নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায় রওশন এরশাদের উদ্বেগ

আগের সংবাদ

ভয়ংকর ‘মোকা’র হিংস্র ছোবল : সেন্টমার্টিন, মহেশখালী ও কুতুবদিয়া লণ্ডভণ্ড হওয়ার আশঙ্কা > প্রাণহানির ঝুঁকিতে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির

পরের সংবাদ

চট্টগ্রাম আবাহনীর কাছে ঢাকা আবাহনীর হার : মৌসুমে দ্বিতীয় পরাজয় কিংসের

প্রকাশিত: মে ১৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মে ১৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ ফুটবলে গতকাল চট্টগ্রাম আবাহনীর কাছে ৩-২ গোলে হেরেছে ঢাকা আবাহনী। লিগের অপর ম্যাচে বাংলাদেশ পুলিশ ফুটবল ক্লাবের বিপক্ষে ২-১ গোলে হেরে হোঁচট খেয়েছে বসুন্ধরা কিংস। চলতি মৌসুমে প্রিমিয়ার লিগে এটি প্রথম এবং সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে এটি কিংসের দ্বিতীয় পরাজয়। এর আগে ফেডারেশন কাপের সেমিফাইনালে মোহামেডানের কাছে হেরে বিদায় নিয়েছিল তারা। দিনের অন্য ম্যাচে শেখ জামাল ও শেখ রাসেলের ম্যাচটি শেষ হয় গোলশূন্য সমতায়।
মুন্সীগঞ্জের শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লে. মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে দুই আবাহনীর হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়। পাঁচ গোলের থ্রিলিং ম্যাচে শেষ হাসি হাসে চট্টগ্রাম। ম্যাচের সপ্তম মিনিটে বক্সে জটলার ভেতর থেকে টোকায় চট্টগ্রাম আবাহনীকে এগিয়ে নেন নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড ডেভিড ওজুকু। অষ্টাদশ মিনিটে দেনিয়েল কলিনদ্রেসের কর্নারে হেডে সমতা ফেরান ইউসুফ মোহাম্মদ। ৩৫তম মিনিটে ফ্রি কিকে হেড করে চট্টগ্রাম আবাহনীকে ফের এগিয়ে নেন ইকবাল হোসেন। পাঁচ মিনিট পর সতীর্থের লং পাস অফসাইডের ফাঁদ ভেঙে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে পোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে আসা গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে পোস্টে বল জড়ান ওজুকু। ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ চলে যায় বন্দরনগরীর দলটির মুঠোয়। ৬৪তম মিনিটে কর্নারের পর বক্সের ভেতরে বল পেয়ে যান ইউসুফ। ঠাণ্ডা মাথায় জোরালো শটে লক্ষ্যভেদ করেন মিসরীয় ডিফেন্ডার ইউসুফ। তার এই গোলে ম্যাচে ফিরে আসার সুযোগ তৈরি হয় আবাহনীর। তবে শেষ পর্যন্ত আর কোনো ভালো আক্রমণ করতে পারেনি দলটি। কয়েকটি আক্রমণ করতে পারলেও ভালো ফিনিশিংয়ের অভাবে কোনো গোল আর যোগ হয়নি আবাহনীর স্কোরবোর্ডে।
অপরদিকে ময়মনসিংহ স্টেডিয়ামে শুরু থেকেই চাপের মধ্যে ছিল বসুন্ধরা কিংসের রক্ষণভাগ। তার বিপরীতে কিছুই করতে পারছিলেন না দলটির আক্রমণভাগের খেলোয়াড়রা। অন্যদিকে রক্ষণভাগে কড়া পাহাড়া বসিয়ে একের পর এক আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছিলেন বাংলাদেশ পুলিশের খেলোয়াড়রা। এর ধারাবাহিকতায় তাদের হাতে সুযোগ আসে ম্যাচের চতুর্দশ মিনিটে। তবে এডুয়ার্দ মুরিওর কোনাকুনি শট পোস্টের বাইরে দিয়ে যাওয়াতে সুযোগ হাতছাড়া হয়। ২৩তম মিনিটে কিংসের ইয়াসিন আরাফাতের হেড হয় লক্ষ্যভ্রষ্ট। তিন মিনিট পর বক্সে ঢুকে ভালো অবস্থান থাকলেও ইয়াসিনের কোনাকুনি শট যায় দূরের পোস্ট দিয়ে বেরিয়ে। এরপর ৩২তম মিনিটে ড্রিবলিং করতে করতে একক প্রচেষ্টায় এগিয়ে যান মুরিও। একাধিক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে বাম পায়ের নিখুঁত শটে জাল খুঁজে নেন কলম্বিয়ার এই অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার। কিংসের গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকো কোনো প্রতিরোধই পড়তে পারেননি। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে গোল করে ম্যাচ সমতায় ফেরানোর সুযোগ পান কিংস। দামাশেনোর পাসে বল পেয়ে শট নেন দোরিয়েলতন, তবে সেই শট তিনি লক্ষ্যে রাখতে পারেননি। তাই ১-০ গোলের লিড নিয়েই প্রথমার্ধ শেষ করে বাংলাদেশ পুলিশ।
বিরতির পর দেখা যায় চেনা বসুন্ধরা কিংসকে। শুরুর বিবর্ণতা ঝেড়ে ফেলে দ্বিতীয়ার্ধ শুরু করে দলটি। স্বস্তির হাসি ফেরে কোচ অস্কার ব্রুজেনের মুখে। ৫১তম মিনিটে দোরিয়েলতনের শট লক্ষ্যেই ছিল; কোনোমতে নেহাল টোকা দিতে সক্ষম হন, বল চলে যায় দূরের পোস্ট দিয়ে বাইরে। একটু পর দামাশেনোর শটও ব্লক করেন তিনি। ৫৯তম মিনিটে দোরিয়েলতনের ফিরতি পাসে রবিনিয়োর ভলি আটকান গোলরক্ষক। কোণঠাসা পুলিশ মুরিওর হাত ধরে জেগে ওঠে ৬২তম মিনিটে। এই গোলে আবারো ফুটে ওঠে কিংসের রক্ষণের দুর্বলতা। লেয়ান্দ্রো আম্বুইয়ার পাস ধরে একক প্রচেষ্টায় বল নিয়ে বক্সে ঢুকে পড়েন মুরিও। রিমন হোসেনকে দারুণ ডজে ছিটকে দিয়ে বাঁ পায়ের শটে দলকে ফের এগিয়ে নেন কলম্বিয়ার এই ফরোয়ার্ড। নেহালের চোটে ৬৫তম মিনিটে পোস্ট সামলাতে নামেন তুষার হাসান। দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ে দামাশেনোর শট আটকে দলকে জয়ের পথে রাখেন তিনি। এরপর শেষের বাঁশি বাজতেই অবিশ্বাস্য এক জয়ের আনন্দে মেতে ওঠে পুলিশ এফসি। বসুন্ধরা কিংস পরাজিত হলেও এখনো শিরোপা জয়ের দৌড়ে এগিয়ে আছে। ১৫ ম্যাচের ১৩টিতে জয়, একটি ড্র এবং একটি সমতা নিয়ে দলটির পয়েন্ট ৪০। শীর্ষস্থান দখল করা এই দলের ঠিক পরেই অবস্থান করছে ঢাকা আবাহনী। দুইয়ে থাকা দলটির পয়েন্ট ৩০।
কিংস এবং আবাহনীর মধ্যকার ১০ পয়েন্টের ব্যবধানই বলে দেয় কোন দল জিতবে চলতি মৌসুমের বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা। ২২ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে আছে শেখ রাসেল, চতুর্থ স্থানে শেখ জামাল। সেরা চারে থাকা সব দল ১৫টি করে ম্যাচ খেললেও শেখ রাসেল খেলেছে এক ম্যাচ কম।
আরেকদিকে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ টেবিলের তিনে থাকা শেখ রাসেল এবং চারে থাকা শেখ জামালের ম্যাচটি গতকাল শেষ হয়েছে গোলশূন্য সমতায়। বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় তাদের ম্যাচটি ছিল মাঝমাঠেই। দুই দল প্রায় সমান সময় ধরে বল দখলে রাখে। বল দখল করে রাখতে পারলেও আক্রমণভাগের দুর্বলতার কারণে কোনো দলই গোলের দেখা পায়নি। একাধিক চেষ্টা করেও শেষ পর্যন্ত পয়েন্ট ভাগাভাগি করেই মাঠ ছাড়ে শেখ রাসেল এবং শেখ জামাল।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়