ভুয়া প্রশ্ন বিক্রির নামে প্রতারণা গ্রেপ্তার ১

আগের সংবাদ

লক্ষ্যমাত্রা পূরণ নিয়ে সংশয় : কৃষকদের আগ্রহ স্থানীয় বাজারে > ২৬ হাজার টাকা পেয়ে ৩ হাজার টাকা ঘুষ

পরের সংবাদ

ডেঙ্গু বাড়ছে : মশার প্রজননস্থল নির্মূলে পদক্ষেপ জরুরি

প্রকাশিত: মে ৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মে ৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মৌসুম শুরুর আগেই এডিস মশার প্রকোপ বাড়ছে। এখনই মশা নিধনে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া না হলে ডেঙ্গু ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। বিগত বছরগুলোর অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ডেঙ্গু প্রতিরোধে জোর পদক্ষেপ নেয়ার তাগিদ দিচ্ছেন কীটতত্ত্ববিদরা। ঈদের ছুটির পর হাসপাতালগুলোতে বেড়েছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের তথ্য অনুযায়ী, দেশে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে গত শুক্রবার সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় কারো মৃত্যু হয়নি। তবে এ সময় সংক্রমিত হয়েছেন ৪ জন। নতুন আক্রান্তদের চারজনই ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বর্তমানে ডেঙ্গু আক্রান্ত ৭৬ জন বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এর মধ্যে ৫৮ জন ঢাকায় এবং ১৮ জন সংশ্লিষ্ট জেলার হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। সরকারি প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছর ১ জানুয়ারি থেকে ৫ মে পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট ১ হাজার ৬৬ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকায় ভর্তি হয়েছেন ৫৭৫ জন। বাকি ৪৯১ জন ভর্তি হয়েছেন সংশ্লিষ্ট জেলার হাসপাতালে। চলতি বছর ডেঙ্গু সংক্রমণে মৃত্যু হয়েছে ১১ জনের। বর্ষায় বাসাবাড়িতে পানি জমে এডিস মশার বংশবিস্তার বেশি ঘটে। চলতি বছর মধ্য এপ্রিলে প্রকাশিত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বর্ষা-পরবর্তী জরিপে ঢাকার ৪ শতাংশের বেশি বাড়িতে এডিস মশার উপস্থিতি রয়েছে বলে জানা যায়। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকার চেয়ে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় এডিস মশার উপস্থিতি বেশি পাওয়া গিয়েছিল। জরিপের এই তথ্য শঙ্কাজনক। বিশেষজ্ঞদের মতে, এপ্রিলে এডিস মশার নতুন জীবনচক্র শুরু হয়েছে। এছাড়া থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। এতে ডেঙ্গু বাড়ছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ডেঙ্গুর প্রকোপ ঢাকার বাইরে বেশি হবে বলে আশঙ্কা রয়েছে। চিকিৎসকরা বলছেন, যথাযথ নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়া অনুসরণ ও জনসচেতনতা সৃষ্টি হলে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। এখনো ডেঙ্গু জ¦রের কোনো প্রতিষেধক বের হয়নি। ডেঙ্গু থেকে রেহাই পেতে হলে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। সিটি করপোরেশনকে ডেঙ্গু নিধন কার্যক্রমে আরো আন্তরিক হতে হবে। গ্রামাঞ্চলেও ডেঙ্গু মশা ছড়িয়ে পড়েছে। সে জন্য শহরের পাশাপাশি গ্রামাঞ্চলেও মানুষকে সচেতন করতে হবে এবং মশক নিধন কার্যক্রম চালাতে হবে। আইইডিসিআরের তথ্যমতে, সাধারণত জুন-জুলাই থেকে শুরু করে অক্টোবর-ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে ডেঙ্গুর বিস্তার থাকে। তবে এবার মৌসুম শুরুর আগেই চোখ রাঙাচ্ছে ডেঙ্গু। সাধারণত মশক নিধন কার্যক্রমের স্থবিরতা, গাইডলাইনের অভাব এবং মানুষের অসচেতনতাই ডেঙ্গু প্রকোপের জন্য দায়ী। হঠাৎ থেমে থেমে স্বল্পমেয়াদি বৃষ্টিতে ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশার লার্ভা খুব বেশি মাত্রায় প্রজনন সক্ষমতা পায়। ফলে এডিস মশার বিস্তারও ঘটে বেশি। উৎস বন্ধ না করতে পারলে ডেঙ্গুর ঝুঁকি থেকেই যাবে। ঢাকা সিটির দুই মেয়র ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে অভিযান চলমান বলে দাবি করছেন। আমরা মাঠপর্যায়ের কাজের বাস্তবায়ন দেখতে চাই। এক্ষেত্রে নগরবাসীকেও সচেতন থাকতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে বৃষ্টিপাতের মৌসুমও পরিবর্তিত হয়েছে, যা এডিস মশা বাড়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখছে। মশার প্রজননস্থল নির্মূলে মশা নিধন কর্মসূচিতে আরো বেশি জোর দিতে হবে। বাড়ির চারপাশ যেন পরিষ্কার থাকে সেদিকেও আমাদের সচেতন থাকা দরকার। হাসপাতাল থেকে ডেঙ্গু রোগীর ঠিকানা সংগ্রহ করে রোগীর এলাকায় মশা নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করা এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে পারলে ডেঙ্গু রোধে তা অনেকটা কার্যকর হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়