মিরপুরে জালিয়াত চক্রের ৪ সদস্য গ্রেপ্তার

আগের সংবাদ

বঙ্গবাজারে আগুন : ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় একদিনে জমা পড়েছে ২ কোটি টাকা

পরের সংবাদ

স্বজনরা কেউ আসেনি লাশ নিতে : রোয়াংছড়িতে জনশূন্য গ্রাম নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার

প্রকাশিত: এপ্রিল ৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মংসানু মারমা, বান্দরবান থেকে : বান্দরবানের রোয়াংছড়িতে সশস্ত্র দুই পক্ষের গোলাগুলিতে আটজন নিহত হওয়ার ঘটনায় ওই এলাকার গ্রামগুলো জনশূন্য হয়ে পড়েছে। আতঙ্কে গ্রামছাড়া ১৯৫টি পরিবারের বাড়িঘরে গবাদি পশু হাঁস-মুরগিসহ বিভিন্ন মালামাল পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। পালিয়ে আসা পরিবারগুলো আতঙ্কে উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় রয়েছে। তাদের জানমাল রক্ষায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বান্দরবানের পুলিশ সুপার মো. তারিকুল ইসলাম।
এ বিষয়ে গতকাল শনিবার দুপুরে বান্দরবান সদর থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন পুলিশ সুপার মো. তারিকুল ইসলাম।
এ সময় পুলিশ সুপার বলেন, ঘটনার পর নিরাপত্তা জোরদারের পাশাপাশি আমরা গোয়েন্দা নজরদারি বাড়িয়েছি। আমরা নিরাপত্তার ঝুঁকিগুলো পর্যালোচনা করে দেখছি। জেলা পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। রোয়াংছড়ির এ ঘটনার পর আতঙ্কে গ্রামবাসী গ্রাম ছেড়ে রোয়াংছড়ি সদরের রোয়াংছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে আশ্রয় নেয়া গ্রামবাসীর সঙ্গে আমরা নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। তাদের মধ্যে যেন ভয়-ভীতি কাজ না করে এবং তারা যেন শঙ্কিত না থাকে সেজন্য তাদের সঙ্গে কথা বলে মনে সাহস দেয়ার চেষ্টা করছি। আমাদের যেসব এলাকায় পুলিশ ফাঁড়ি-ক্যাম্প, চেকপোস্ট রয়েছে সেসব জায়গায় আমরা নিরাপত্তা জোরদার করেছি। ওই এলাকায় যারা বসবাস করে তাদের সবসময় খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। পুলিশ সুপার আরো বলেন, ঘটনাস্থল থেকে আতঙ্কে পালিয়ে আসা ২০০ জনেরও বেশি লোক রোয়াংছ?ড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছে। অন্যদিকে রুমা উপজেলার বাম কমিউনিটি হলে ৬০ জনেরও বেশি লোক আশ্রয় নিয়েছে। আমাদের দুটি থানার ওসির দায়িত্বে তাদের নিরাপত্তা দেয়া হচ্ছে। এবং তাদের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে, তাদের সাহস দেয়া হচ্ছে। আমরা জেলা প্রশাসনসহ তাদের সঙ্গে কথা বলে তারা কবে কীভাবে ফিরবে সে বিষয়ে অগ্রসর হব বলে জানান তিনি।
এদিকে লাশের পরিচয় জানার পরও স্বজনরা কেউ আসেনি লাশ নিতে। বান্দরবান সদর হাসপাতালের মর্গ থেকে নিহত আটজনের পোস্টমর্টেমের পর মরদেহগুলো নিতে আসেনি স্বজনরা। এ বিষয়ে বম সোশ্যাল কাউন্সিল সভাপতি লাল জারলম বম জানান, আমি মোট ৮টি লাশ গ্রহণ করেছি। ৬টি লাশ জুভারং পাড়ায় এবং দুটি লাশ পাখনিয়ার পাড়তে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তিনি আরো জানান, কয়েকদিন পর স্বজনদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে মামলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার রাতে পাহাড়ের বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সঙ্গে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস সংস্কার) সদস্যদের ব্যাপক গোলাগুলি হয়। পরে শুক্রবার সকালে সেখানে জলপাই রংয়ের পোশাক পরিহিত আটজনের মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেন স্থানীয়রা।
রোয়াংছড়ি থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহগুলো উদ্ধার করে বান্দরবান সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। এ ঘটনার পর পার্শ^বর্তী এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে আসে ১৯৫টি পরিবার। তারা এখন রোয়াংছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও রুমা উপজেলার বাম কমিউনিটি হলে আশ্রয় নিয়েছেন। এ ঘটনায় পুলিশের দাবি পাহাড়ে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে কেএনএফ ও ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ-সংস্কার) মধ্যে এ গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়