মেজাজ হারালেন টম হ্যাঙ্কস

আগের সংবাদ

টাইগারদের অনুশীলন শুরু আজ : হাথুরুসিংহে আসছেন ৩ জুন

পরের সংবাদ

বিদেশে পাঠানোর নামে অর্ধ কোটি টাকা নিয়ে উধাও তিন প্রতারক

প্রকাশিত: মে ২৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মে ২৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মো. সাজ্জাদ হোসেন শাহ্, সুনামগঞ্জ থেকে : সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে বিদেশে পাঠানোর কথা বলে ২০ জনেরও বেশি লোকের কাছ থেকে অর্ধ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে এলাকা থেকে উধাও হয়েছে তিন প্রতারক। তারা হলেন- সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার ৫ নম্বর বাদাঘাট ইউনিয়নের মল্লিকপুর গ্রামের মৃত গোলাম মোস্তফার ছেলে মালয়েশিয়া প্রবাসী তপু আহমেদ ওরফে শাহ্ তপু ও তার দুই সহোদর সিলেটে বসবাসকারী শাহ্ মনিরুজ্জামান ও শাহ্ বাবুল।
এদিকে, প্রতারণার শিকার তাহিরপুর উপজেলার বড়দল উত্তর, শ্রীপুর উত্তর ও বাদাঘাট ইউনিয়নের ২০ জনের বেশি ভুক্তভোগী ভিটে মাটি, সহায় সম্বল বিক্রি করে বিদেশে যাওয়ার জন্য টাকা দিয়ে গত ৬ মাস ধরে দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন আসহায়ের মতো। প্রতারক তপু ও তার বড়ভাই শাহ্ মনিরুজ্জামান, শাহ্ বাবুল এলাকা থেকে লাপাত্তা হয়ে টাকা ফেরত কিংবা বিদেশে নেয়ার তারিখ পরিবর্তন করে যাচ্ছে গত ৬ মাস ধরে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তাহিরপুর উপজেলার বড়দল উত্তর ইউনিয়নের ব্রাহ্মণগাঁও গ্রামের আব্দুল হাইয়ের ছেলে রুবেল মিয়া একই গ্রামের আবুল মিয়ার ছেলে আল আমিন, আব্দুল মোতালেবের ছেলে ওয়াদুদ মিয়া, চাঁন মিয়ার ছেলে শফিকুল ইসলাম, শান্তিপুর গ্রামের হলুদ মিয়ার ছেলে এরশাদ মিয়া, বাদাঘাট ইউনিয়নের সোহালা গ্রামের মালেক মিয়ার ছেলে মোর্শেদ মিয়া ও উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের কলাগাঁও গ্রামের গোলাপ মিয়ার ছেলে শামীম আহমেদসহ ২০ জনের বেশি লোকের কাছ থেকে প্রতারক তপু ও তার দুই সহোদর শাহ্ মনির, শাহ্ বাবুল কয়েক দফায় ব্যাংক একাউন্টে এবং হাতে হাতে নগদ প্রায় অর্ধ্ব কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। জায়গা জমি, মোটরসাইকেল বিক্রি ও স্বজনদের কাছ থেকে ধার করে বিদেশে গিয়ে পরিবারের অভাব দূর করার পরিবর্তে এভাবে প্রতারণার শিকার হয়ে তারা এখন নিঃস্ব। মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন এই ভুক্তভোগীরা। প্রতারণার শিকার ব্রাহ্মণগাঁও গ্রামের শফিকুল ইসলাম বলেন, পরিবারে স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকে ধার-দেনা করে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা দিয়েছি প্রতারক তপুকে। কোনোদিন স্বপ্নেও ভাবিনি এভাবে প্রতারিত হব। বাদাঘাট ইউনিয়নের সোহালা গ্রামের মালেক মিয়ার ছেলে মোর্শেদ মিয়া বলেন, মোটরসাইকেল চালিয়ে সংসার চালাতাম। বিদেশে গিয়ে পরিবারের অভাব দূর করব ভেবে মোটরসাইকেল ও কিছু জমি বিক্রি করে প্রায় দেড় লাখ টকা দিয়েছি প্রতারক তপুর বড় ভাই শাহ্ বাবুলের কাছে। এখন তারা শুধু তারিখের পর তারিখ দিয়ে যাচ্ছে। ব্রাহ্মণগাও গ্রামের আব্দুল মোতালেবের ছেলে ওয়াদুদ মিয়া বলেন, আমাদের দশজনসহ আরো অনেক লোকের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে প্রতারক তপু, তার বড়ভাই শাহ্ মনির ও শাহ্ বাবুল। এখন টাকা ফেরত কিংবা বিদেশে পাঠানোর জন্য ফোন করলে তারা শুধু সময় চায়। এমনকি দেখা করতে চাইলে প্রতারক তপু কখনো বলে বিদেশে আবার কখনো বাংলাদেশী মোবাইল নম্বর থেকে কল দিয়ে বলে সময় দিতে।
মল্লিকপুর গ্রামের মাহবুব মল্লিক জানান, প্রতারণার শিকার ভুক্তভোগীরা কয়েক দফায় আমাদের গ্রামে এসে তাদের প্রতারণার বিষয়টি আমাদের জানালে আমরা তপু এবং তার বড়ভাই সিলেটে বসবাসকারি শাহ্ মনির ও শাহ্ বাবুলকে কয়েক দফায় গ্রামে ডাকলেও তারা আসেনি।
মাহবুব মল্লিক আরো জানান, এই প্রতারক চক্র ইতোপূর্বেও অনেকের কাছ থেকে টাকা পয়সা নিয়ে আত্মসাৎ করেছে। তাদের বিরুদ্ধে আদালতে একাধিক অর্থ আত্মসাতের মামলাও রয়েছে। সিলেটে বসবাসকারি ব্রাহ্মণগাও গ্রামের ব্যবসায়ী আব্দুস সাত্তার বলেন, গ্রামের লোকজন প্রতারণার শিকার হয়ে আমার কাছে এলে আমি তপু ও তার বড়ভাই মনির এবং বাবুলের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও তারা শুধু তারিখের পর তারিখ বদলাচ্ছে। এদিকে সহায় সম্বলহীন অসহায় এসব মানুষ বর্তমানে মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে ফিরছে।
গতকাল শুক্রবার বিকেলে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এ বিষয়ে জানতে তপু ও তার বড়ভাই শাহ্ মনিরের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তারা কল রিসিভ করেননি। তবে প্রমাণ হিসেবে টাকা দেয়ার ব্যাংক রশিদ, নগদ টাকা নেয়ার ভিডিও ফুটেজ এবং কথোপকথনের রেকর্ড এ প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত আছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়