ওয়ান ব্যাংক লিমিটেড : সাবেক পরিচালক এজাজ আহমেদ মারা গেছেন

আগের সংবাদ

সন্ত্রাসীদের হাতে অস্ত্রের মজুত : অরক্ষিত মিয়ানমার-ভারত সীমান্ত পেরিয়ে পাহাড়ে আসছে অত্যাধুনিক অস্ত্র

পরের সংবাদ

পুলিশের অভিযানে গ্রেপ্তার ৬ : চিকিৎসক-সেবিকার অ্যাপ্রোন পরে চুরি করত চক্রটি

প্রকাশিত: এপ্রিল ৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : জাহেদুল ইসলাম পেশায় ব্যবসায়ী। থাকেন গুলশান-১ নম্বরের ৩নং সড়কের কেএফসি গলিতে। গত ২৫ জানুয়ারি সকালে ভবনের সাততলা থেকে স্কুলগামী মেয়েকে নামিয়ে দিতে বের হন। মেয়েকে স্কুলের গাড়িতে উঠিয়ে দিয়ে বাসায় ফিরতে সময় লেগে যায় তিন থেকে সাড়ে ৩ মিনিট। এরমধ্যেই তার বাসা থেকে চুরি হয়ে যায় একটি ল্যাপটপ, দুটি মোবাইল। পুলিশ জানায়, পুরো বাসা তন্নতন্ন করে খুঁজে না পেয়ে সিসিটিভি ফুটেজ তল্লাশি করে দেখেন, চিকিৎসক ও সেবিকাদের অ্যাপ্রোন, মুখে মাস্ক এবং গলায় ভুয়া আইডি কার্ড পরিহিতা এক তরুণী বাসায় প্রবেশ করেছিলেন।
তরুণীর পরিচয় সম্পর্কে বাসার দারোয়ান জানান, ওই তরুণী নিজেকে চিকিৎসক পরিচয় দিয়েছিলেন, বলেছিলেন ফিজিওথেরাপিস্ট। ভবনের সাততলায় জাহেদুল ইসলামের মা অসুস্থ। তাকে থেরাপি দেয়ার জন্য তিনি এসেছেন। এ পরিচয় দেয়ায় বাসায় প্রবেশে অনুমতি দেয়া হয়েছিল তাকে। এ ঘটনায় দেরি না করে গুলশান থানায় মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী। পরে তদন্ত কার্যক্রমে গুলশান থানা পুলিশ জানতে পারে অভিজাতপাড়ায় রোমহর্ষক চুরির ঘটনা। পরে গুলশান থানাধীন ২নং পুলিশ চেকপোস্টের সামনে থেকে তথাকথিত চিকিৎসক নামে চোরচক্রের প্রধান আফসানা আক্তার এশা ওরফে মিমকে (২২) গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
ডিএমপির গুলশান বিভাগ পুলিশ জানিয়েছে, চিকিৎসক ও সেবিকাদের অ্যাপ্রোন, মুখে মাস্ক এবং গলায় ভুয়া আইডি কার্ড পরে অভিজাতপাড়ায় অভিনব কায়দায় চুরি করে আসছিলেন মিম। মূলত ভুয়া চিকিৎসকের বেশ ধরে বাসায় প্রবেশ করে চুরি করতেন তিনি। এমন তথ্য পাওয়ার পর কথিত চিকিৎসক আফসানা আক্তার এশা ওরফে মিমসহ সংঘবদ্ধ চোরচক্রের ৬ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে গুলশান থানা পুলিশ। গত বুধবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তারের সময় ৬টি ল্যাপটপ, ১০টি মোবাইল ফোন ও ২টি ব্যাগ উদ্ধার করা হয়। গ্র্রেপ্তার অন্যরা হলেন- তন্ময় বিশ্বাস (৩০), স্বপন শেখ (৪৫), নুরুল ইসলাম (২৭), কলিম উদ্দিন কালু ওরফে কলিউল্লাহ (৪০) এবং মোখলেছুর রহমান (৫১)।
গতকাল বৃহস্পতিবার ডিএমপির মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগে এক সংবাদ সম্মেলনে গুলশান বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. আবদুল আহাদ বলেন, আমরা একটি চুরির তদন্ত করতে গিয়ে বেশ কয়েকটি চাঞ্চল্যকর চুরির ঘটনার তথ্য পাই। চোরচক্রের প্রধান মিম খুবই ধূর্ত। তার এমন অপকর্মের প্রধান সহযোগী বয়ফ্রেন্ড তন্ময়। ডিসি আহাদ বলেন, কোনো বাসায় চুরির আগে রেকি করে চোরচক্রের সদস্যরা। বিশেষ করে খোঁজ রাখে কোন বাসায় অসুস্থ বা বৃদ্ধ বাসিন্দা আছে। কোন বাসায় কখন মানুষ কম থাকে, কখন কারা বাচ্চাদের নিয়ে স্কুলে যায়। তবে সকালের সময়টা চুরির জন্য টার্গেট করেন তারা। রাজধানীর গুলশান, বনানী, ধানমন্ডি ও উত্তরার মতো অভিজাত এলাকা তাদের প্রধান টার্গেট। এসব এলাকায় এমনও দিন গেছে একাধিক চুরি সংঘটিত করেছে।
ডিসি বলেন, মিমসহ গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে গুলশান থানাসহ বিভিন্ন থানায় মোট ১৪টি নিয়মিত মামলা ও ২টি সাজা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। গুলশান, নিউমার্কেট, মোহাম্মদপুর ও তেজগাঁও থানায় একবার করে মোট চারবার গ্রেপ্তারও হয়েছিল মিম। এছাড়া মোখলেছুর রহমান তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় একবার গ্রেপ্তার হয়েছিল। রাজধানীবাসীকে সতর্ক হতে বলে পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, কোনো বাসায় চিকিৎসক বা সেবিকা পরিচয়ে কেউ ঢুকতে চাইলে প্রবেশ করতে দেবেন না। যে কেউ আসুক না কেন, পরিচয় নিশ্চিত হয়েই প্রবেশে অনুমতি দেয়া উচিত। বাসা বা ভবন মালিকদের সেটা নিশ্চিত করতে হবে, দারোয়ানদের তা জানাতে হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়