পুলিশের অভিযানে গ্রেপ্তার ৬ : চিকিৎসক-সেবিকার অ্যাপ্রোন পরে চুরি করত চক্রটি

আগের সংবাদ

স্বস্তির ঈদযাত্রায় শঙ্কার কাঁটা : উত্তরবঙ্গে ভোগান্তির আশঙ্কা > ৩৭ দশমিক ৩৪ শতাংশ সড়কের অবস্থা খারাপ

পরের সংবাদ

ঢাবি ছাত্রলীগ নেতা নাবিলের মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশা

প্রকাশিত: এপ্রিল ৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ঢাবি প্রতিনিধি : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ ও ঢাবি ছাত্রলীগের সদ্য সাবেক কমিটির গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক নাবিল হায়দার মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও নাম প্রকাশ না করার শর্তে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা বলছেন তিনি আত্মহত্যা করেছেন। অন্যদিকে ঢাবি শাখা ছাত্রলীগ এটিকে সাধারণ মৃত্যু ও সলিমুল্লাহ মুসলিম হল শাখা ছাত্রলীগ তার মৃত্যুকে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন বলে শোকবার্তায় জানিয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতাল কর্তৃপক্ষও এটিকে স্বাভাবিক মৃত্যু বলে জানিয়েছে।
গতকাল শুক্রবার ভোররাতে রাজধানীর একটি ভাড়া বাসায় ছাত্রলীগের এই নেতা মৃত্যুবরণ করেন। এর আগে নিজের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাঙা চশমার ছবি দিয়ে ‘বিদায়’ লিখে একটি পোস্ট দেন।
নাবিল থাকতেন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে। তার গ্রামের বাড়ি ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার বড় মানিকা ইউনিয়নে। দীর্ঘদিন তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি ঢাবি ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক সনজিত চন্দ্র দাসের কমিটির গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
বৃহস্পতিবার রাতে নাবিল ছিলেন খিলগাঁওয়ে তার এক বন্ধুর বাসায়। তারাই শুক্রবার ভোরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। নাবিলের বড় ভাই তওসিফ উদ্দিন তনয় জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নাবিল ‘বিদায়’ লিখে একটি ফেসবুক পোস্ট দেয়, সঙ্গে ভাঙা ফ্রেমের একটি চশমার ছবি। সেটা দেখে সন্দেহ হওয়ায় তিনি নাবিলের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং রাতে খিলগাঁওয়ে সেই বন্ধুর বাসায় গিয়ে তাকে দেখেও আসেন।
তনয় বলেন, তখন তাকে স্বাভাবিক অবস্থাতেই দেখেছি। ওকে আমার বাসায় নিয়ে আসতে চেয়েছিলাম, রাজি হয়নি। পরে ওর বন্ধুরাও আমাকে আশ্বস্ত করল যে তারা আছে, সমস্যা নেই। রাত ৮টার দিকে আমি ওই বাসা থেকে বের হয়ে আসি। তারপর ভোর রাতের দিকে ওর এক বন্ধু আমাকে ফোন করে জানায়, নাবিল অচেতন হয়ে পড়ে আছে। পরে ওই বাসা থেকে ওকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যাই, চিকিৎসকরা ওকে মৃত ঘোষণা করেন।
গতকাল সকালে বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে নাবিলের জানাযা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এরপর তার মৃতদেহ পরিবারের সদস্যরা গ্রামের বাড়ি ভোলায় নিয়ে যান। আজ সকালে সেখানে আরেকবার জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হবে বলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর সূত্র জানিয়েছে।
ঢাবি প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাকসুদুর রহমান বলেছেন, নাবিলের মৃত্যু একটি আত্মহত্যা। সকালে তার জানাযায় পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। তার বন্ধু-বান্ধব ও ঘনিষ্ঠজনদের থেকে এটিই জেনেছি যে সে আত্মহত্যা করেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতা ভোরের কাগজকে জানান, তিনি মাঝেমধ্যেই বাড়িতে বিভিন্ন জিনিস চাইতেন। বাড়ি থেকে না দিলে বা দিতে না চাইলে তিনি প্রায়ই আত্মহত্যার হুমকি দিতেন। বলতেন, ‘বাসার ছাদ থেকে লাফ’ দিবেন। যেহেতু ফেসবুকে ‘বিদায়’ দিয়ে একটি পোস্ট দিয়েছেন সেহেতু এটি খুব সম্ভবত আত্মহত্যাও হতে পারে। তবে এর সত্যতা কতটুকু সেটি জানা নেই।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া বলেন, সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থীর মরদেহ মেডিকেলে আসে। পরে ময়নাতদন্ত ছাড়াই যারা তাকে নিয়ে এসেছিল তারা তার স্বাভাবিক মৃত্যু দেখিয়ে মরদেহ নিয়ে যায়।
এদিকে নাবিলের এমন মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না তার সহপাঠী থেকে শুরু বিশ্ববিদ্যালয়ে তার রাজনৈতিক অঙ্গনের নেতাকর্মীরা। তার মৃত্যুতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই আবেগঘন পোস্ট দিচ্ছেন। এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস ফেসবুকে লিখেছেন, ‘পরপারে ভালো থাকিস অনুজ ঘধনরষ ঐধুফধৎ মেনে নিতে পারছি না! আত্মার শান্তি কামনা করি।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়