মিরপুরে জালিয়াত চক্রের ৪ সদস্য গ্রেপ্তার

আগের সংবাদ

বঙ্গবাজারে আগুন : ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় একদিনে জমা পড়েছে ২ কোটি টাকা

পরের সংবাদ

জলবসন্তের সংক্রমণ বাড়ছে গরমে

প্রকাশিত: এপ্রিল ৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : সপ্তাহখানেক আগে গা ম্যাজম্যাজ আর শরীরের তাপমাত্রা কিছুটা বেশি ছিল মোহাম্মদ আকবরের। আবহাওয়া বদলের কারণে এমনটা হচ্ছে ভেবে বিষয়টিকে খুব একটা আমলে নেননি পেশায় সাংবাদিক আকবর। ৩/৪ দিন পরই শরীরে ঘামাচির মতো র‌্যাশ। এরপরের দিনই ঘামাচিগুলো ফোস্কার মতো হয়ে যায়। চিকিৎসকের শরণাপন্ন হলে চিকিৎসক জানান, এগুলো চিকেন পক্স।
মিরপুর বাসিন্দা রীনা আখতারের ৭ বছর বয়সি মেয়ে রুফাইদাও গত ২দিন যাবৎ জ¦রে ভুগছিল। সেই সঙ্গে ছিল গলা ব্যথা ও খাওয়ার অরুচি। শরীরে জ¦র উঠার ৩ দিন পরই শরীরে দেখা দেয় র‌্যাশ। কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানেই সারা শরীরে সেই র‌্যাশ ছড়িয়ে পড়ে।
আকবর এবং রুফাইদার মতো অনেকেই এখন আক্রান্ত হচ্ছেন এই চিকেন পক্স বা জলবসন্তে। চিকিৎসা বিজ্ঞান বলছে, ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো চিকেন পক্সও একটি ভাইরাসজনিত রোগ। ভ্যারিসেলা জস্টার নামে এক ধরনের ভাইরাস থেকে এই রোগ হয়। অনুকূল আবহাওয়া পেলেই এই ভাইরাস সক্রিয় হয় ওঠে।
চিকিৎসকরা বলছেন, গরম শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অস্বস্তিকর পরিবেশে বা শুষ্ক আবহাওয়ায় ভ্যারিসেলা জস্টার ভাইরাসটির আক্রমণ একটু বেশি হয়ে থাকে। চিকেন পক্স ছোঁয়াচে একটি রোগ। বাতাসের মাধ্যমে এই সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। চিকেন পক্স হলে শরীরে যে গুটিগুটি দেখা যায়, তরল পদার্থ ভরা ওই র?্যাশগুলি প্রচণ্ড চুলকায়, শরীর ব্যথা হয় এবং অনেক সময় জ্বরও আসে। অনেক সময় মুখে ও মুখগহ্বরে ক্ষত তৈরি হয়। তাই এই রোগে আক্রান্ত হলে রোগীকে বেশ কিছু সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়।
তারা বলছেন, ছোট-বড়, নারী-পুরুষ সবাই এ রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। তবে শিশুদের মধ্যে আক্রান্তের হার একটু বেশি। বিশেষ করে, ১০ বছরের কম বয়সিদের বেলায়। গর্ভবতী মা, বয়স্ক মানুষ এবং সদ্যোজাতদের ক্ষেত্রে এই রোগ মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে।
স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. সামিনা চৌধুরী বলেন, গর্ভাবস্থায় মায়ের চিকেন পক্স হলে গর্ভস্থ শিশুর জন্মগত ত্রæটির ঝুঁকি বাড়ে। আর যদি প্রসবের দিন সাতেকের মধ্যে এই রোগ হয়, তাহলে আরো বড় বিপদের আশঙ্কা থাকে।
শিশু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. আল-আমিন মৃধা বলেন, চিকেন পক্স ছোট-বড় সবারই হতে পারে। তবে শিশুরা বেশি আক্রান্ত হয়। এক সপ্তাহ বা তার বেশি সময় এই অস্বস্তিকর অবস্থা থাকে। প্রথমে সামান্য জ্বর হতে পারে, এরপর ফোস্কা পড়ে, চুলকানি হয়। ফোস্কা শুকিয়ে গেলে মরা চামড়া উঠে আসে।
চিকেন পক্স হলে করণীয় প্রসঙ্গে চিকিৎসকরা বলছেন, ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রে যদি রোগীর শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো থাকে, তাহলে ভাইরাসজনিত রোগের কোনো চিকিৎসার দরকার হয় না। সাধারণত একটু সচেতন থাকলে কয়েক দিনেই ভালো হয়ে যায়। কিন্তু ত্বকের দাগ থেকে যেতে পারে দীর্ঘদিন। আক্রান্ত ব্যক্তিকে আলাদা রাখতে হবে। আক্রান্ত শিশুর কোনো বিশেষ ওষুধের প্রয়োজন হয় না। এটি প্রতিরোধে ভ্যাকসিন পাওয়া যায়। শিশুকে ভ্যাকসিন দিয়ে দিতে হয়। কারো একবার চিকেন পক্স হয়ে গেলে আর টিকার প্রয়োজন নেই।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়