সিজার হত্যায় গ্রেপ্তার ৬ : অটোরিকশা ছিনতাই করা তাদের পেশা

আগের সংবাদ

বৃষ্টি ও জোয়ারের অপেক্ষায় হালদা নদীতে মাছের পোনা সংগ্রহকারীরা

পরের সংবাদ

মানিকগঞ্জে চোখের সামনেই দখল হচ্ছে সওজের জায়গা

প্রকাশিত: মে ১০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মে ১০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মাসুম বাদশাহ, সিংগাইর (মানিকগঞ্জ) থেকে : হেমায়েতপুর-সিংগাইর-মানিকগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়ক ঘেঁষে সড়ক ও জনপথ বিভাগের জায়গা দখল হয়ে যাচ্ছে। এর আগে অবৈধ দখল নিয়ে গণমাধ্যমে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ হলেও কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় এ সড়কের ভাষা শহীদ রফিক সেতুর পশ্চিম প্রান্তে ধল্লা পুলিশ বক্স সংলগ্ন দক্ষিণ ধল্লা এলাকায় অবৈধভাবে দখলের প্রতিযোগিতায় নেমেছে কিছু ক্ষমতাধর লোক। আইন অনুযায়ী কোনো সড়ক বা মহাসড়কের ৩০ ফুটের মধ্যে কোনো স্থাপনা নির্মাণ করা যায় না। কিন্তু সেই আইনকে তোয়াক্কা না করে অবৈধভাবে স্থাপনা নির্মাণ চলছে।
গত সোমবার সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, দক্ষিণ ধল্লায় অ্যাস্পেয়ার গার্মেন্টস গেট সংলগ্ন স্থানে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের জায়গা দখল করে কর্তৃপক্ষের কোনো অনুমতি না নিয়েই আব্দুল আলী ও ফারুক হোসেন স্থায়ী দোকানঘর নির্মাণ করছেন। এছাড়া ৩ বছর আগে স্থানীয় ফজলুর রহমান, লাবু মিয়া, সোবান শাহ, দিলরুবা, ইসমাইল হোসেন, মো. নান্টু, সাইফুল ইসলাম, সোহেল ও আলিমুদ্দিনও আঁধাপাকা ঘর নির্মাণ করে ভাড়া দিয়েছেন।
জানা গেছে, ১৯৯৫-৯৬ সালে হেমায়েতপুর-সিংগাইর-মানিকগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়ক বাড়ানোর জন্য সওজ সুদক্ষিরা মৌজা থেকে ৩.৬২ একর এবং ধল্লা মৌজা থেকে ৩.১৫ একরসহ মোট ৬.৭৭ একর বা ২০.৪৮ বিঘা (৬৭৭ শতাংশ) জমি অধিগ্রহণ করে, যার এলএস কেইস নং ৬/৯৫-৯৬। এরপর কয়েক দফায় সড়কটি বাড়ানো হলেও শহীদ রফিক সেতুর পশ্চিম প্রান্তের মি. খান ফুড থেকে অ্যাস্পেয়ার গার্মেন্টস গেট পর্যন্ত স্থানটিতে অধিগ্রহণকৃত জায়গার বড় একটি অংশ এতদিন ফাঁকা ছিল। কিন্তু সুযোগ সন্ধানী দখলদারদের থাবায় সে জায়গাগুলোয় এখন তৈরি হচ্ছে ব্যক্তিগত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
এমনিতেই সড়কটি মরণফাঁদ হিসেবে পরিচিত। প্রায় প্রতিদিনই দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ঘটে। তারপরও এসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও খাবার হোটেলের সামনে পার্ক করে রাখা বিভিন্ন যানবাহনের লম্বা লাইনের কারণে চলাচলে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হচ্ছে এ সড়কে।
বিন্নাডাঙ্গী এলাকার আব্দুল জলিল ও ধল্লা গ্রামের জাকির খান বলেন, দখলদারদের মধ্যে কেউ কেউ সরকারি দলের লোক হওয়ায় সাধারণ মানুষ মুখ খুলতে সাহস পায় না। আবার অন্যান্য স্থানে অনেকেই তাদের দেখাদেখি দখলে উৎসাহী হচ্ছে। তাই অতিসত্বর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানান স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা। দখলদার মো. আব্দুল আলী ও মো. ফারুক হোসেনের সঙ্গে কথা বললে তারা বলেন, সরকারি জমি খালি পড়ে আছে। এ কারণে আমরা দোকান ঘর তৈরি করেছি। স্থাপনা নির্মাণে সওজের কাছ থেকে কোনো অনুমতি নেয়া হয়নি। সরকার যদি কখনো আমাদের এ স্থাপনা ভেঙে দিতে বলে তখন আমরা নিজেরাই ভেঙে দেব। তবে এখন পর্যন্ত স্থাপনা নির্মাণে আমরা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোনো ধরনের বাধা কিংবা আপত্তি পাইনি। অন্য দখলদারদের সঙ্গে কথা হলে তারাও একই কথা বলেন।
সিংগাইর উপজেলা নির্বাহী অফিসার দিপন দেবনাথ বলেন, ওই সব জায়গার দখল রোধে আমি জেলা মাসিক সমন্বয় সভায় কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করব। মানিকগঞ্জ সওজ বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. আলমগীর হোসেন বলেন, সড়কের ওই অংশটুকু মানিকগঞ্জ জেলার সীমানায় হলেও অধিগ্রহণকৃত ওই জায়গা ঢাকা সওজ বিভাগের। তাই এ বিষয়ে তারাই ব্যবস্থা নিতে পারবেন। ঢাকা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ড. মোহাম্মদ আহাদ উল্লাহ বলেন, বিষয়টি আপনার কাছে থেকে জানতে পারলাম। সার্ভেয়ার পাঠিয়ে আমি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়