পুলিশের অভিযানে গ্রেপ্তার ৬ : চিকিৎসক-সেবিকার অ্যাপ্রোন পরে চুরি করত চক্রটি

আগের সংবাদ

স্বস্তির ঈদযাত্রায় শঙ্কার কাঁটা : উত্তরবঙ্গে ভোগান্তির আশঙ্কা > ৩৭ দশমিক ৩৪ শতাংশ সড়কের অবস্থা খারাপ

পরের সংবাদ

চুরির অভিযোগে জরিমানা : গুরুদাসপুরে ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে শিশু-অভিভাবকরা

প্রকাশিত: এপ্রিল ৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি : স্কুলের নষ্ট ও পরিত্যক্ত বেঞ্চের লোহার কাঠামো চুরির মিথ্যা অপবাদে স্কুল পড়–য়া ৭ শিশুকে ভয় দেখিয়ে স্বীকারোক্তি আদায় ও ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করার অভিযোগ উঠেছে। টাকা আদায়কারী প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের চাপে অনেক শিশু ও তাদের পরিবার গ্রামছাড়া। গতকাল শুক্রবার বেলা ১১টায় গুরুদাসপুর প্রেস ক্লাবের অস্থায়ী কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এমনটাই জানালেন ভুক্তভোগী পরিবার।
সংবাদ সম্মেলনে মিথ্যা অভিযোগে অভিযুক্ত ওই ৭ শিশুর অভিভাবকরা দাবি করেন, গত ৪ এপ্রিল নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার সাহাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নষ্ট ও পরিত্যক্ত বেঞ্চের লোহার কাঠামো চুরির অপবাদে তাদের ৭ শিশুকে অভিযুক্ত করা হয়। ওই প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ফরিদ শাহ ও প্রধান শিক্ষক সালমা খাতুনের প্রহসনের বিচারে ৭ জন শিশু এবং তাদের বাবা-মায়েদের থানা পুলিশ ও জেল হাজতের ভয়ভীতি দেখিয়ে মিথ্যা স্বীকারোক্তি নেয়া হয়। অভিভাবকদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে প্রহসনের বিচারে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেয়া হয়। এরমধ্যে ৩ জন অভিভাবকের কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা আদায় করা হয়েছে। বাকিদের টাকা নিয়ে চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের স্বজনরা প্রভাবশালী হওয়ার কারণে টাকা পরিশোধে ব্যর্থ শিশুদের পরিবাররা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বলেও দাবি করেন।
ভুক্তভোগী তৃতীয় শ্রেণিতে পড়–য়া শিক্ষার্থী মানিকের মা মর্জিনা বেগম (রবিউলের স্ত্রী) জানান, টাকার চাপে তিনি কানের গহনা বন্ধক রেখে ফরিদ শাহের হাতে ৫ হাজার টাকা দিয়েছেন। তার মতো আব্দুল ওহাব অন্যের কাছে ঋণ করে ২০ হাজার, আকবার আলী জরিমানার ৫ হাজার টাকা পরিশোধ করেছেন। তারা মিথ্যা অভিযোগ থেকে দায়মুক্তি, জরিমানার টাকা ফেরৎ ও দোষীদের বিচার দাবি করেন।
রাকিবের মা সাগরিকার কাছে ২০ হাজার,আবিরের মা আতিয়ার কাছে ৪০ হাজার ও হাবিবের মা বেবির কাছে ২০ হাজার টাকা দাবি করা হয়েছে। টাকা না দিলে তারা গ্রামে থাকতে পারবে না বলে হুমকি দেয়া হচ্ছে এমন অভিযোগ করে তারা কান্নায় ভেঙে পড়েন।
ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক সালমা বেগম জানান, সম্প্রতি স্কুলের বেঞ্চের লোহার কাঠামো, ইতোপূর্বে নলকূপের উপরিভাগ ও সোলারের প্যানেল খোয়া গেছে। সবকিছু মিলিয়ে তাদের বড় অঙ্কের টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তবে হারিয়ে যাওয়ার বিষয়ে থানায় কোন জিডি বা শিক্ষা অফিসে অভিযোগ করা হয়নি।
সভাপতি ফরিদ শাহ বলেন, প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন সময় চুরি হওয়ার ঘটনায় ওই শিশুরা দায়ী। ওদের জরিমানা কম হয়েছে, প্রত্যেককে ১ লাখ টাকা করে জরিমানা করা উচিত ছিল। আদায়কৃত ৩০ হাজার টাকা সরকারি কোষাগারে জমা করা হয়নি বলেও তিনি জানান।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা খ ম জাহাঙ্গীর জানান, চুরি ও বিচারের বিষয়ে ওই প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে তাকে লিখিত কিংবা মৌখিকভাবে জানানো হয়নি। ভুক্তভোগী পরিবার অভিযোগ করলে বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন তিনি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়