নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায় রওশন এরশাদের উদ্বেগ

আগের সংবাদ

ভয়ংকর ‘মোকা’র হিংস্র ছোবল : সেন্টমার্টিন, মহেশখালী ও কুতুবদিয়া লণ্ডভণ্ড হওয়ার আশঙ্কা > প্রাণহানির ঝুঁকিতে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির

পরের সংবাদ

জয়সোয়াল ও চাহালের রেকর্ড রাজস্থানের বড় জয়

প্রকাশিত: মে ১৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মে ১৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) ম্যাচে গত বৃহষ্পতিবার কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিপক্ষে মাত্র ১৩ বলে হাফসেঞ্চুরির দেখা পান রাজস্থান রয়্যালসের ওপেনার যশস্বী জয়সোয়াল। যা আইপিএলের ইতিহাসে দ্রুততম এবং টি-টোয়েন্টিতে দ্বিতীয় দ্রুততম হাফসেঞ্চুরি। এই ম্যাচেই কলকাতার বিপক্ষে ২৫ রানে চার উইকেট নিয়েই ডোয়ান ব্রাভোকে টপকে আইপিএলের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারির তালিকায় শীর্ষস্থান দখল করেন লেগস্পিনার যুবেন্দ্র চাহাল। এই দুই তারকার রেকর্ডের দিনে কলকাতাকে ৯ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারায় সাঞ্জু স্যামসনের দল।
কলকাতা নাইট রাইডার্সের দেয়া ১৫০ রানের তাড়ায় রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে ওপেনিং করতে আসেন জয়সোয়াল এবং জস বাটলার। ম্যাচ শুরু হওয়ার প্রথম বলই বাউন্ডারির বাইরে পাঠান জয়সোয়াল। দ্বিতীয় বলেও কলকাতা অধিনায়কের বল তিনি ছক্কায় ভাসান। এরপর টানা দুটি চার মেরে প্রমাণ করে দেন ম্যাচটিতে তিনি কোনো না কোনো রেকর্ড গড়তে চলেছেন। পরের দুই বলে একটি চারসহ তিনি ৬ রান নেন। প্রথম ওভার তেকেই জয়সোয়াল রাজস্থানের স্কোরবোর্ডে ২৬ রান যোগ করে একটি ভালো শুরু এনে দেন দলকে। পরের ওভারে তিনি নন-স্ট্রাইকে যাওয়ার পর তিন বল খেলে রান আউট হয়ে বিদায় নেন জশ বাটলার। নিতিশ রানার এই ওভারের শেষ দুই বল খেলে ১০ রান যোগ করেন জয়সোয়াল। তৃতীয় ওভারে স্ট্রাইকে থাকা স্যামসন প্রথম বলেই এক রান নিয়ে স্ট্রাইক দেন জয়সোয়ালের কাছে। এরপর টানা তিনটি বাউন্ডারি হাঁকিয়ে এবং ওভারের পঞ্চম বলে ১ রান নিয়ে পঞ্চাশ রানে পৌছান রাজস্থানের এই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান। শেষ পর্যন্ত তিনি ৪৭ বলে ৯৮ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন। তার সঙ্গে থাকা স্যামসন খেলেন ২৯ বলে ৪৮ রানের অপরাজিত ইনিংস। দুই ব্যাটারের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ৯ উইকেটে জয় পেয়ে প্লে অফের দৌড়ে এগিয়ে যায় রাজস্থান রয়্যালস।
কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিপক্ষে আইপিএলের ইতিহাসে সবচেয়ে দ্রততম ফিফটির দেখা পান যশস্বী জয়সোয়াল। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে তার করা এই ফিফটি দ্বিতীয় দ্রুততম। এর আগে ১২ বলে ফিফটির দেখা পেয়েছিলেন যুবরাজ সিং। জয়সোয়ালের এই দুর্দান্ত ব্যাটিং দেখে বিরাট কোহলি তার ইন্সটাগ্রামে লিখেন, ‘গত বেশ কিছু দিনের মধ্যে আমার দেখা সেরা ইনিংস।’ জয়সোয়ালের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মাও। মুম্বাই অধিনায়ক তাকে সব সংস্করণের আদর্শ ক্রিকেটার মেনে বলেন, ‘দুর্দান্ত এক প্রতিভা জয়সোয়াল। সে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের ফর্মকে আইপিএলে নিয়ে এসেছে। সব সংস্করণের আদর্শ ক্রিকেটার। জয়সোয়াল ভারতীয় ক্রিকেটের জন্য দুর্দান্ত এক আবিষ্কার, রাজস্থান রয়্যালসের জন্য তো বটেই।’
এর আগে টস হেরে ব্যাটিং করতে নামে কলকাতা নাইট রাইডার্স। দল বোলিং আক্রমণের সিদ্ধান্ত নেয়ায় যুজবেন্দ্র চাহাল অপেক্ষা করছিলেন আইপিএলের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি হিসেবে নিজের নাম লিখানোর জন্য। তার লক্ষ্য পূরণের জন্য দরকার ছিল মাত্র একটি উইকেটের। আর সেই উইকেটের মুখ দেখতে চাহালকে অপেক্ষা করতে হয়েছে ম্যাচের একাদশ ওভার পর্যন্ত। কলকাতা অধিনায়ক রানের গতি বাড়াতে গিয়ে চাহালের বলে ধরা পরেন হেটমায়ারের হাতে। প্রতিপক্ষ দলের অধিনায়কের উইকেট তুলেই তিনি আইপিএলের সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রাহক হওয়ার কীর্তি গড়েন। এটি ছিল তার আইপিএল ক্যারিয়ারের ১৮৪তম উইকেট। ১৭তম ওভারে চাহাল তুলেন কলকাতার হয়ে সেদিন সবচেয়ে বড় ইনিংস খেলা ভ্যাঙ্কাটেশ আয়ারকে। তার ঘুরনিতে নাইট রাইডার্সের ব্যাটার বল পাঠিয়ে দেন বোল্টের হাতে। ৪২ বলে ৫৭ রানের ইনিংস গড়েন তিনি। আউট হওয়ার আগে তিনি ৪টি ছক্কা এবং ২টি চার হাঁকিয়েছিলেন। একই ওভারে ম্যাচে তার তৃতীয় উইকেটের দেখা পান চাহাল। তার ঘুরনি বুঝতে না পেরে লেগ বিফোরের ফাঁদে পা দেন ২ বলে ১ রান করা ঠাকুর। ১৯তম ওভারে রিংকু সিংকে বিদায় করে তিনি ক্ষান্ত হন। এই ম্যাচ শেষে আইপিএলে চাহালের তুলা উইকেটের সংখ্যা ১৮৭টি। রাজস্থান রয়্যালসের বোলারদের তোপের মুখে কলকাতা নাইট রাইডার্সের ব্যাটসম্যানরা ১৪৯ রানের সংগ্রহ গড়েই আটকে যান।
এই জয় নিশ্চিত করে শেষ চারের দৌড়ে অনেকটাই এগিয়ে গেছে রাজস্থান রয়্যালস। ম্যাচ শুরুর আগে কলকাতা এবং রাজস্থান ছিল একই কাতারে। ১১ ম্যাচ খেলা দুই দলেরই পয়েন্ট ছিল ১০। পয়েন্ট সমান হলেও দুই দলের গতিপথ ছিল ভিন্ন। এই ম্যাচের আগে ৪ ম্যাচের ৩টিতেই জিতেছিল কলকাতা। অন্যদিকে আগের ৬ ম্যাচের ৫টিতেই পরাজয়ের তিক্ততা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছিল রাজস্থানের খেলোয়াড়দের। শেষ পর্যন্ত কলকাতার বিপক্ষে জয় তুলে নিয়ে টেবিলের তিন নম্বরে জায়গা করে নেয় দলটি। এবারের আইপিএলে ভালো পারফর্ম করেও এখন পর্যন্ত প্লে অফ নিশ্চিত করতে পারেনি কোনো দল। প্রত্যেকটি দলই তাদের নিচে থাকা দলের সঙ্গে খুব কম ব্যবধানে এগিয়ে আছে। প্লে অফ নিশ্চিত করতে না পারলেও শেষ চারের দৌড়ে সর্বোচ্চ এগিয়ে থাকা দল হলো গুজরাট টাইটান্স। এই দলটি আইপিএল টেবিলের শীর্ষস্থানে অবস্থান করছে। দুইয়ে থাকা দল চেন্নাই সুপার কিংসেরও সুযোগ আছে গুজরাটকে টপকে শীর্ষস্থান দখল করার। তবে কয়েকটি দলের পয়েন্ট সমান থাকায় এখন পর্যন্ত নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না কোন চার দল নাম লিখাতে পারবে প্লে অফ রাউন্ডে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়