সেই দেশটিকে আমরা চিনি ও জানি। ওই দেশটিতে এখন অর্থনৈতিক খরা চলছে। আমাদের দেশের রাজনীতি, সমাজনীতি ও অর্থনীতি কী রকম হবে তা নিয়ে তাদের কোনো প্রেসক্রিপশনের দরকার নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার পিতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আরাধ্যের সোনার বাংলা বাস্তবায়নে যে অগ্রযাত্রার দীপশিখা জ্বালিয়েছেন তাকে প্রজ্বলিত রাখতেই হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী দেশি বিদেশি অপশক্তিকে রুখে দাঁড়ান। আমাদের ১৪ দলীয় এই জোটের নেতাকর্মীরা রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক দায়বদ্ধতায় একই মঞ্চে সমবেত হয়েছি। এই জোট কোনো নির্বাচনমুখী জোট নয়। এই জোট স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে ধারণ করতে একটি মুক্তমঞ্চ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়